VAT Compliance Guides  / Registration and Enlistment procedures under the new Value Added Tax

Registration and Enlistment procedures under the new Value Added Tax

১. প্রারম্ভিক
১.১ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কী?
মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থায় যেকোন আমদারিকারক, রপ্তানিকারক বা করযোগ্য সরবরাহ প্রদানকারীকে মূসক ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত হতে হয়। মূসক ব্যবস্থার সাথে এই সর্ম্পূক্তিকেই নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বলে। মূসক প্রশাসনের সাথে কাজ করতে, মূসক সংক্রান্ত দলিলাদি ব্যবহার করতে বা করযোগ্য কোনো ব্যবসায় পরিচালনা করতে হলে মূসক আইনের আওতায় করতে হয়। আর এ কারনেই মূসক ব্যবস্থার সাথে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্তর প্রয়োজন হয়। আইনী ভাষায়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর আওতায় মূসক ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ততাকে যথাক্রমে মূসক নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বলে।

১.২ বিআইএন কী?
বিআইএন বা Business Identification Number (BIN) হলো ৯ অংকের একটি একক ও অনন্য নম্বর যা দ্বারা এক জন করদাতাকে চিহ্নিত করা হয়। মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন ও টার্নভারকর তালিকাভুক্তির বিপরীতে বিআইএন ইস্যু করা হয়।
বিআইএন এর বৈশিষ্ট:

  • এটি একটি অর্থহীন ক্রম বর্ধমান নম্বর
  • বিআইএন ৯ ডিজিটের যার প্রথম ৮টি ডিজিট ক্রমিক নম্বর এবং ৯ম ডিজিটটি দ্বৈততা পরিহারের লক্ষে চেক ডিজিট
  • একটি প্রতিষ্ঠানের বিআইএন কখনো পরিবর্তন হবে না
  • প্রতিষ্ঠানটি টার্নওভার হতে মূসক ব্যবস্থায় নিবন্ধত বা মূসক হতে টার্নওভারে স্থানান্তরিত হলেও একই নম্বর প্রযোজ্য হবে
  • এক কমিশনারেট হতে আরেক কমিশনারেটে স্থানান্তরে ক্ষেত্রেও বিআইএন পরিবর্তন হবে না

১.৩ কেন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হতে হবে?

  • অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য
  • করযোগ্য ব্যবসায়ের আইনগত বৈধতা লাভের জন্য
  • ব্যবসার স্বীকৃতি লাভের জন্য তথা ব্যবসার ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য
  • আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য

১.৪ কে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হবেন?
মূল্য সংযোজন করের আওতায় একজন "ব্যক্তি" নিবন্ধিত হবেন। ব্যক্তি বলতে নি¤œরূপ অনুষঙ্গকে বুঝানো হয়, যথা:

  • একজন স্বাভাবিক ব্যক্তি
  • কোনো কোম্পানি
  • কোনো ব্যক্তি সংঘ
  • কোনো সরকারি সত্তা
  • কোনো বৈদেশিক সরকার বা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোনো বিভাগ বা নিযুক্ত কর্মকর্তা
  • কোনো আন্তঃদেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠন
  • সম্পত্তি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ বা অনুরূপ কোনো উদ্যোগ।

১.৫ কখন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হতে হবে?
করযোগ্য ব্যক্তির করযোগ্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বার্ষিক টার্নওভার নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে এবং স্বেচ্ছায় নিবন্ধন গ্রহণ করতে আগ্রহী হলে প্রযোজ্যতা অনুযায়ী নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করতে হবে। সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য এমন সরবরাহ সংক্রান্ত ব্যবসায় করলে টার্নওভার নির্বিশেষে মূসক নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে।
১.৬ কখন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই?
নি ক্ষেত্রে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হওয়া প্রয়োজন নেই, যথা:

  • বার্ষিক টার্নওভার নিবন্ধন সীমার নীচে থাকলে নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই কিন্তু স্বেচ্ছায় নিবন্ধন নিতে পারেন
  • বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তি সীমার নীচে থাকলে তালিকাভুক্তির প্রয়োজন নেই
  • অব্যাহতি প্রাপ্ত জন্য/সেবা উৎপাদন ও সরবরাহ করলে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্তির প্রয়োজন নেই।

তবে কতিপয় কার্যক্রম পরিচালনা যেমন আমদানি বা রপ্তানি করতে গেলে বিআইএন লাগবে। সেজন্য নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করতে হবে। স্বেচ্ছায় শুধু মূসক নিবন্ধন গ্রহণ করা যায়। স্বেচ্ছায় টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি গ্রহণ করা যায় না।
১.৭ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য প্রযোজ্য দলিলাদি, ফি ও নবায়ন
দলিলাদি: নতুন আইনের আওতায় নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করতে কোনো ধরণের দলিলাদির প্রয়োজন নেই। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় ট্রেড লাইসেন্স, মেমোরেন্ডাম, আইআরসি, ইআরসি ইত্যাদি দলিলাদির প্রয়োজন হলেও নতুন আইনে সেসকল দলিলাদির প্রয়োজন নেই। শুধু মূসক-২.১ ফরমে প্রযোজ্য তথ্য প্রদান করতে হবে।
ফি: নতুন আইনের আওতায় মূসক নিবন্ধন বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তির জন্য কোনো ফি প্রদান করতে হবে না।
নবায়ন: একবার প্রদত্ত নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কখনো নবায়নের প্রয়োজন নেই। বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহতভাবে কার্যকর থাকবে।

১.৮ আবদেন কোন কর্মকর্তার নিকট দাখিল করতে হবে এবং দাখিলের কতো দিনের মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যাবে?
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন কমিশনার বরাবর দাখিল করতে হবে।
আবেদন দাখিলের পর আবেদনে প্রদত্ত তথ্যাদি প্রাথমিক যাচাটইয়ে সঠিক পাওয়া গেলে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রদান করা হবে। প্রদত্ত তথ্য সঠিক পাওয়া না গেলে কন্টাক্ট সেন্টার হতে আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগ করা হবে যাতে তিনি সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে জমা প্রদান করেন। সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রদান করা হবে না।
বিধিতে ৩ কার্যদিবসের বিধান থাকলেও আবেদন সঠিকভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবেই নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যেতে পারে। কাগুজে আবেদন করলে তা স্ক্যান করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং সেন্টারে প্রেরণ করা হবে। সেখানে ডাটা এন্ট্রি করার পর তা কম্পিউটার সিস্টেমে আপলোড করা হবে এবং তখন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি তৈরি হবে। ফলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে দ্রুত নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যাবে।
১.৯ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সনদপত্র প্রদর্শন
প্রত্যেক নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি অর্থনৈতিক কার্যক্রমের নির্দিষ্ট স্থানে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা উহার সত্যায়িত অনুলিপি এমনভাবে প্রদর্শন করে রাখবেন যাতে তা সহজে সকলের দৃষ্টিগোচর হয়।
১.১০ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সনদপত্র হারিয়ে গেলে তার নকল উত্তোলন
(১) কোনো কারণে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তিপত্র হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তিপত্রের নকল উত্তোলনের কোনো প্রয়োজন নেই। 

কারণ: প্রথমত: অনলাইন নিবন্ধনের কারণে আপনার কাগুজে সনদ হারালেও মূল সনদ থেকেই যাবে। আপনি সিস্টেম হতে তা প্রয়োজনে আবার প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। 

দ্বিতীয়ত: অনলাইন সিস্টেমের কারণে কাগুজে সনদের খুব বেশি প্রয়োজন হবে না।
২. নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সীমা
২.১ তালিকাভুক্তিসীমা
তালিকাভুক্তিসীমা হলো কোন ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রতি ১২ মাস সময়ে টার্নওভার-এর ৩০ লক্ষ টাকার সীমা। তবে এই সীমার মধ্যে নিম্নবর্ণিত মূল্যসমূহ অন্তর্ভুক্ত হবে না, যথা:―

  • অব্যাহতিপ্রাপ্ত সরবরাহের মূল্য
  • মূলধনী সম্পদের বিক্রয় মূল্য
  • অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রতিষ্ঠান বা উহার কোন অংশবিশেষের বিক্রয় মূল্য
  • অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ করিবার ফলশ্রুতিতে কৃত সরবরাহের মূল্য

অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির ১২ মাসের করযোগ্য সরবরাহ ৩০ লক্ষ টাকার সীমা অতিক্রম করলে কিন্তু ৮০ লক্ষ টাকার ওপর না হলে তাকে টার্নওভার করের জন্য তালিকাভুক্ত হতে হবে।
২.২ নিবন্ধনসীমা
নিবন্ধনসীমা হলো কোনো ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রতি ১২ মাস সময়ে টার্নওভার-এর ৮০ লক্ষ টাকার সীমা। তবে এই সীমার মধ্যে নিম্নবর্ণিত মূল্যসমূহ অন্তর্ভুক্ত হবে না, যথা:―

  • অব্যাহতিপ্রাপ্ত সরবরাহের মূল্য
  • মূলধনী সম্পদের বিক্রয় মূল্য
  • অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রতিষ্ঠান বা উহার কোন অংশবিশেষের বিক্রয় মূল্য
  • অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ করিবার ফলশ্রুতিতে কৃত সরবরাহের মূল্য

অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির ১২ মাসের করযোগ্য সরবরাহ ৮০ লক্ষ টাকার সীমা অতিক্রম করলে তাকে মূসকের জন্য নিবন্ধিত হতে হবে।
২.৩ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ১২ মাসের সময় গণনাঃ
নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা নির্ধারিত হয় ব্যক্তির ১২ মাসের টার্নওভারের ওপর ভিত্তি করে। নিবন্ধনের টার্নওভার পরীক্ষার জন্য সময় গণনার জন্য ২টি পদ্ধতি রয়েছে:
প্রকৃত টার্নওভার: নিবন্ধনযোগ্য ব্যক্তি যে মাসে তার নিবন্ধনের সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন তিনি পূর্ববর্তী মাসের (করমেয়াদের) শেষ দিন হতে বিগত ১২ মাসের মোট টার্নওভার হিসাব করে তা যদি নিবন্ধনসীমা অতিক্রম করে তাহলে তাকে মূসকের জন্য নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে।
প্রাক্কলিত টার্নওভার: নিবন্ধনযোগ্য ব্যক্তি যে মাসে (করমেয়াদে) তার নিবন্ধনের সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন তিনি তার পরবর্তী মাসের প্রথম দিন হতে পরবর্তী ১২ মাসের মোট টার্নওভার প্রাক্কলন করে যদি তা নিবন্ধনসীমা অতিক্রম করবে বলে মনে করেন তাহলে মূসকের জন্য নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে।

যেকোন একটি পদ্ধতিতে টার্নওভার নিবন্ধনসীমা অতিক্রম করলেই তাকে নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে। তিনি যে তারিখে নিবন্ধনের আবশ্যকতা তৈরি হয়েছে সে তারিখ হতে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যে দিনই করুন না কেন মাসের প্রথম দিন হতেই (যেদিন আবশ্যকতা তৈরি হয়) নিবন্ধন গ্রহণের জন্য কমিশনারের নিকট আবেদন করতে হবে।

২.৪ তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে ১২ মাসের সময় গণনাঃ
নিবন্ধনের মতো তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তিকেও প্রতি করমেয়াদে তালিকাভুক্তির সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। তালিকাভুক্তির জন্য প্রতি ১২ মাসের মোট টার্নওভার হিসাব করতে হবে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রকৃত-টার্নওভার ও প্রাক্কলিত-টার্নওভার পদ্ধতিতে কাৎসরিক টার্নওভার নির্ধারণ করা হলেও তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে প্রকৃত-টার্নওভার পদ্ধতিতে বাৎসরিক টার্নওভার নির্ধারণ করা হয়।
তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তি যে করমেয়াদে (ত্রৈমাসিক) তার তালিকাভুক্তির সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন তিনি সেই করমেয়াদের শেষ দিন হতে বিগত ১২ মাসের মোট টার্নওভার হিসাব করে যদি তা তালিকাভুক্তিসীমা অতিক্রম করে কিন্তু নিবন্ধনসীমা অতিক্রম না করে তাহলে তাকে টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি গ্রহণ করতে হবে। বিবেচ্চ করমেয়াদের শেষ দিন বিবেচনায় টার্নওভার হিসাব করে তালিকাভুক্তিসীমা অতিক্রম করলে তাকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে তালিকাভুক্তির জন্য কমিশনারের নিকট আবেদন করতে হবে।
৩. নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির পদ্ধতি
৩.১ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট ফরমসমূহ

ফরম নং নাম
মূসক-২.১ Application for Value Added Tax Registration and Turnover Tax Enlistment
মূসক-২.২ Application for Branch Registration under Value Added Tax
মূসক-২.৩ মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন সনদপত্র/টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি সনদপত্র
মূসক-২.৪ মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন/টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিলর ও করপ্রকৃতি পরিবর্তনের আবেদনপত্র
মূসক-২.৫ মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন/টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিলের জন্য
চূড়ান্ত দাখিলপত্র
মূসক-২.৬ নিবন্ধন/তালিকাভুক্তির পর তথ্যের পরিবর্তন বা নূতন তথ্য সংযোজনের ক্ষেত্রে উহা কমিশনারকে অবহিতকরণ
মূসক-২.৭ ব্যবসায়ের স্থান পরিবর্তনের আবেদন
   

৩.২ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য কোন ফরমে আবেদন করবেন?
কেন্দ্রীয় নিবন্ধন: কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের জন্য ফরম মূসক-২.১ এ আবেদন করতে হবে।
শাখা নিবন্ধন: কোনো কোম্পানির একাধিক শাখা থাকলে এবং শাখা নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করলে কেন্দ্রীয় ইউনিটের জন্য মূসক-২.১ এবং প্রতিটি শাখা ইউনিটের জন্য আলাদাভাবে মূসক-২.২ ফরমে আবদেন করতে হবে।
টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি: টার্নওভার কর তালিকাভুক্তির জন্য ফরম মূসক-২.১ এ আবেদন করতে হবে।
৩.৩ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য কোথায় আবেদন করবেন?
নিবন্ধন গ্রহণ/তালিকাভুক্তির জন্য নি¤œবর্ণিত স্থানে আবেদন দাখিল করা যাবে।

  • অনলাইন বোর্ডের ওয়েব পোটালে;
  • বোর্ড পরিচালিত কেন্দ্রীয় তথ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে;
  • আবেদনকারীর জন্য সুবিধাজনক হয় এমন কোন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট বা বিভাগীয় দপ্তরে;
  • বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক পরিচালিত কোনো সেবা কেন্দ্রে;
  • বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক পরিচালিত কোনো মেলায়;
  • বোর্ড কর্তৃক আদেশ দ্বারা নির্ধারিত অন্যকোনো স্থানে।

৩.৪ নিবন্ধনের ভিত্তি
নিবন্ধনের ভিত্তি হলো করদাতার হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি। করদাতা যে পদ্ধতিতে হিসাব রক্ষণ করেন তার ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় বা শাখা ইউনিটের নিবন্ধন প্রযোজ্য হবে। কোনো কোম্পানির একাধিক শাখা ইউনিট থাকতে পারে। তাদের প্রতিটি শাখা ইউনিটের জন্য আলাদা নিবন্ধন প্রযোজ্য হবে না সমগ্র কোম্পানির জন্য একটি মাত্র নিবন্ধন প্রযোজন হবে তা তার হিসাব রক্ষণ পদ্ধতির ওপর নির্ভর করবে। যদি সমগ্র ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য একটি হিসাব রাখা হয় এবং বার্ষিক আর্থিক বিবরণি একটি তৈরি করা হয় তাহলে তার জন্য একটি নিবন্ধন প্রযোজ্য হবে। আর যদি প্রতিটি শাখা ইউনিটের জন্য আলাদা হিসাবরক্ষণ করা হয় এবং প্রত্যেক শাখা ইউনিটের আর্থিক বিবরণি আলাদা করা হয় তাহলে কেন্দ্রী ইউনিটের জন্য একটি এবং তার ভিত্তিতে প্রতিটি শাখা ইউনিটের জন্য এক একটি আলাদা নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় নিবন্ধন শাখা ইউনিট নিবন্ধন
  • নিবন্ধনের প্রধান পদ্ধতি
  • একক প্রতিষ্ঠান একক নিরীক্ষা
  • সকল শাখার জন্য একক নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ
  • হিসাবভিত্তিক নিবন্ধন
  • কেন্দ্রীয় ইউনিট হতে পৃথক হিসাব নিকাশ ও রের্কডপত্র সংরক্ষণ/পরিচালনা করলে
  • নিবন্ধনের বিকল্প পদ্ধতি
  • পৃথকভাবে নিবন্ধিত শাখা থেকে শাখায় পণ্য/সেবা আদান প্রদান বা চলাচল সরবরাহ বলে গণ্য হবে না।
স্বেচ্ছা নিবন্ধন কমিশনার কর্তক স্ব-উদ্যোগে নিবন্ধন প্রদান
  • নিবন্ধনের আবশ্যকতা না থাকা সত্ত্বেও করযোগ্য সরবরাহ প্রদান করবে।
  • এ ক্ষেত্রে টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি প্রযোজ্য নয়।
  • কমপক্ষে ০১(এক) বছর নিবন্ধিত থাকতে হবে।
  • নিবন্ধন/তালিকাভুক্তির যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও নিবন্ধন/তালিকা ভুক্ত না হলে
  • করদাতার অসহযোগীতার কারণে তার টার্নওভার নির্ধরাণ সম্ভব না হলে
  • কমিশনার তাকে মূসক নিবন্ধন প্রদান করবেন।

৩.৬ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সনদ প্রাপ্তি
বিআইএন সৃষ্টির পর কম্পিটার সিস্টেম হতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবিন্ধন/তালিকাভুক্তি সনদপত্র তৈরি হবে। নির্ধারিত ডিজাইনে তৈরি সনদপত্র আপনার ঠিকানায় প্রেরণ করা হবে যাতে তা আপনি দর্শনীয় স্থানে প্রদর্শন করতে পারেন। এতদব্যতীত, করদাতা তৈরিকৃত সনদপত্র কমিউটারে সেইভ করে রাখতে পারবেন, মেইলে প্রেরণ করতে পারবেন। করদাতা তার একাইন্টে লগইন করে যতবার খুশি ততোবার সনদপত্র প্রিন্ট নিতে পারবেন। নির্ধারিত ডিজাইনে হার্ড কপি প্রয়োজন হবে শুধু প্রদর্শনের জন্য।
৪. নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন ফরম পূরণের পদ্ধতি
৪.১ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন ফরমসমূহের প্রযোজ্যতা
তালিকাভুক্তির আবেদন মূসক-২.১ ফরমে করতে হয়। নিবন্ধনের আবেদন কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের জন্য মূসক-২.১ এ এবং শাখা ইউনিটের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রথমে কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের জন্য মূসক-২.১ এবং পরবর্তীতে প্রতিটি শাখা ইউনিটের জন্য মূসক-২.২ ফরমে আবেদন করতে হয়। মূসক-২.২ শুধু কোনো কোম্পানির শাখাগুলো স্বতন্ত্র হিসাবরক্ষণ করলে তার জন্য প্রযোজ্য। এটি হিসাবরক্ষণের স্বাভাবিক পদ্ধতিতে প্রযোজ্য নয়। বিশেষ ক্ষেত্রে মূসক-২.২ প্রযোজ্য।

৪.২ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন ফরম মূসক-২.১ পূরণ

মূসক-২.১ পূরণের পদ্ধতি নিম্নরূপ:

ক্রমিক বিষয় পূরণের পদ্ধতি

করদাতা সনাক্তকরণ সংখ্যা 

(ই-টিআইএন)

করদাতার ই-টিআইএন লিখতে হবে।
বিশেষ ক্ষেত্রসমূহ:
  • কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এক কোম্পানি-এক টিআইএন-এক বিআইএন পদ্ধতি অনুসৃত হবে
  • এক কোম্পানির বিভিন্ন শাখা আলাদা হিসাবরক্ষণ করলে তার জন্য আলালাদা টিআইএন সাপেক্ষে আলাদা বিআইএন হবে
  • স্বত্তাধিকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এক টিআইএন দিয়ে একাধিক আলাদা বিআইএন এর আবেদন গৃহীত হবে
  • প্রাকৃতিক ব্যক্তি একটি টিআইএন দিয়ে একটিই বিআইএন নিতে পারবেন
  • একজন প্রাকৃতিক ব্যক্তি একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকলে তার টিআইএনটি সকল প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যাবে।
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তির নাম

এ ঘরে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তির নাম লিখতে হবে। ব্যক্তি বলতে বোঝায়:

  • স্বাভাবিক কোনো ব্যক্তি
  • কোনো কোম্পানি
  • কোনো ব্যক্তি সংঘ
  • কোনো সরকারি সত্তা
  • কোনো বৈদেশিক সরকার বা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোনো বিভাগ বা নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তা
  • কোনো আন্তঃদেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠন, বা
  • সম্পত্তি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ বা অনুরূপ কোনো উদ্যোগ
     
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির ঠিকানা যে ঠিকানায় করদাতা নিবন্ধিত হতে চান এখানে সে ঠিকানা লিখতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে Preferred Mailing Address এবং Registered office address একই হবার সম্ভাবনা বেশি। তবে করদাতা চাইলে তা আলাদাও হতে পারে। যেসকল প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় কার্যক্রম একাধিকস্থান হতে পরিচালিত হয় তাদের ক্ষেত্রে Registered office address সদর দপ্তর হলেই ভালো হয়। তবে তা কী হবে তা করদাতার ওপর নির্ভর করে।
এই ঘরে বর্ণিত পোস্টাল কোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রদত্ত পোস্টাল কোডের ওপর নির্ভর করে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির কমিশনারেট নির্ধারণ করা হবে। এখানে প্রদত্ত কোড যে কমিশনারেটের অধীক্ষেত্রের আওতায় থাকবে সেই কমিশনারেটের অধিন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হবে। তাকে সকল কাজ উক্ত কমিশনারেটের সাথেই করতে হবে। কাজেই এই ঘরে প্রদত্ব ঠিকানার সঠিক পোস্টাল কোড জেনে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন করা প্রয়োজন হবে। কারণ নিবন্ধনের অন্য সকল তথ্য পরিবর্তন সহজ হলেও এই ঠিকানা পরিবর্তন করতে হলে কমিশনারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
শাখা ইউনিটের ঠিকান কোনো ব্যক্তির করযোগ্য কার্যক্রম যদি একাধিক স্থান হতে সম্পন্ন হয় এবং ব্যবসায়িক হিসাব কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয় তাহলে Registered office address ব্যতীত অন্য সকল স্থান এক একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রতিটি শাখার নাম এখানে লিখতে হবে।
ব্যাংক হিসাবের তথ্য করদাতার ব্যবসায়িক লেন-দেন সম্পন্ন হয় এমন এক বা একাধিক ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক তথ্য। ব্যাংক একাউন্টের তথ্য ব্যতীত বিআইএন তৈরি হবে না। এক লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের ক্রয়ের ক্ষেত্রে এখানে প্রদত্ত একাউন্টের মাধ্যমে আংশিক বা পূর্ণ মূল্য পরিশোধ না করলে রেয়াত বাতিল হয়ে যাবে। আবার কমিশনার ফেরতযোগ্য অর্থ এখানে প্রদ একাউন্টে ফেরত প্রদান করবেন। ফলে ব্যাংক একাউন্টের তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বার্ষিক টার্নওভার এর পরিমাণ বার্ষিক টার্নওভারের ওপর ভিত্তি করে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি নির্ধারিত হবে। পূর্বে বর্ণিত পদ্ধতিতে টার্নওভার নির্ধারণ করে তা এখানে উল্লেখ করতে হবে।
নিবন্ধনের প্রকৃতি মূসক নিবন্ধন বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি তা নির্বাচন করতে হবে।টার্নওভার নিবন্ধনসীমার নিচে হলে টার্নওভার তালিকাভুক্তি আর নিবন্ধনসীমার ওপরে হলে মূসক নিবন্ধন নির্বাচন করতে হবে। তবে স্বেচ্ছা নিবন্ধন এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সরবরাহ প্রদানের ক্ষেত্রে মূসক মূসক নিবন্ধন নির্বাচন করতে হবে।
     
আপনি কি উৎসে মূসক কর্তনকারী

উৎসে কর্তন বাংলাদেশ মূসকের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট। উৎসে কর্তনকারীকে উৎসে কর্তনের জন্য বিশেষ কিছু কাজ করতে হয়। কর পরিশোধ এবং হিসাবরক্ষণে ক্ষেত্রেও কিছু কাজ আছে যা মূসকের স্বাভাবিক কাজের অতিরিক্ত। আপনার ক্ষেত্রে উৎসে কর্তন প্রযোজ্য হবে কিনা তা জানার উপায় হলো উৎসে কর্তনকারী সত্তার তালিকা জানা, যথা:

  • কোনো সরকারি সত্তা
  • এনজিও বিষয়ক ব্যুরো বা সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান;
  • কোনো ব্যাংক, বীমা কোম্পানী বা অনুরূপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান;
  • কোনো মাধ্যমিকোত্তর (post secondary) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;
  • কোনো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী;বা
  • বৃহৎ করদাতা ইউনিট (মূল্য সংযোজন কর) এর আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠান;
    আপনি বর্ণিত সংস্থার কোনো একটি বা একাধিক প্রকৃতির হলে আপনাকে Yes নির্ধারণ করে পরবর্তিতে প্রযোজ্য প্রকৃতিতে টিত টিহ্ন দিতে হবে। অন্যথায় শুধু No নির্ধারণ করে পরবর্তী অংশে চলে যেতে হবে।
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তির প্রকৃতি এখানে নিবন্ধন বা তালিকাযোগ্য "ব্যক্তি"র আইনানুগ প্রকৃতি নির্বাচন করতে হবে।
১০ মূসক বা টার্নওভার কর ব্যতীত অন্যকোনো কর বা সারচার্জ পরিশোধের দায়বদ্ধতা আছে কি? কোনো ব্যক্তি যদি সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সরবরাহের ব্যবসায় করেন বা সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য কোনো পণ্য আমদানি করেন তাহলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে মূসক নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বার্ষিক নিবন্ধন বা তাকিাভুক্তিসীমা প্রযোজ্য হবে না। আইনের দ্বিতীয় তফসিলভুক্ত আমদানি বা সরবরাহ সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য।
অপর দিকে আবগারি আইনের আওতায় আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য হয়। উক্ত আইনে দাখিলপত্র দেওয়ার বিধান থাকলেও এর পরিধি অত্যন্ত ছোট বিধায় তা বাস্তবায়ন করা যায় না। এ প্রেক্ষিতে মূসক দাখিলপত্রের সাথেই আবগারি শুল্ক আদায়ের লক্ষে এখানে আবগারি শুল্ক আনা হয়েছে যাতে দাখিলপত্রের সময় তা তত্ত্বাবধান করা যায়।
১১ নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কার্যকারকারিতার তারিখ কোন তারিখ হতে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রযোজ্য হবে তা এখানে উল্লেখ করতে হবে। পুনঃনিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রথম নিবন্ধনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। উল্লেখ্য, যে দিনই আবেদন করা হোক না কেন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কার্যকর হবে পরবর্তী করমেয়াদের প্রথম দিন হতে।
     
১২ আবেদনের প্রকৃতি

আবেদনের তিনটি প্রকৃতি রয়েছে।
Mandaroty (বাধ্যতামূলক): করযোগ্য ব্যক্তির করযোগ্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তিসীমা অতিক্রম করলে কিন্তু নিবন্ধনসীমা অতিক্রম না করলে তালিকাভুক্তি বাধ্যতামূলক। আবার নিবন্ধনসীমা অতিক্রম করলে নিবন্ধন গ্রহণ বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে Mandaroty উল্লেখ করতে হবে।
Optional (স্বেচ্ছামূলক): কোনো ব্যক্তি যদি (ক) করাযোগ্য না হন, (খ) তার অর্থনৈতিক কার্যকৃম যদি করযোগ্য না হয়, বা (৩) তার বার্ষিক টার্নওভার যদি তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধনসীমা অতিক্রম না করে, তাহলেও তিনি ইচ্ছা করলে তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধন গ্রহণ করতে পারবেন। তখন তাকে Optional নির্বাচন করতে হবে।
Forced (জোরপূর্বক): কোনো ব্যক্তি যদি দৃশ্যত (ক) করযোগ্য হন, (খ) তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম করযোগ্য হয়, (গ) তার বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধনযোগ্য হয়, এবং (ঘ) তিনি নিজে হতে তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধনের আবেদন না করেন, তাহলে কমিশনার তাকে জোরপূর্বক তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধন প্রদান করবেন। টার্নভার নির্ধারণের ক্ষেত্রে তালিকাভুক্তযোগ্য ব্যক্তির সহায়তা না পাওয়া গেলে মূসক কর্তৃপক্ষ তাকে মূসক নিবন্ধিত করবেন।

১৩ আবেদনের ধরণ একটি কোম্পানির শাখা ইউনিটের জন্য পূর্ববর্তী আইনের আওতায় প্রযোজ্য সবগুলো বিআইএন এখানে লিখতে হবে। যেমন, একটি কোম্পানির ৫টি শাখা যেমন কোনো একটি সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নারায়ণগঞ্জে ২টি, চট্টগ্রামে ১টি, খুলনায় ২টি ইউনিট থাকলে ১৯৯১ এর আইনে ৫টি আলাদা নিবন্ধন থাকবে। ২০১২ সালের আইনে ঐ ৫টি শাখা, তাদের সদর দপ্তর, কোনো পণ্যাগার থাকলে সবগুলোর জন্য একটি নিবন্ধন হবে। এই বক্সে পূর্বের ৫টি বিআইএন লিখতে হবে। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় ৫টি বিআইএন এর সকল কার্যক্রম নতুন আইনের আওতায় একটি বিআইএন এর অধীনে পরিচালিত হবে।
     
     
১৪ পরিচালক/অংশীদার/ স্বত্তাধিকারী এখানে পরিচালক, অংশীদার বা স্বত্তাধিকারীর নাম, পদবি, স্থায়ী ঠিকানা, শেয়ার (%), এনআইডি দিতে হবে।
১৫ ব্যবসায় কার্যক্রমের প্রকৃতি ব্যবসায় কার্যক্রমের প্রকৃতি এখানে নির্বাচন করতে হবে। ব্যবসায় কার্যক্রমগুলো হলো আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, সরবরাহকারী (উৎপাদক), সরবরাহকারী (বাণিজ্য) এবং সেবা প্রদানকারী। কোনো ব্যবসায়ী একাধিক কার্যক্রম পরিচালনা করলে তার সবগুলোই নির্বাচন করবেন। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় যে প্রকৃতি উল্লেখ করে নিবন্ধন নেয়া হতো তার বাইরে কাজ করতে সমস্যা হতো, যেমন নিবন্ধন সনদে আমদানিকারক লেখা না থাকলে আমদানি করা যেতো না। ২০১২ সালের আইনের আওতায় নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। বিআইএন থাকলেই হবে। এ ধরণের কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের প্রধান কারণ বিভিন্ন ধরণের প্রতিবেদন তৈরি।
১৬ অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রকৃতি। অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রকৃতি। এখানে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তি কোন ধরণের ব্যবসায় পরিচালনা করেন তা নির্বাচন করতে হবে। এটিরও প্রধান কারণ রাজস্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন করা। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় কমোডিটি কোড ও সেবা কোড ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম ছিল। ২০১২ সালের আইনের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক নির্ধারিত আন্তর্জাতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যবহার করা হয়েছে যা খাতভিত্তিক রাজস্ব প্রতিবেদন তৈরি করা যাবে এবং তা আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে হবে।
১৭ ঘোষণা বর্ণিত তথ্যাদি যে সঠিক ও নির্ভুল সে বিষয়ে একটি ঘোষণা প্রদান করতে হবে। এ ঘোষণা প্রদান করবেন মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা সোল পার্টনার।

৫. নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির তথ্য ও স্থানের পরিবর্তন
৫.১ যে সকল তথ্য পরিবর্তিত হলে কমিশনারকে অবহিত করতে হবে

ব্যবসায়ের স্থান ব্যতীত নিম্নের তথ্য পরিবর্তিত হলে তথ্য পরিবর্তনের ১৫ দিনের মধ্যে কমিশনারকে অবহিত করতে হবে।

  • ব্যবসায়ের নাম/কোন বাণিজ্যিক নাম/উক্ত ব্যক্তির নাম
  • ব্যবসার ধরণ
  • উক্ত ব্যক্তির যোগাযোগের ঠিকানা বা অন্য কোন যোগাযোগের তথ্য যেমন ই-মেইল, মোবাইল নম্বর, ইত্যাদি
  • অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রকৃতি পরিবর্তন
  • উক্ত ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের তথ্য পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন
  • নতুন ধরনের কোন ব্যবসায় সংযোজন বা বিদ্যমান কোন ধরনের ব্যবসায় বিয়োজন
  • নতুন শাখা চালু বা পুরাতন শাখা বন্ধ করণ।
  • নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সময় সরবরাহকৃত তথ্যের যেকোনোটিতে;
  • নিবন্ধন/তালিকাভুক্তির সময় প্রদত্ত অন্য যেকোন তথ্য
  • বোর্ড কর্তৃক আদেশ দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো পরিবর্তন।
 

তথ্য পরিবর্তনের আবেদনের পদ্ধতি:
কমিশনারেট বদল হয় না এমন তথ্যের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে, যথা:

  • উল্লিখিত পরিবর্তনের তথ্য নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি ফরম "মূসক-২.৬" এ তথ্য পরিবর্তিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে কমিশনারকে অবহিত করবেন
  • উক্ত তথ্য পরিবর্তিত হওয়ার কারণে ফরম "মূসক-২.৩" এ কোনো পরিবর্তন হলে কমিশনার নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির অনুক‚লে নতুন তথ্য সংবলিত একটি মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তিপত্র জারি করবেন।

৫.২: ব্যবসায়ের স্থান পরিবর্তন

(১) কোনো নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির ব্যবসায়ের স্থান পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে তাকে উক্ত পরিবর্তনের অন্যূন ১৫ দিন পূর্বে ফরম "মূসক-২.৭" এ যেই কমিশনারেটে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত তার কমিশনার বরাবর আবেদন করতে হবে

(২) প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-অন্তে আবেদনে বর্ণিত তথ্যাদি যথাযথ পাইলে,-

(ক) আন্তঃকমিশনারেট স্থানান্তরের ক্ষেত্রে-

(অ) সকল বকেয়া, যদি থাকে, নির্ধারণ করে তা আবেদনকারীকে অবহিত করবেন, এবং

(আ) নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি নতুন যে কমিশনারেটের কর্মএলাকায় স্থানান্তরিত হতে চান, নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির বকেয়া ও অন্যান্য সকল তথ্যাদিসহ সেই কমিশনারেটে স্থানান্তরের অনুমতি প্রদান করবেন।

(খ) একই কমিশনারেটের কর্মএলাকায় একস্থান হতে অন্য স্থানে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কমিশনার উহা স্থানান্তর করে আবেদনকারীকে অবহিত করবেন।

(৩) স্থান পরিবর্তনের জন্য যদি কমিশনারেট পরিবর্তিত হয় তাহলে কমিশনারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হয়, কারণ:

  • নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সনদপত্র (মূসক-২.৩) নতুন করে প্রিন্ট নিতে হবে
  • আগের কমিশনারেটে কোনো অনিষ্পন্ন বিষয় থাকলে তাসহ নতুন কমিশনারেটে স্থানান্তরিত হতে হবে
  • অনিষ্পন্ন কোনো বকেয়া বা ফেরত দাবী থাকলে তাও নতুন কমিশনারেটে স্থানান্তর করতে হবে।

৬. নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বাতিল
৬.১ মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন বাতিলকরণ
যেসকল কারণে নিবন্ধন বাতিল হবে:
নি উল্লিখিত কারণে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে, যথা:

  • তিনি নিবন্ধিত হওয়ার পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করতে ব্যর্থ হন
  • তিনি তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন
  • তার অর্থনৈতিক কার্যক্রমটি অব্যাহতিপ্রাপ্ত হিসাবে ঘোষিত হয়; বা
  • পর পর দুই বছর তার বার্ষিক টার্নওভার নিবন্ধনসীমার নিচে থাকে।

নিবন্ধন বাতিলের আবেদন দাখিল
কোনো নিবন্ধিত ব্যক্তি তার মূসক নিবন্ধন বাতিলের জন্য ফরম “মূসক-২.৪” এ কমিশনারের নিকট আবেদন করবেন।
নিবন্ধন বাতিলের আবেদন প্রক্রিয়াকরণ
আবেদন প্রাপ্তির পর কমিশনার আবেদনের সত্য সঠিক আছে কিনা তা যথাযথ অনুসন্ধানের পর নি¤œরূয ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যথা:
(ক) নিবন্ধন বাতিলের কারণ যুক্তিসঙ্গত মনে করলে, নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করে তাকে অবহিত করবেন।
(খ) নিবন্ধন বাতিলের কারণ যুক্তিসঙ্গত মনে না করলে বা আবেদন অসম্পূর্ণ থাকলে বা অন্যকোনো কারণে নিবন্ধন বাতিল করা যুক্তিসঙ্গত না হলে, তাকে শুনানিতে ডাকবেন, এবং আবেদনকারীর আবেদন ও শুনানির বক্তব্য বিবেচনা করে তার নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত বা অন্যবিধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাকে অবহিত করবেন।
(গ) নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত করা হলে স্থগিতের ১৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধিত ব্যক্তি সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে (আইনের ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৬) অনুযায়ী) ফরম “মূসক-২.৫” এ একটি চূড়ান্ত দাখিলপত্র পেশ করিবেন।
(ঘ) চূড়ান্ত দাখিলপত্র পেশের ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে তথ্যাদি যথাযথ প্রাপ্তি পেলে কমিশনার তার নিবন্ধন বাতিল করবেন।
(ঙ) তথ্য সঠিক না পেলে কমিশনার নিবন্ধন বাতিলের আবেদন খারিজ করবেন।
(চ) নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে যদি দেখা যায় যে তার বার্ষিক টার্নওভার নিবন্ধনসীমার নিচে, কিন্তু তালিকাভুক্তিসীমার ওপরে, তাহলে কমিশনার তার মূসক নিবন্ধন বাতিলপূর্বক তাকে টার্নওভার কর তালিকাভুক্ত করতে পারিবেন।
কমিশনার কর্তৃক স্ব-উদ্যোগে নিবন্ধন বাতিল
যদি কোন নিবন্ধিত ব্যক্তি মূসক নিবন্ধন বাতিলের জন্য আবেদন দাখিল না করেন এবং যথাযথ অনুসন্ধানের পর যদি কমিশনারের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত ব্যক্তির মূসক নিবন্ধন বাতিলযোগ্য, তাহলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে মূসক নিবন্ধন বাতিলের আবেদনপত্র দাখিল করিবার নির্দেশ প্রদান করবেন এবং উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী আবেদন করা না হইলে কমিশনার স্ব-উদ্যোগে তাহার মূসক নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবেন।
নিবন্ধন বাতিল পরবর্তী কার্যক্রম
কোনো নিবন্ধিত ব্যক্তির মূসক নিবন্ধন বাতিল করা হলে, তিনি―
(ক) অনতিবিলম্বে কর চালানপত্র, উৎসে কর কর্তন সনদপত্র, রশিদ, ক্রেডিট নোট, ডেবিট নোট, ইত্যাদি সকল মূসক সংক্রান্ত হিসাবরক্ষণ বিষয়ক দলিলাদি ব্যবহার বা ইস্যু করা থেকে বিরত থাকবেন;
(খ) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র এবং তার সকল প্রত্যায়িত অনুলিপি কমিশনারের নিকট ফেরত প্রদান; এবং
(গ) কোনো বকেয়া থাকলে তা পরিশোধ করবেন।
নিবন্ধন বাতিলের পর কোনো বকেয়া বা অপরাধ উদঘাটিত হলে গৃহীতব্য কার্যক্রম
নিবন্ধন বাতিলের পূর্বে সম্পাদিত অনুসন্ধান সত্ত্বেও, মূসক নিবন্ধন বাতিলের পর যদি উদঘাটিত হয় যে, উক্ত ব্যক্তির নিকট আইনের অধীন কোনো বকেয়া পাওনা রয়েছে বা কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাহলে তার প্রতি আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান এমনভাবে প্রযোজ্য হইবে যেন তিনি একজন নিবন্ধিত ব্যক্তি। অর্থাৎ তার নিকট হতে বকেয়া আদায় বা সংঘটিত অপরাধ নিষ্পত্তির জন্য আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান প্রযোজ্য হবে।
৬.২ টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিলকরণ
যেসকল কারণে তালিকাভুক্তি বাতিল হবে:
নি উল্লিখিত কারণে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে, যথা:

  • তিনি তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন;
  • তাহার অর্থনৈতিক কার্যক্রমটি অব্যাহতিপ্রাপ্ত হিসাবে ঘোষিত হয়; বা
  • পর পর তিনটি করমেয়াদে তার বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তিসীমার নিচে থাকে।

তালিকাভুক্তি বাতিলের আবেদন দাখিল
কোনো তালিকাভুক্ত ব্যক্তি তার টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিলের জন্য ফরম “মূসক-২.৪” এ কমিশনারের নিকট আবেদন করবেন।

তালিকাভুক্তি বাতিলের আবেদন প্রক্রিয়াকরণ
আবেদন প্রাপ্তির পর কমিশনার আবেদনের সত্য সঠিক আছে কিনা তা যথাযথ অনুসন্ধানের পর নি¤œরূয ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যথা:
(ক) তালিকাভুক্তি বাতিলের কারণ যুক্তিসঙ্গত মনে করলে, তালিকাভুক্তিসাময়িকভাবে স্থগিত করে তাকে অবহিত করবেন।
(খ) তালিকাভুক্তি বাতিলের কারণ যুক্তিসঙ্গত মনে না করলে বা আবেদন অসম্পূর্ণ থাকলে বা অন্যকোনো কারণে তালিকাভুক্তি বাতিল করা যুক্তিসঙ্গত না হলে, তাকে শুনানিতে ডাকবেন, এবং আবেদনকারীর আবেদন ও শুনানির বক্তব্য বিবেচনা করে তার তালিকাভুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত বা অন্যবিধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাকে অবহিত করবেন।
(গ) তালিকাভুক্তি সাময়িক স্থগিত করা হলে স্থগিতের ১৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধিত ব্যক্তি সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে (আইনের ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৬) অনুযায়ী) ফরম “মূসক-২.৫” এ একটি চূড়ান্ত দাখিলপত্র পেশ করিবেন।
(ঘ) চূড়ান্ত দাখিলপত্র পেশের ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে তথ্যাদি যথাযথ প্রাপ্তি পেলে কমিশনার তার তালিকাভুক্তি বাতিল করবেন।
(ঙ) তথ্য সঠিক না পেলে কমিশনার তালিকাভুক্তি বাতিলের আবেদন খারিজ করবেন।
(চ) তালিকাভুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে যদি দেখা যায় যে তার বার্ষিক টার্নওভার নিবন্ধনসীমার ওপরে, তাহলে কমিশনার তার তালিকাভুক্তি বাতিলপূর্বক তাকে মূসক নিবন্ধন প্রদান করতে পারবেন।
(ছ) মূসক নিবন্ধনের জন্য দাখিলকৃত আবেদন তালিকাভুক্তি বাতিলের আবেদন হিসাবে বিবেচিত হবে এবং কমিশনার যে তারিখে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র ইস্যু করবেন সে তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী দিবসে টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিল হয়েছে বলে গণ্য হবে।
কমিশনার কর্তৃক স্ব-উদ্যোগে তালিকাভুক্তি বাতিল
(১) যদি কোন তালিকাভুক্ত ব্যক্তি তালিকাভুক্তি বাতিলের জন্য আবেদন দাখিল না করেন এবং যথাযথ অনুসন্ধানের পর যদি কমিশনারের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, কোনো ব্যক্তির টার্নওভার করদাতা হিসাবে তালিকাভুক্ত থাকিবার আর প্রয়োজন নেই, তাহলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে শুনানির সুযোগ প্রদানপূর্বক তার তালিকাভুক্তি বাতিল করতে পারবেন।
(২) কমিশনার যথাযথ অনুসন্ধানের পর যদি নিশ্চিত হন যে, কোনো ব্যক্তির বার্ষিক টার্নওভার নিবন্ধনসীমা অতিক্রম করেছে এবং তার মূল্য সংযোজন করদাতা হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার আবশ্যকতা উদ্ভুত হয়েছে, তালে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে শুনানি প্রদানপূর্বক তার টার্নওভার তালিকাভুক্তি বাতিলপূর্বক নিবন্ধিত করিবেন।

তালিকাভুক্তি বাতিলের পর কোনো বকেয়া বা অপরাধ উদঘাটিত হলে গৃহীতব্য কার্যক্রম
তালিকাভুক্তি বাতিলের পূর্বে সম্পাদিত অনুসন্ধান সত্ত্বেও, টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিলের পর যদি উদঘাটিত হয় যে, উক্ত ব্যক্তির নিকট আইনের অধীন কোনো বকেয়া পাওনা রয়েছে বা কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাহলে তার প্রতি আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান এমনভাবে প্রযোজ্য হইবে যেন তিনি একজন তালিকাভুক্ত ব্যক্তি। অর্থাৎ তার নিকট হতে বকেয়া আদায় বা সংঘটিত অপরাধ নিষ্পত্তির জন্য আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান প্রযোজ্য হবে।

৭. নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিবর্গের তালিকা প্রকাশ এবং বিআইএন ও সম্মাননাপত্রের ব্যবহার
৭.১ নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিবর্গের তালিকা প্রকাশ ও সংরক্ষণ
আইনি বাধ্যবাধকতা

  • নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত সকল ব্যক্তির একটি নির্ভুল এবং হালনাগাদ তালিকা সংরক্ষণ ও প্রকাশ করবে
  • কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশিত তালিকায় না থাকলে, উক্ত ব্যক্তি নিবন্ধিত বলিয়া গণ্য হবেন না
  • কোনো ব্যক্তির নাম উক্ত তালিকায় থাকলে, উক্ত ব্যক্তি এই আইনের অধীন নিবন্ধিত বলে গণ্য হবে
  • বোর্ড এই আইনের অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিগণের হালনাগাদ তালিকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করিবে
  • তথ্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত তথ্য তালিকায় অর্ন্তভুক্ত থাকবে

প্রকাশিতব্য তথ্য

  • নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির নাম এবং ঠিকানা;
  • ব্যবসায়িক নাম বা নামসমূহ, যদি থাকে, যার মাধ্যমে উক্ত নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন;
  • উক্ত ব্যক্তির ব্যবসায় সনাক্তকরণ সংখ্যা;
  • উক্ত ব্যক্তি তাহার শাখা ইউনিটের জন্য পৃথকভাবে নিবন্ধিত হইয়া থাকিলে, প্রত্যেক শাখা ইউনিটের ব্যবসায়িক নাম, ঠিকানা এবং ব্যবসায় সনাক্তকরণ সংখ্যা;
  • যে তারিখে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কার্যকর হয়েছে, সেই তারিখ; এবং
  • নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সর্বশেষ অবস্থা (Status)।

৭.২ বিআইএন এর ব্যবহার
বিআইএন ব্যবহারের ক্ষেত্র:
(ক) ব্যাগেজ আমদানি ব্যতীত অন্য সকল আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে;
(খ) নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির নামে ভূমি বা ভবন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে;
(গ) আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ গ্রহণের ক্ষেত্রে;
(ঘ) কোনো উৎসে কর্তনকারী সত্তায় কোনো সরবরাহ প্রদানের ক্ষেত্রে;
(ঙ) কোনো টেন্ডারে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে;
(চ) কোনো সংস্থায় তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে;
(ছ) বন্ড লাইসেন্স অনুমোদনের ক্ষেত্রে;
(জ) নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির অনুকূলে ব্যাংক ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে; এবং
(ঝ) বোর্ড কর্তৃক আদেশ দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো ক্ষেত্রে।
বিআইএন ব্যবহারের সময়:
বিআইএন বর্ণিত ক্ষেত্রে ব্যবহার বাদ্যতামূলক। তবে বিআইএন ইস্যুর প্রথম অর্থ বছর ব্যতীত পরবর্তী অর্থবছরে বিআইএন এর পাশাপাশি মূসক সম্মাননাপত্র-এর প্রয়োজন হবে। কারণ, বিআইএন নবায়নের প্রয়োজন নেই। একজন করদাতা দাখিলপত্র জমা প্রদান না করলেও তার বিআইএন থেকে যাবে এবং আইনি বিধান প্রতিপালন না করেও ব্যবসায় করতে পারেন। এ বিষয়টি পরিহার করার লক্ষে বিআইএন এর পাশাপাশি মূসক সম্মাননাপত্র ব্যবহার বাদ্যতামূলক করা হয়েছে। এটি আয়কর আইনের আওতায় জারিকৃত প্রত্যয়নপত্রের সমমানের এবং একই উদ্দেশ্যে।
৭.৩ মূসক সম্মাননাপত্রের ব্যবহার
কোনো নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির সম্মাননাপত্র নি¤œবর্ণিত ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে, যথা:―
(ক) আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নবায়নের ক্ষেত্রে;
(খ) নিবন্ধনের বা তালিকাভুক্তির অর্থ বৎসর ব্যতীত পরবর্তী সময়ে কোনো উৎসে কর্তনকারী সত্তায় কোনো সরবরাহ প্রদানের ক্ষেত্রে;
(গ) নিবন্ধনের বা তালিকাভুক্তির অর্থ বৎসর ব্যতীত পরবর্তী সময়ে কোনো টেন্ডারে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে;
(ঘ) কোনো সংস্থায় তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে;
(ঙ) বন্ড লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে;
(চ) নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির অর্থ বৎসর ব্যতীত পরবর্তী সময়ে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির অনুকূলে ব্যাংক ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে;
(ছ) নিবন্ধনের বা তালিকাভুক্তির অর্থ বৎসর ব্যতীত পরবর্তী সময়ে নিবন্ধিত ব্যক্তির নামে কোন স্থাবর সম্পত্তির নিবন্ধনের ক্ষেত্রে; এবং
(জ) বোর্ড কর্তৃক আদেশ দ্বারা নির্ধারিত অন্যকোনো ক্ষেত্রে।

৮. নিবন্ধত বা তালিকাভুক্তি সংশ্লিষ্ট ব্যত্যয় ঘটার ক্ষেত্রে আইনগত বিধান
৮.১ ব্যর্থতা ও আর্থিক জরিমানা

ক্রমিক নং ব্যর্থাতা বা অনিয়ম জরিমানার পরিমাণ
০১ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত/তালিকাভুক্তির আবেদন না করার ব্যর্থতা বা অনিয়ম
১০(দশ) হাজার টাকা মাত্র
০২ নিবন্ধন/টার্নওভার কর সনদপত্র প্রদর্শন না করার ব্যর্থতা বা অনিয়ম
০৩ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পর্বিত তথ্যের পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত না করার ব্যর্থতা বা অনিয়ম
০৪ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন/তালিকা ভুক্তির বাতিলের আবেদন না করার ব্যর্থতার বা অনিয়ম
০৫ নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর তালিকাভূক্তি যোগ্য করার ব্যর্থতা বা অনিয়ম

৮.২ নিবন্ধন সংক্রান্ত অপরাধ, বিচার ও দন্ড :
জাল বা ভুয়া ইওঘ সম্বলিত মূসক নিবন্ধনপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা সমন্বিত কর চালানপত্র এবং উৎসে কর কর্তন সনদপত্র তৈরী বা ব্যবহার করেন তাহলে অনুর্ধ্ব ১ (এক) বছর কারাদ- বা প্রদেয় করের সমপরিমান অর্থদ- বা উভয় হবেন।

৯. ক্রান্তিকালীন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি
৯.১ নতুন আইনের আওতায় নতুন করে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশে মূসক ব্যবসায় চালু হয়েছে ১৯৯১ সাল হতে। মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর অধীন প্রায় ৮ লক্ষাধিক নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি রয়েছেন। তাদের সবাই হয়তো ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন না। যারা উক্ত আইনের আওতায় নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করে ব্যবসায় পরিচালনা করছেন তাদেরও সবাইকে নতুন আইনের আওতায় নতুন করে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করতে হবে। এর প্রধান কারণ নিরূপ:

  • নতুন আইনের আওতায় নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তির র ক্ষেত্র ভিন্ন
  • নতুন আইনের আওতায় বিআইএন ৯ ডিজিটের
  • পুরাতন আইনের আওতায় বিআইএন ছিল কমিশনারেট ও সার্কেল অফিসের ভৌগলিক অধীক্ষেত্র ভিত্তিক যা পরিবর্তন করে নতুন আইনের আওতায় একটি অর্থহীন নম্বর করা হয়েছে
  • পুরাতন আইনে একটি কোম্পানির একাধিক বিআএন থাকার সুযোগছিল যা নতুন আইনে নেই।

৯.২ নতুন আইনের আওতায় ক্রান্তিকালীন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণের পদ্ধতি
(১) মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২২ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিগণের নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তির উপাত্ত দ্বারা বোর্ড একটি উপাত্ত-ভা-ার তৈরি করবে।
(২) কমিশনার প্রাপ্ত আবেদন উপাত্ত-ভা-ারের তথ্য ব্যবহার করিয়া মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২২ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিগণকে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করবেন।
(৩) বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পর মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২২ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি মূল্য সংযোজন কর আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত না হলে কমিশনার উক্ত নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে।
(৪) নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বাতিলের পর যদি উদঘাটিত হয় যে, উক্ত ব্যক্তির নিকট মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২২ নং আইন) এর অধীন কোনো বকেয়া পাওনা রহিয়াছে বা কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাহলে তার প্রতি উক্ত আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান এমনভাবে প্রযোজ্য হবে যেন তিনি একজন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি।
(৫) মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ২২ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর অধীন তালিকাভুক্ত হতে চাইলে তার বার্ষিক টার্নওভার যে নিবন্ধনসীমার নিচে রয়েছে উহা প্রমাণের দায় উক্ত ব্যক্তির উপর বর্তাবে।