09643717171

e-Return Hotline Number

মূসক প্রশ্ন

মূসক সংক্রান্ত সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন

অধ্যায় ১

ভ্যাট মূলতত্ব

মূসক কী?

মূসক হলো স্বনির্ধারণী পরোক্ষ কর। সরবরাহকৃত পণ্য বা সেবার ওপর প্রদেয় করের বিপরীতে উপকরণ কর সমন্বয় করে পণ্য বা সেবার মূল্যস্তরের প্রকৃত সংযোজনের ওপর আরোপিত করই ঐ পণ্য বা সেবার মূল্য সংযোজন কর বা মূসক। 
ধরা যাক, কোন একটি পণ্য ১০০০ টাকায় ক্রয় করে ১৫০০ টাকায় বিক্রয় করলে, ঐ পণ্যটি ক্রয়ে ১০০০ টাকায় ১৩০.৪৩ টাকা মূসক অন্তর্ভূক্ত ছিল।  (হিসাব: ১০০০ x ১৫/১১৫ তদ্রুপ, পণ্যটি ১৫০০ টাকায় বিক্রয় করলে এর মধ্যে ১৯৫.৬৫ টাকা মূসক অন্তর্ভূক্ত থাকবে। (হিসাব: ১৫০০ x ১৫/১১৫)
পণ্যটি ১৫০০ টাকায় বিক্রয় করায় প্রকৃত সংযোজন হবে ৫০০ টাকা এবং বিক্রেতা পণ্যটি ক্রয়কালে মূসকসহ মূল্য পরিশোধ করায় ক্রয়স্তরের অন্তর্ভূক্ত মূসক ফেরত নিয়ে বিক্রয়স্তরে প্রকৃত সংযোজনের উপর অর্থাৎ ৫০০ টাকার উপর মূসক পরিশোধ করবেন।
              ১৫০০ টাকার উপর পরিশোধযোগ্য মূসক  ১৯৫.৬৫ টাকা
              ১০০০ টাকায় অন্তর্ভূক্ত মূসক                ১৩০.৪৩ টাকা


              নীট ৫০০ টাকার উপর পরিশোধযোগ্য মূসক ৬৫.৬২ টাকা (হিসাব: ৫০০ x ১৫/১১৫)

মূসক কীভাবে আরোপতি হয়?

করযোগ্য আমদানি এবং করযোগ্য সরবরাহের ওপর মূসক আরোপিত হয়। আইনের প্রথম তফসিলে বর্ণিত অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্য ও সেবা ব্যতীত সকল পণ্য ও সেবার উপর ১৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপিত হবে।

মূসক কে পরিশোধ করেন?

মূল্য সংযোজন কর বা মূসক ব্যবস্থা সরবরাহের বা বিক্রয়ের বিপরীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উপকরণ কর  রেয়াত ভিত্তিক কর ব্যবস্থা। সরবরাহকারী পণ্য বা সেবা সরবরাহকালে সরবরাহ মূল্যে অন্তর্ভূক্ত মূসকের বিপরীতে ঐ পণ্য বা সেবার ক্রয়কালে ক্রয়মূল্যের উপর পরিশোধিত মূসক রেয়াত হিসেবে গ্রহণ করেন এবং নীট মূসক পরিশোধ করেন।  অর্থাৎ বিক্রেতা ক্রেতার নিকট হতে প্রাপ্ত মূল্যের মধ্যেই মূসক আদায় করে ক্রয়স্তরের মূসক রেয়াত নিয়ে নীট মূসক সরকারি কোষাগারে জমা করে থাকেন।
মূল্য সংযোজন কর ভোক্তা কর হওয়ায় পণ্য বা সেবার উপর প্রযোজ্য সমূদয় মূল্য সংযোজন কর ভোক্তাই পরিশোধ করবেন। মধ্যবর্তী প্রক্রিয়া হিসেবে উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী সবাই প্রত্যেকটি ধাপে বিক্রয়স্তরে সরকারের পক্ষে মূসক আাদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দিবেন।

মূসকদাতা কে?

মূসকদাতা হলেন মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থায় পণ্য বা সেবার সর্বশেষ ভোক্তা। সরবারহকারী বা বিক্রেতা বিক্রয়ের প্রতিটি স্তরে ক্রেতার নিকট হতে মূসক আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে থাকেন। যেহুতু ভোক্তাই হলেন সর্বশেষ ক্রেতা, সেহুতু চূড়ান্ত মূসকের ভার ভোক্তার উপরই বর্তায়। সরবারহকারী বা বিক্রেতা শুধুমাত্র বিক্রয়স্তরের আদায়কৃত মূসক সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে থাকেন।

আমি কেন মূসক পরিশোধ করব?

একজন সুনাগরিক হিসেবে নিম্ন বর্ণিত কারণে আমি মূসক পরিশোধ করবো:-

০১। রাষ্ট্রীয় আইন প্রতিপালন কর প্রদান একজন নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।
০২। করের অর্থ ব্যতীত রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

বাংলাদেশে কখন মূসক চালু হয়?

বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে ১ জুলাই মূল্য সংযোজন কর চালু হয়।

মূসকের হার কত?

মূসকের আদর্শ হার ১৫%। আমদানি ও সরবরাহের ক্ষেত্রে মূসকের হার ১৫% এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে মূসকের হার ০% প্রযোজ্য।

১৯৯১ সনের মূসক ব্যবস্থার আওতায় র্সবশেষ মূসক হারগুলো কত?

১৯৯১ সনের মূসক ব্যবস্থার আওতায় মূল্য সংযোজনের করের আদর্শহার ১৫%। সর্বশেষ অর্থবছর (২০১৫-১৬) এর বাজেট অনুযায়ী আদর্শহার ব্যতীত কতিপয় ক্ষেত্রে সংকুচিত ভিত্তিমূল্য-ভিত্তিক ১০টি নিম্নতর হার বিদ্যমান আছে। যথা:  ১.৫%, ২%, ২.৫%, ৪%, ৫%, ৫.৫%, ৬%, ৭.৫%, ৯% এবং ১০%।

মূসক নিবন্ধন ও টার্ন ওভার কর তালিকাভুক্তি সীমা কত?

নতুন মূসক ব্যবস্থার নিবন্ধন সীমা ৮০ লক্ষ টাকা এবং তালিকাভুক্তির সীমা ৩০ লক্ষ টাকা।

মূসক ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে?

মূসক ব্যবস্থা পণ্য বা সেবার সরবরাহের প্রতিটি স্তরে উপকরণ কর রেয়াত গ্রহণ ব্যবস্থা। করদাতা আইন ও বিধি অনুযায়ী হিসাব সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রত্যেক কর মেয়াদে ক্রয়কৃত উপকরণ বা পণ্যের উপর পরিশোধিত মূল্য সংযোজন কর রেয়াত হিসাবে গ্রহণ করেন। সরবরাহের প্রতিটি স্তরেই রেয়াত গ্রহণ ও মূল্য সংযোজনের উপর মূল্য সংযোজন কর প্রদানের মাধ্যমে মূসক চেইন সম্পন্ন হয়।

পর্যায় মূল্য সংযোজন কর আরোপযোগ্য মূল্য মূল্য সংযোজন কর (কর হার ১৫%) রেয়াত নীট মূসক সংযোজন
আমদানি/উপকরণ অর্জন পর্যায়
ধরা যাক, আমদানি/উপকরণ অর্জন পর্যায়ে মূল্য ১০০০/-
১০০০/- ১৩০.৪৩/- ০/- ১৩০.৪৩/- ১০০০/-
উৎপাদন পর্যায়
ধরা যাক,
উৎপাদন পর্যায়ে উৎপাদনকারীর বিক্রয়মূল্য ১৫০০/-
১৫০০/- ১৯৫.৬৫/- ১৩০.৪৩/- ৬৫.২২/- ৫০০/-
পাইকারী পর্যায়
ধরা যাক,
পাইকারী পর্যায়ে বিক্রেতার বিক্রয়মূল্য ২০০০/-
২০০০/- ২৬০.৮৭/- ১৯৫.৬৫/- ৬৫.২২/- ৫০০/-
খুচরা পর্যায়
ধরা যাক,
খুচরা পর্যায়ে বিক্রয়মূল্য ২৫০০/-
২৫০০/- ৩২৬.০৯/- ২৬০.৮৭/- ৬৫.২২/- ৫০০/-
ভোক্তার পরিশোধিত কর (চূড়ান্ত মূল্য ২৫০০/- এর উপর) ৩২৬.০৯/-  

আমি কীভাবে বুঝবো যে, আমার ব্যবসায়ে মূসক প্রযোজ্য হবে কিনা?

আইনের প্রথম তফসিলে বর্ণিত পণ্য বা সেবা যদি আমার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের আওতাভূক্ত হয়, তাহলে আইন অনুসারে আমার ব্যবসায়ে মূসকের বাধ্যবাধকতা উদ্ভব হবে না। 

তাছাড়া আমার ব্যবসায়ের বাৎসরিক টার্নওভার আমি আমার ব্যবসায়ের মূসক প্রযোজ্যতা নির্ধারণ করতে পারবো। তবে আমার ব্যবসায়ের বাৎসরিক টার্নওভার যাই হোক না কেন আমি চাইলে মূসক নিবন্ধন গ্রহণ করে মূসক প্রদান করতে পারবো।

নতুন মূসক আইনের আওতায় কর কাকে বলে?

নতুন মুসক আইনের আওতায় কর বলতে বোঝাবে মূসক, টার্নওভার কর ও সম্পূরক শুল্ক এবং বকেয়া আদায়ের উদ্দেশ্যে সুদ, জরিমানা ও অর্থদন্ড।

ভ্যাট গ্রাহকের দায়িত্ব কি?

একজন ভোক্তার দায়িত্ব হলো কোন পণ্য ক্রয় করে বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রয় রশিদ সংগ্রহ করা। কারণ, যদি ভোক্তা মূসক চালান গ্রহণ করে, এটা নিশ্চিত হয় যে ভোক্তার প্রদেয় ভ্যাট সরকারী কোষাগারে জমা হয়েছে।

যদি বিক্রেতা বিক্রিত পণ্যের সঙ্গে ভ্যাট চালান ইস্যু না করে সে ক্ষেত্রে ক্রেতার করণীয় কি?

বিক্রিত পণ্যের সঙ্গে ভ্যাট চালান প্রদান করা বিক্রেতার দায়িত্ব, একই সঙ্গে ক্রেতার দায়িত্ব যথাযথ ভ্যাট চালান বুঝে নেয়া। যদি বিক্রেতা কোন কারনে ভ্যাট চালান প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে বিক্রেতা কেন ভ্যাট চালান প্রদান করছেন না তার যথাযথ কারন উপস্থাপন করবেন। কারণ, যদি ভ্যাট চালানপত্র সঠিকভাবে নেওয়া হয়, এটা নিশ্চিত হয় যে ভোক্তার প্রদেয় ভ্যাট সরকারী কোষাগারে জমা হয়েছে। অথচ, যদি বিক্রেতা  ভ্যাট চালান প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে, সেক্ষেত্রে ক্রেতা বিষয়টি ভ্যাট কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে পারেন, ইহা অনলাইনে অথবা নিকটতম ভ্যাট কর্তৃপক্ষকে সরাসরি জানাতে পারেন।

অধ্যায় ২

নিবন্ধীকরণ ও তালিকাভুক্তি

নিবন্ধন বা তালিকাভূক্তি কি?

মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থায় যেকোন আমদারিকারক, রপ্তানিকারক বা করযোগ্য সরবরাহ প্রদানকারীকে মূসক ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত হতে হয়। মূসক ব্যবস্থার সাথে এই সম্পৃক্তি সম্পন্ন হয়  নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির মাধ্যমে। তাকে মূসক আইনের আওতায় নির্ধারিত পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক পরিচিতি নম্বর গ্রহণ করে মূসক আইনের প্রতিপালন করতে হয়। আর  মূসক আইনের আওতায় নির্ধারিত পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক পরিচিতি নম্বর গ্রহণ করাকে  নিবন্ধন বা তালিকাভূক্তি বলা হয়।

 

কখন আমাকে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করতে হবে?

অর্থনৈতিক কার্যক্রমের টার্নওভার প্রতি ১২ (বার) মাস সময়ে ৮০ লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে নিবন্ধন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের টার্নওভার প্রতি ১২ (বার)  মাস সময়ে ৩০ লক্ষ টাকা অতিক্রম করনে তালিকাভুক্তির আবশ্যকতা উদ্ভূত হয়। নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবশ্যকতা উদ্ভূত হওয়ার দিন হতে ১৫ (পনের) দিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে আমাকে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্ত গ্রহণ করতে হবে। 

ব্যবসায় সনাক্তকরণ সংখ্যা কি?

কোন ব্যক্তি অর্থনৈতিক কার্যক্রমের টার্নওভারের ওপর ভিত্তি করে যে ব্যবসায়িক পরিচিতি নম্বর গ্রহণ করেন তাই ব্যবসায় সনাক্তকরণ সংখ্যা। এ সনাক্তকরণ সংখ্যার মাধ্যমে ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রকৃতি ও কার্যক্রম বোঝা যায় না। ৯ অংকের একটি সুনির্দিষ্ট সংখ্যা যা দ্বারা এক জন করদাতাকে চিহ্নিত করা হয়। এনবিআর এর ওয়েবসাইট হতে এ নম্বরটি দিয়ে করদাতার ব্যবসার প্রকৃতি জানা যাবে।

 

আমি কিভাবে একটি বিআইএন পেতে পারি?

আমার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সীমা বার্ষিক টার্নওভারের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে ফরম মূসক-২.১ এ কমিশনার বরাবর আবেদন করতে হবে। যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের পর মূসক সিস্টেম হতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে আমার অনুকূলে ফরম মূসক-২.১ এ বিআইএন সম্বলিত একটি নিবন্ধন সনদপত্র/টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি সনদপত্র ইস্যু করা হবে।

একটি বিআইএন থাকার সুফল কি কি?

বিআইএন এর মাধ্যমে একজন ব্যবসায়ীর ব্যবসায়ের আইনগত বৈধতা তৈরি হয়। তিনি নিম্ন বর্ণিত সুবিধাদি গ্রহণ করতে পারবেন :

  • ব্যাগেজ আমদানি ব্যতীত অন্য সকল আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে
  • নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির নামে ভূমি বা ভবন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে
  • আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ গ্রহণের ক্ষেত্রে
  • কোনো উৎসে কর্তনকারী সত্তায় কোনো সরবরাহ প্রদানের ক্ষেত্রে
  • কোনো টেন্ডারে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে
  • কোনো সংস্থায় তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে 
  • বন্ড লাইসেন্স অনুমোদনের ক্ষেত্রে
  • নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির অনুকূলে ব্যাংক ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে

সম্মাননাপত্র কি?

কোন করদাতা সংশ্লিষ্ট এক বছরের সকল কর মেয়াদের মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র নিয়মিতভাবে দাখিল করলে কমিশনারেট কর্তৃক মূসক-১৮.৫ ফরমে করদাতাকে যে স্বীকৃতি পত্র প্রদান করা হবে তাকে সম্মাননাপত্র বলে। 

আমি কিভাবে একটি সম্মাননাপত্র পেতে পারি?

সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের সকল করমেয়াদের মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র দাখিল করলেই ঐ অর্থবছর শেষের পরবর্তী এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক মূসক-১৮.৫ ফরমে একটি সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে। এর জন্য কোন আবেদনের প্রয়োজন নেই। ভ্যাট অনলাইন সিস্টেম স্বয়ংক্রীয়ভাবেই তা প্রেরণ করবে। এই সম্মাননাপত্রের কার্যকারিতা পরবর্তী এক বছরের জন্য বলবৎ থাকবে।

একটি সম্মাননাপত্র থাকার সুবিধা কি কি?

একটি সম্মাননাপত্রের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি মূসক আইনের আওতায় নিম্ন বর্ণিত সুবিধাদি গ্রহণ করতে পারবেন, যথা:

  • আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নবায়নে
  • উৎসে কর্তনকারী সত্তার সরবরাহ প্রদান
  • টেন্ডারে অংশগ্রহণ
  • কোন সংস্থার তালিকাভুক্তি গ্রহণ
  • বন্ড লাইসেন্স নবায়ন
  • ব্যাংক ঋন অনুমোদন
  • স্থাবর সম্পত্তি নিবন্ধন; ইত্যাদি

এ ছাড়াও, করদাতা উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন সামাজিক সুবিধা যেমন, বিভিন্ন হাসপাতাল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, সুপার শপ, ব্রান্ডেড শপ, বিমান টিকেট ইত্যাদিতে মূল্যছাড় এবং বিভিন্ন সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার, ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যাবে।

আমার ব্যবসায়ের বাৎসরিক টার্নওভার কীভাবে হিসাব করব?

১২ (বার) মাস সময়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতকৃত, আমদানিকৃত বা ক্রয়কৃত পণ্যের সরবরাহ বা করযোগ্য সেবা প্রদান হতে প্রাপ্ত সমূদয় অর্থ যোগ করে আমি আমার ব্যবসায়ের বাৎসরিক টার্নওভার হিসাব করা হবে।

নিবন্ধন গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের বাৎসরিক টার্নওভার হিসাবের পদ্ধতি:

  • চলমান ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে: পূর্ববর্তী মাসের (করমেয়াদের) শেষ দিন হতে বিগত ১২ মাসের মোট টার্নওভার হিসাব করে

অর্থাৎ আমি আমার চলমান ব্যবসাকে নিবন্ধিত করতে চাইলে, বর্তমান মাসের পূর্ববর্তী মাসের শেষ দিন হতে বিগত ১২ মাসের হিসাব করবো

ধরা যাক, জানুয়ারী ২০১৭ মাস চলমান থাকলে পূর্ববর্তী মাসের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ হতে বিগত ১২ মাসের হিসেবে ০১ জানুয়ারী ২০১৬ হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ সময়কালের ব্যবসায়িক টার্নওভার হিসাব করতে হবে
তালিকাভুক্ত করদাতার প্রদানকৃত দাখিলপত্রের উপর ভিত্তি করে মূসক সিস্টেম-ই নির্ধারণ করে দেবে কোন ১২ মাস সময়ের পরে করদাতা নিবন্ধনযোগ্য হচ্ছেন

  • সম্পূর্ণ নতুন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে: পূর্ববর্তী মাসের (করমেয়াদের) প্রথম দিন হতে পরবর্তী ১২ মাসের মোট টার্নওভার প্রাক্কলন করে

অর্থাৎ আমি আমার সম্পূর্ণ নতুন ব্যবসাকে নিবন্ধিত করতে পূর্ববর্তী মাসের প্রথম দিন হতে পরবর্তী ১২ মাসের মোট টার্নওভার প্রাক্কলন করবো 

ধরা যাক, জানুয়ারী ২০১৭ মাস আমি আমার নতুন ব্যবসা চালু করতে যাচ্ছি। এ অবস্থায় পূর্ববর্তী মাসের প্রথম দিন ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ হতে পরবর্তী ১২ মাসের হিসেবে ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ হতে ৩০ নভেম্বর ২০১৬ সময়কালের ব্যবসায়িক টার্নওভার প্রাক্কলন করতে হবে

আমি কিভাবে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্তি হতে পারি?

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবশ্যকতা উদ্ভূত হলে আমাকে ফরম ২.১ এ সংশ্লিষ্ট কমিশনারের নিকট নিবন্ধিত  বা তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে হবে।

কমিশনার প্রাপ্ত আবেদনের তথ্য যথাযথ সাপেক্ষে ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে আমাকে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করবেন এবং মূসক সিস্টেম আমার অনুকূলে ফরম মূসক-২.৩ এ ব্যবসায় সনাক্তকরণ সংখ্যা সম্বলিত একটি নিবন্ধন বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তিপত্র জারি করবেন।

আমি একটি গ্রুপ অব কোম্পানীর প্রধান যা কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানীর সমন্বয়ে গঠিত। আমাকে প্রতিটি কোম্পানীর…

নতুন মূসক আইনের আওতায় গ্রুপ অব কোম্পানীর জন্য আলাদা নিবন্ধন গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই। গ্রুপ অব কোম্পানীর জন্য একটি মাত্র নিবন্ধন গ্রহণ করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।

আমার কোম্পানির বেশ কিছু শাখা আছে। ১৯৯১ সনের আইনের আওতায় আমি প্রতিটি শাখার জন্য আলাদা আলাদা…

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৫ অনুযায়ী একই কোম্পানীর প্রতিটি শাখার জন্য আলাদা আলাদা নিবন্ধন নেওয়ার প্রয়োজন নেই, একটি মাত্র নিবন্ধন নিয়েই ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।

কমিশনার কি নিজ হতে আমাকে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করতে পারেন?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২ অনুযায়ী কমিশনার যদি যথাযথ অনুসন্ধানের পর মনে করেন যে আমি নিবন্ধন যোগ্য বা তালিকাভুক্তি যোগ্য তাহলে কমিশনার স্ব-উদ্যোগে আমাকে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করতে পারেন। 

আইনের আওতায় অব্যাহতি প্রাপ্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের জন্য নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির গ্রহণ করতে হবে?

অব্যাহতি প্রাপ্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের জন্য নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ করায় প্রয়োজন নেই। 

অব্যাহতি প্রাপ্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের আওতায় ব্যবসা করলেও আমি স্বেচ্ছা নিবন্ধন গ্রহণ করতে পারবো কি?

হ্যাঁ, পারবো।

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সময় প্রদত্ত তথ্য আমি কিভাবে পরিবর্তন করতে পারবো?

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সময় প্রদত্ত তথ্যের কোনরূপ পরিবর্তন করতে চাইলে তথ্য পরিবর্তনের ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে মূসক ২.৬ ফরমে কমিশনারকে অবহিত করে তথ্যের পরিবর্তন করতে পারবো।

আমার ব্যবসায়ের ঠিকানা একস্থান হতে অন্য স্থানে কিভাবে স্থানান্তর করতে পারি?

ব্যবসায়ের স্থান পরিবর্তন করার ১৫ (পনের) দিন পূর্বে ফরম ‘‘মূসক-২.৭’’ ফরমে কমিশনার বরাবর আবেদন করে আবেদনের যথার্থতা সাপেক্ষে আমি আমার ব্যবসায়ের স্থান পরিবর্তন করতে পারবো। 

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সময় কি কি দাখিল প্রয়োজন হবে?

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সময় কোন দলিলাদি দাখিলের প্রয়োজন হবে না। শুধুমাত্র ফরম মূসক-২.১ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ২.২) পূরণ করে মূসক নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন করা যাবে।

কোন আবাসিক এলাকায় কি নিবন্ধন গ্রহণ করা যাবে?

বসবাস বা গৃহ সংশ্লিষ্ট কোন আবাসিক এলাকায় নিবন্ধন গ্রহণ করা যাবে না।

আমি তালিকাভুক্তি হতে নিবন্ধনে বা নিবন্ধন হতে তালিকাভুক্তির পরিবর্তন করতে পারি?

হ্যাঁ, পারবো। বার্ষিক টার্নওভার সীমা উপর ভিত্তি করে অর্থাৎ আমার তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভারের সীমা ৮০ লক্ষ টাকার উপর হলে তালিকাভুক্তি হতে নিবন্ধনে এবং আমার নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভারের সীমা ৮০ লক্ষ টাকার কম কিন্তু ৩০ লক্ষ টাকার উপর হলে নিবন্ধন হতে তালিকাভুক্তিতে পরিবর্তন করতে পারবো।

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট ফরম কোনগুলো?

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট ফরমসমূহ হলো: ফরম মূসক-২.১, মূসক-২.২, মূসক-২.৩, মূসক-২.৪, মূসক-২.৫, মূসক-২.৬ এবং মূসক-২.৭।

ফরমসমূহ:

ক্র: নং বিবরণ ফরম নং
কেন্দ্রীয় নিবন্ধন / তালিকাভূক্তি ২.১
শাখা নিবন্ধন ২.২
মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন সনদপত্র/ টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি সনদপত্র ২.৩
মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন/টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিল ও কর-প্রকৃতি পরিবর্তনের আবেদনপত্র ২.৪
মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন/টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি বাতিলের  জন্য  চূড়ান্ত দাখিলপত্র ২.৫
নিবন্ধন/তালিকাভুক্তি পরবর্তী তথ্যের পরিবর্তন বা নূতন তথ্য সংযোজন  কমিশনারকে অবহিতকরণ ২.৬
ব্যবসায়ের স্থান পরিবর্তনের আবেদন ২.৭

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন কোথায় দাখিল করতে হবে?

নিম্ন বর্ণিত স্থানে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন দাখিল করতে হবে:

  • অনলাইন বোর্ডের ওয়েব পোর্টালে
  • বোর্ড পরিচালিত কেন্দ্রীয় তথ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে
  • আবেদনকারী জন্য সুবিধাজনক হয় এমন কোনো কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট বা বিভাগীয় দপ্তরে
  • বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত কোন সেবা কেন্দ্রে
  • বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক পরিচালিত কোন মেলায় এবং
  • বোর্ড কর্তৃক আদেশ দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন স্থানে।

অনলাইনে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদনের কোন সুযোগ আছে কি?

হ্যাঁ, আছে। অনলাইন ভিত্তিক আবেদন-ই হবে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির প্রধান মাধ্যম।

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সনদপ্রদর্শন করতে প্রয়োজন আছে কি?

হ্যাঁ, আছে। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১৩ অনুযায়ী নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা উহার সত্যায়িত অনুলিপি এমনভাবে প্রদর্শন করে রাখতে যাতে তা সহজে সকলের দৃষ্টিগোচর হয়।

আমি কিভাবে আমার নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির বাতিল করতে পারি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১১ অনুযায়ী আমার ব্যবসায়ের নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বাতিলের পরিস্থিতি ঘটলে আমি ফরম মূসক-২.৪ এ কমিশনার বরাবর আমার নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারি। নিবন্ধন বাতিলের কারণ যুক্তিসঙ্গত মনে করলে কমিশনার নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করে আমাকে ১৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত দাখিলপত্র প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করবেন। চূড়ান্ত দাখিলপত্র পেশের ১৫ দিনের মধ্যে তথ্যাদি যথাযথ প্রাপ্তি সাপেক্ষে, কমিশনার আমার নিবন্ধন বাতিল করবেন।

পুরাতন ও নতুন আইনের নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সংক্রান্ত পার্থক্যগুলো কি?

পুরাতন ও নতুন আইনে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির সংক্রান্ত পার্থক্যগুলো হলো:

  • প্রথমত, পুরাতন আইনে নিবন্ধনের স্বাভাবিক পদ্ধতি হলো শাখা নিবন্ধন

অন্যদিকে নতুন আইনে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন স্বাভাবিক পদ্ধতি

  • দ্বিতীয়ত, পুরাতন আইনে ম্যানুয়াল নিবন্ধন পদ্ধতি

অন্যদিকে নতুন আইনে অনলাইন ভিত্তিক নিবন্ধন

  • তৃতীয়ত, পুরাতন আইনে বিভাগীয় কর্মকর্তায় নিকট নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে হয়

অন্যদিকে নতুন আইনে কমিশনারের নিকট আবেদন করতে হবে

  • চতুর্থত, পুরাতন আইনে শাখা নিবন্ধন স্বাভাবিক পদ্ধতি হওয়ায় কৃত্রিম সরবরাহ প্রযোজ্য আছে

কিন্তু নতুন আইনে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন স্বাভাবিক পদ্ধতি হওয়ায় কোন প্রকার কৃত্রিম সরবরাহ ঘটবেনা

নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সনদ হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে গেলে আমি কী করব?

মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি সনদের হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তিপত্রের প্রতিলিপি উত্তোলনের লক্ষ্যে ফরম “মূসক-২.৮” এ কমিশনার বরাবর আবেদন করতে পারবো। আমার আবেদন প্রাপ্তির ৪ (চার) কার্যদিবসের মধ্যে আমি মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি সনদের প্রতিলিপি পাবো।

 

নতুন আইনের আওতায় বর্তমান নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করদাতার পুন:নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পদ্ধতি কি হবে?

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিগণের নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তির উপাত্ত দ্বারা বোর্ড একটি উপাত্ত-ভা-ার তৈরি করবে।
নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করদাতাগণের নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কমিশনার উক্ত উপাত্ত-ভান্ডারের তথ্য ব্যবহার করে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করদাতাগণকে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর অধীন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত করবেন।

অনলাইনে নিবন্ধিত করার পদ্ধতি কি?

আপনি নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুযায়ী অনলাইন নিবন্ধন জন্য আবেদন করতে পারেন:

ধাপ-১: প্রথমে www.nbr.gov.bd সাইটে প্রবেশ করুন। অনলাইনে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নির্বাচন করুন। আপনি ভ্যাট অনলাইন পোর্টেলে পৌঁছে যাবেন।

ধাপ-২: প্রথমে ব্যবহারকারীর আইডি এবং পাসওয়ার্ড তৈরি করুন, ব্যবহারকারীর আইডি তৈরী করার সময় ব্যবহারকারী দায়বদ্ধতা বহন করবে।

ধাপ-৩: ব্যবহারকারীর আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ভ্যাট অনলাইন সিস্টেমে প্রবেশ করান এবং নিবন্ধীকরণের বিকল্পটি নির্বাচন করার পরে, ভ্যাট -2.1 ফর্ম জমা দিন, সঠিকভাবে পূরণ করুন।

ধাপ-৪: যদি সঠিকভাবে জমা হয়, ভ্যাট নিবন্ধিত সার্টিফিকেট অথবা টার্ণওভার ট্যাক্স এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট তৈরি হবে। সিস্টেম থেকে তা আপনি গ্রহণ করতে পারবেন। তা আবার আপনার ই-মেইলেও পাঠিয়ে দেয়া হবে।

বি:দ্র: কোনও অনলাইন আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে, দয়া করে এনবিআর ওয়েবসাইটে ওয়েবসাইটটির প্রাসঙ্গিক ব্যবহারিক নির্দেশিকা দেখুন। উপরন্তু, আপনি www.nbrelearning.gov.bd থেকে নিজেকে প্রশিক্ষিত করতে পারেন যাতে প্রাসঙ্গিক ভিডিও সহ আরও জানতে পারেন।

অধ্যায় ৩

কর আরোপ

বাংলাদেশে প্রযোজ্য কর হার কত?

  • বাংলাদেশে প্রযোজ্য মূসকের আদর্শ হার ১৫%
  • রপ্তানি ০%।
  • ৮০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার সম্পন্ন করদাতার ওপর প্রযোজ্য টার্নওভার কর ৩% (তাদের ক্ষেত্রে মূসক প্রযোজ্য নয়)।
  • বিলাসপণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন হারে সম্পূরক শুল্ক।
  • অন্য কোনো নিম্নহার নেই।

মূসক কোথায় আরোপিত হয়?

সকল করযোগ্য আমদানি এবং করযোগ্য সরবরাহের ওপর মূসক আরোপিত হয়।

কোন অবস্থায় কে মূসক পরিশোধ করেন?

মূসক পরিশোধ করেন-

  • আমদানির ক্ষেত্রে  - আমদানিকারক
  • বাংলাদেশে করযোগ্য সরবরাহ প্রদানের ক্ষেত্রে - সরবরাহকারী
  • নিলামকারী কর্তৃক পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে - নিলামকারী
  • উৎসে কর্তনের ক্ষেত্রে - উৎসে কর্তনকারী
  • সেবা আমদানির ক্ষেত্রে - সেবা গ্রহণকারী

কোন কোন সরবরাহ বাংলাদেশে প্রদত্ত হয়েছে বলে বিবেচিত হবে?

আবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক সরবারহ অথবা অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশের কোন নির্দিষ্ট স্থান হতে প্রদত্ত সরবারহ বাংলাদেশে প্রদত্ত হয়েছে বলে বিবেচিত হবে।

অনাবাসিক ব্যক্তি কে? তিনি কিভাবে বাংলাদেশে ব্যবসা করবেন?

যে ব্যক্তি আবাসিক নহেন তিনি-ই অনাবাসিক ব্যক্তি। এ ক্ষেত্রে আবাসিক ব্যক্তি হলেন তিনি, যিনি- 

  • স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশে বসবাস করেন; বা 
  • চলতি বর্ষপুঞ্জির ১৮২ দিনের অধিক বাংলাদেশে অবস্থান করেন; বা
  • কোন বর্ষপুঞ্জির ৯০ দিনের অধিক বাংলাদেশে অবস্থান করেন এবং উক্ত বর্ষপুঞ্জির অব্যবহিত পূর্ববর্তী চার বছরের মধ্যে ৩৬৫ দিনের অধিক বাংলাদেশে অবস্থান করেন

কোন অনাবাসিক ব্যক্তি বাংলাদেশের কোন নির্দিষ্ট স্থান হতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারলে তিনি একজন মূসক এজেন্ট নিয়োগ করে তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম বা ব্যবসা পরিচালনা করবেন। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১৯ এ মূসক এজেন্ট নিয়োগের কথা এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ১৬ এ মূসক এজেন্টের যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে।

মূসক এজেন্ট এর নূন্যতম যোগ্যতা কী?

মূসক এজেন্ট এর নিম্ন বর্ণিত যোগ্যতা থাকতে হবে:

  • আইনের ধারা ১৩০ এর অধীন নিয্ক্তু মূসক পরামর্শক
  • ইন্সটিটিউট বা চার্টার্ড একাউন্টান্টেট অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর নিবন্ধিত সদস্য; বা
  • ইন্সটিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্ট্যাট অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর নিবন্ধিত সদস্য; বা
  • বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর সদস্য হিসেবে নিবন্ধিত কোন আইনজীবী; বা
  • সহকারী কমিশনার পদমর্যাদার নিম্নে নহেন, মূল্য সংযোজন কর বিভাগের এমন কোন অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা; বা
  • এফবিসিসিআই কর্তৃক  মনোনীত বেসরকারী খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি।

একজন অনাবাসিক ব্যক্তি কিভাবে একজন মূসক এজেন্ট নিয়োগ দেবেন?

অনাবাসিক ব্যক্তি একজন মূসক এজেন্ট নিয়োগ করতে চাইলে অনাবাসিক ব্যক্তি উক্ত মূসক এজেন্টের যাবতীয় ফরম মূসক-৩.৪ এ পূরণ করে অনলআইনে কমিশনার বরাবর প্রদান করবেন। এ প্রক্রিয়াই মূসক এজেন্ট নিয়োগের আবেদন হিসেবে বিবেচিত হবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে মূসক সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনলাইনে এজেন্টকে সম্মতি প্রদানের লক্ষ্যে নোটিশ প্রদান করবেন। মূসক এজেন্ট সম্মতি জ্ঞাপন করলে তাহার নিয়োগ কার্যকর হবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে সংশ্লিষ্ট কমিশনার পুরো প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র অবহিত হবেন।

একজন মূসক এজেন্টের দায়িত্ব কি?

একজন মূসক এজেন্ট অনাবাসিক ব্যক্তির পক্ষে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর অধীন  

  • নিবন্ধন
  • দাখিলপত্র প্রদান
  • কর পরিশোধ
  • আমদানি রপ্তানি
  • নিরীক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ মূসক সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করবেন

রিভার্স চার্জ কী ? এটি কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়?

রিভার্স চার্জ আমদানি স্তরে সেবাগ্রহীতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমদানিকৃত সেবার ক্ষেত্রে সেবা গ্রহীতার নিকট হতে কর আদায়কে রিভার্স চার্জ বলা হয়। 
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, ‘ক’ কোম্পানি তাদের পণ্য ভারতে বাজারজাত করতে চায়। এক্ষেত্রে ‘ক’ কোম্পানি বাংলাদেশের বাইরে অন্য কোন দেশে তাদের পণ্যের প্রসার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ঐ দেশের কনসালটেন্ট নিয়োগ করলে ঐ কনসালটেন্ট ‘ক’ কোম্পানির পণ্যের প্রসার সম্ভাব্যতা প্রসঙ্গে যে পরামর্শ প্রদান কররে তা ‘ক’ কোম্পানির জন্য সেবা আমদানি। পরামর্শ বা, সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে  ‘ক’ কোম্পানি একইসাথে সেবার আমদানিকারক এবং গ্রহীতা। ‘ক’ কোম্পানি আমদানিকৃত এ ধরণের পরামর্শ বা, সেবা কারো কাছে হস্তান্তর/ বিক্রয় বা, সরবরাহও করবেন না। তারা এ ধরণের পরামর্শ শুধুমাত্র নিজেদের ব্যবসা বিদেশের  বাজারে প্রসারের জন্য ব্যবহার করবেন। 
‘ক’ কোম্পানি পরামর্শ বাবদ যে সেবাটি আমদানি করবে সেটি নিজস্ব চুক্তির মাধ্যমে সম্পাদিত হবে এবং পরামর্শের বিপরীতে পরামর্শককে ব্যাংকিং চ্যানেলে বা, নির্ধারিত উপায়ে বিল পরিশোধ করবে। এক্ষেত্রে আমদানিকারক ও সেবা গ্রহীতা হিসেবে ‘ক’ কোম্পানি সমুদয় বিলের উপরে মূল্য সংযোজন কর প্রদান করবে।

শূন্যহার বিশিষ্ট সরবরাহ কি?

নিম্ন বর্ণিত সরবারহসমূহ শূন্যহার বিশিষ্ট সরবরাহ হবে:

  • বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত স্থাবর সম্পত্তির সরবারহ
  • রপ্তানির নিমিত্তে পণ্যের সরবরাহ
  • বাংলাদেশের বাহিরে প্রদত্ত সেবার সরবরাহ
  • অস্থায়ীভাবে আমদানিকৃত পণ্য (উদ্দেশ্য সম্পন্ন হলে পণ্যটি ফেরত পাঠাতে হবে)
  • আর্ন্তজাতিক পরিবহনে সরবারহকৃত সেবা

কোন কোন সেবার সরবরাহ শূন্য হার বিশিষ্ট?

নিম্ন বর্ণিত সেবার সরবরাহ শূন্য হার বিশিষ্ট হবে:

  • বাংলাদেশের বাহিরে প্রদত্ত সেবার সরবরাহ
  • আন্তর্জাতিক পরিবহনে সরবারহকৃত সেবা
  • অস্থায়ীভাবে আমদানিকৃত পণ্যের মেরামত, সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিবর্তন ইত্যাদি কাজে প্রদত্ত সেবা
  • মেরামত বা প্রতিস্থাপনের ওয়ারেন্টিযুক্ত পণ্যের অনুকূরে প্রদত্ত সেবা সরবারহ
  • (কোন ব্যক্তি ওয়ারেন্টিযুক্ত কোনো পণ্য আমদানি করলে, ওয়ারেন্টি সময়ের মধ্যে কোন মেরামত বা প্রতিস্থাপনের উদ্দেশ্যে রপ্তানিকারক দেশে প্রেরণ করা হরে এ সংক্রান্ত সকল সেবা শূন্যহার বিশিষ্ট হবে)

কোন কোন সরবরাহ অব্যাহতিপ্রাপ্ত?

নিম্নে বর্ণিত সরবরাহসমূহ মূসক অব্যাহতিপ্রাপ্য হবে:

  • প্রথম তফসিলে উল্লিখিত কোন সরবরাহ বা আমদানি এবং
  • অব্যাহতি প্রাপ্ত সরবরাহ গ্রহণের অধিকার বা ভবিষ্য ক্রয় বা বিক্রয়ের অধিকার সংক্রান্ত সরবরাহ

অর্থাৎ প্রথম তফসিলে উল্লেখিত পণ্য বা সেবার সরবারহ অব্যাহতি প্রাপ্ত হবে। প্রথম তফসিলে মৌলিক চাহিদা
(খাদ্য, ঔষধ, শিক্ষা ইত্যাদি), কৃষি, স্থাবর সম্পত্তি, সংস্কৃতি ইত্যাদি সংক্রান্ত অব্যাহতির তালিকা দেওয়া আছে।

অধ্যায় ৪

কর আদায়

আমদানির উপর মূসক প্রযোজ্য কি?

প্রথম তফসিলে উল্লেখিত পণ্য বা সেবার আমদানি ব্যতিত সকল আমদানির ওপর মূসক প্রযোজ্য। প্রথম তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত মৌলিক খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, নির্ধারিত শিক্ষা সংক্রান্ত পণ্য বা সেবার আমদানি মূসক অব্যাহতি প্রাপ্ত।
পণ্য বা সেবা আমদানির উপর (প্রথম তফসিলে উল্লেখিত পণ্য বা সেবা ব্যতীত) আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য হোক বা না হোক মূসক প্রযোজ্য হবে।

আমদানিতে মূসক আরোপযোগ্য মূল্য ও কর কিভাবে নির্ধারণ করতে হয়?

আমদানি শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্যের সাথে সকল কর যোগ করে (মূসক এবং আগাম আয়কর ব্যতীত) মূসক আরোপযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। 
আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ব্যতীত অন্য কোন কর আরোপিত না থাকলে আমদানি শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্যই হবে ঐ পণ্য বা সেবার মূসক আরোপযোগ্য মূল্য। 
মূসক আরোপযোগ্য মূল্যের ওপর সরাসরি ১৫% গুন করে আমদানির ক্ষেত্রে মূসক নিরূপণ করতে হবে। 

  • আমদানি স্তরে আমদানি শুল্কের পাশাপাশি আমদানির প্রকৃতি অনুযায়ী ক্ষেত্রবিশেষ সম্পূরক শুল্ক, রেগুলেটরী ডিউটি ইত্যাদি প্রযোজ্য হয়।

আমদানি স্তরে মূসক নিরূপণ পদ্ধতি:

  • মূসক আরোপযোগ্য মূল্য = সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + সম্পূরক শুল্ক (সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য = শুল্কায়নযোগ্য মূল্য  + আমদানি শুল্ক + রেগুলেটরি ডিউটি + অন্যান্য শুল্ক)
  • আগাম কর আরোপযোগ্য মূল্য = মূসক আরোপযোগ্য মূল্য

কোনো পণ্যের আমদানির ওপর ২৫% আমদানি শুল্ক (CD), ৩% রেগুলেটরি ডিউটি (RD), ২০% সম্পূরক শুল্ক (SD), ১৫% মূসক (VAT), ৩% আগাম কর (AT), ৫% আগাম আয়কর (AIT) আরোপ করেছে। আমদানি পর্যায়ে পণ্যচালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য (AV) ৫০০০০.০০ টাকা। আমদানি পর্যায়ে কোন করের জন্য ভিত্তিমূল্য এবং প্রযোজ্য শুল্ক-করের পরিমাণ নির্ণয় করা যাক।

সমাধান:

কর ভিত্তিমূল্যের সূত্র ভিত্তিমূল্য হার শুল্ক-কর
আমদানি শুল্ক AV ৫০,০০০.০০ ২৫% ১২,৫০০.০০
রেগুলেটরি ডিউটি AV ৫০,০০০.০০ ৩% ১,৫০০.০০
সম্পূরক শুল্ক AV+CD+RD ৬৪,০০০.০০ ২০% ১২,৮০০.০০
মূসক AV+CD+SD+RD ৭৬,৮০০.০০ ১৫% ১১,৫২০.০০
আগাম কর AV+CD+SD+RD ৭৬,৮০০.০০ ৩% ২,৩০৪.০০
আগাম আয়কর AV ৫০,০০০.০০ ৫% ২,৫০০.০০
মোট শুল্ক-কর ৪০,৬২৪.০০

আগাম কর কি? আগাম করের হার কত? আগাম কর রেয়াতযোগ্য কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পুরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৩০ অনুযায়ী নিবন্ধনযোগ্য বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে আমদানিকৃত পন্যের ওপর আগাম যে মূসক বা টার্নওভার কর প্রদান করতে হবে তাকে আগাম কর বলা হয়।

করযোগ্য আমদানি মূল্যের সাথে ৩ (তিন) শতাংশ হারে আগাম কর প্রদেয় হবে।

আগাম কর উপকরণ কর হিসেবে রেয়াতযোগ্য নয় তবে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট করমেয়াদে দাখিলপ্রত্র  হ্রাসকারী সমন্বয় হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন।

ধরা যাক, কোন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি আমদানিকালে অন্যান্য করের সাথে ২৫০০০/- আগাম কর পরিশোধ করেছেন। তাহলে ঐ ব্যক্তি ঐ করমেয়াদে বা তৎপরবর্তী দুই করমেয়াদের মধ্যে প্রদেয় কর হতে উক্ত পঁচিশ হাজার টাকা হ্রাসকারী সমন্বয় হিসেবে বিয়োগ করবেন।

অনিবন্ধিত আমদানিকারকের পরিশোধিত আগামকর কিভাবে ফেরত প্রদান করা হবে?

অনিবন্ধিত আমানিকারক আমদানিকৃত পণ্যের সর্বশেষ ভোক্তা হলে পরিশোধিত আগামকর ফেরত পাওয়ার যোগ্য হবেন। 
আমদানিকারকে আগাম কর পরিশোধের ৬০ দিনের মধ্যে বা ফেরত পাওয়ার জন্য ফরম মূসক-৪.১ এ নিকটবর্তী যেকোনো কমিশনারের নিকট আবেদন করবেন। আবেদন যথাযথ হলে কমিশনার ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত প্রদান করে ফেরতের অর্থ আবেদনকারীকে চেকে প্রদান অথবা, তার ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের ব্যবস্থা করবেন।

সরবরাহের মূল্য কিভাবে নির্ধারণ করতে হবে?

সরবারহের প্রকৃত মূল্যই হবে মূসক হিসাবের জন্য ভিত্তি মূল্য। আইনের ধারা ৩২(১) এর বিধান অনুযায়ী-

  • সরবারহ মূল্য হবে করযোগ্য সরবরাহের পণ হইতে উক্ত পণের কর ভগ্নাংশের সমপরিমাণ অর্থ বিয়োগ করে যে মূল্য পাওয়া যাবে

- আমদানিকৃত সেবার ক্ষেত্রে সরবারহ মূল্য হবে করযোগ্য সরবরাহ মূল্য 
- অন্যান্য ক্ষেত্রে সরবারহ মূল্য হবে ন্যায্য বাজার মূল্য হতে কর ভগ্নাংশ বিয়োগ করে প্রাপ্ত মূল্য

  • সকল মূল্য হবে মূসকসহ (VAT Inclusive)

 - কর-ভগ্নাংশ দিয়ে গুণন করে মূসকের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে
ধরা যাক একটি রেস্তোঁরার ব্যবসায়ী খাবারের মূল্য ৩০০ টাকা। 
সে ক্ষেত্রে মূসকের পরিমাণ হবে: ৩০০* কর-ভগ্নাংশ = ৩০০*১৫/১১৫ = ৩৯.১৩ টাকা।
- সরবারহের মূল্য হবে ৩০০- ৩৯.১৩= ২৬০.৮৭ টাকা

সরবরাহরে কোন সময়ে কর পরিশোধ করতে হয়?

করযোগ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত যে কোন কার্যাবলী সংঘটিত হলেই মূসক প্রদেয় হবে-

  • যখন সরবরাহ প্রদান করা হয়
  • যখন চালান পত্র ইস্যু করা হবে 
  • যখন পণ্যের আংশিক বা সমুদয় গ্রহণ করা হবে

আনুক্রমিক বা পর্যাবৃত্ত সরবারহের ক্ষেত্রে-

  • প্রত্যেকটির বিপরীতে পৃথক চালানপত্র ইস্যু করা হয়
  • প্রত্যেকটির বিপরীতে পণ্যের আংশিক বা সমুদয় গ্রহণ করা হবে
  • মূল্য প্রদেয় হয়
  • যখন প্রদেয়র পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যায়

কখন সরকারী ট্রেজারীতে কর পরিশোধ দিতে হবে?

প্রতিটি করের সময় পরের মাসের ১৫ দিনের মধ্যে কর পরিশোধ করতে হবে।

আনুক্রমিক বা পর্যাবৃত্ত সরবারহ কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ২(১০) অনুযায়ী আনুক্রমিক বা পর্যাবৃত্ত সরবারহ হলো:

  • কোন চুক্তির অধীন আনুক্রমিক বা পর্যাবৃত্তভাবে অর্থ পরিশোধের শর্তাধীনে প্রদত্ত কোন সরবরাহ
  • কোন লিজ, হায়ার অব লাইসেন্স (ফাইন্যান্স লিজসহ) এর অধীন প্রদত্ত কোন সরবরাহ
  • নির্মাণ বা প্রকৌশলগত কার্যক্রম, ভবন পুনর্গঠন বা বর্ধিতকরণের কাজে প্রত্যক্ষভাবে প্রদত্ত কোন সরবরাহ

একক ও বহুবিধ সরবরাহে কিভাবে কর আরোপিত হয়?

একক ও বহুবিধ সরবরাহের ক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত উপায়ে কর আরোপিত হবে: 

  • প্রতিটি সরবরাহ স্বতন্ত্র এবং স্বাধীন বলে গণ্য হবে
  • একক সরবরাহের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সরবরাহকে কৃত্রিমভাবে বিভাজন করা যাবে না
  • সরবরাহটি এক বা একাধিক উপাদান সমন্বয়ে গঠিত হলে তা একক সরবরাহ হবে, এবং অন্যান্য উপাদান উক্ত একক সরবরাহের অংশ হিসাবে গণ্য হবে
  • কোন সরবরাহকে মূল সরবরাহের সহায়ক হিসাবে গণ্য করতে হবে

টাকার বদলে উৎপাদিত পণ্য বা সরবরাহযোগ্য সেবার মাধ্যমে কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করলে তাতে মূসকের প্রভাব হবে…

টাকার বদলে উৎপাদিত পণ্য বা সরবরাহযোগ্য সেবার মাধ্যমে কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করলে উহা সরবরাহকারীর ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে বলে গন্য হবে এবং উক্ত পণ্য বা সেবার ন্যায্য বাজার মূল্যের ভিত্তিতে মূসক প্রযোজ্য হবে।

কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে মূসক কিভাবে পরিশোধ করতে হবে?

কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে কর মেয়াদে যে পরিমাণ কিস্তির অর্থ পরিশোধ করা হবে সে পরিমাণ অর্থের উপর কর হবে। সে পরিমাণ অর্থের ওপর সমুদয় মূসকের আনুপাতিক হারে মূসক প্রযোজ্য হবে।
ধরা যাক, কোন একটি পন্যের সরবরাহ মূল্য ৪০,০০০/-  টাকা। ক্রেতা শর্তানুযায়ী ৪ কিস্তিতে এক চতুর্থাংশ হারে মূল্য পরিশোধ করবেন। এক্ষেত্রে ক্রেতা ১ম কিস্তিতে এক চতুর্থাংশ হারে ১০,০০০/- পরিশোধ করলে বিক্রেতা ঐ কিস্তির জন্য  ১০,০০০/- এর ওপর মূসক প্রদান করবেন।

টেলিযোগাযোগ মধ্যস্বত্ব ভোগী কে?

কোন টেলিযোগাযোগ দ্রব্য বা সেবা সরবরাহকারী কর্তৃক কোন আগাম মূল্য পরিশোধিত টেলিযোগাযোগ দ্রব্য মূল্য ছাড়সহ যে সকল পরিবেশক, প্রতিনিধি বা ব্যক্তির নিকট সরবরাহ করা হয় তাকে টেলিযোগাযোগ মধ্যস্বত্ব ভোগী বলে।

আগাম মূল্য পরিশোধিত টেলিযোগাযোগ দ্রব্য কি?

যে ক্ষেত্রে কোন টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী তাহার প্রতিনিধি মাধ্যমে আগাম মূল্য পরিশোধিত টেলিযোগাযোগ দ্রব্য সরবরাহ করেন, তাই আগাম মূল্য পরিশোধিত টেলিযোগাযোগ দ্রব্য।

 

টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী কে?

টেলিযোগাযোগ সেবার সরবরাহকারী হলো মূল টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী। টেলিযোগাযোগ মধ্যস্বত্বভোগী এর অন্তর্ভূক্ত হবে না।

লটারী বা লাকি ড্র কি করযোগ্য?

অনুযায়ী লটারী, লাকি ড্র,  হাউজি,  র‌্যাফেল ড্র বা অনুরূপ উদ্যোগ পরিচালনা করযোগ্য। কোন ব্যক্তি লটারী বা লাকি ড্র পরিচালনার উদ্দেশ্যে পরিবেশক বা প্রতিনিধির নিকট মূল্যছাড় প্রদান করে বিক্রীত টিকিটের ক্ষেত্রে উক্ত ছাড় হিসেবে গণ্য না করে উহার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে, যা করযোগ্য। অর্থাৎ বিক্রিত টিকেটের চূড়ান্ত পণ হবে টিকেটের মূল্য।

কোন সরবরাহ বাতিল হলে কি ঘটবে?

কোন সরবরাহ বাতিল হলে  সরবরাহকারীর পূর্বে গৃহীত পণ ফেরত প্রদান কালে বাতিল করার কারণে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে পণের যে অংশ  রেখে দেওয়া হয় তার উপর প্রযোজ্য কর সমন্বয় করা হবে এবং সরবরাহের লেনদেন বাতিল হলে এবং উক্ত বাতিলের সরবরাহকারী গ্রহীতার নিকট হতে কোন অর্থ আদায় করলে, তাহলে যেই কর মেয়াদে তা আদায় করা হয় সেই কর মেয়াদে উক্ত আদায়কৃত অর্থ সরবরাহের পণ হিসাবে গণ্য হবে এবং কর প্রদেয় হইবে।

বিক্রয় যন্ত্র হতে পণ্য বিক্রয় এর সময় কিভাবে কর আদায় হবে?

যেক্ষেত্রে বিক্রয়যন্ত্র, মিটার বা অনুরূপ কোন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে (পরিশোধ টেলিফোন ব্যতীত) পণ্যের করযোগ্য সরবরাহ প্রদান করা হয়, সেক্ষেত্রে সরবরাহকারী বা তার মুদ্রা, নোট ও টোকেনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, সরবরাহকারী তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিক্রয়যন্ত্র, মিটার বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র হতে উক্ত মুদ্রা, নোট বা টোকেন বাহির করার সময় কর প্রদান করতে হবে;
যেক্ষেত্রে করযোগ্য সরবরাহ বিক্রয়যন্ত্র, মিটার বা অন্য কোন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে প্রদান করা হয় এবং উক্ত সরবরাহের জন্য নির্ধারিত উপায়ে অর্থ প্রদান করা হয়, সেইক্ষেত্রে সরবরাহকারী ব্যক্তি কর্তৃক সরবরাহকারীকে অর্থ প্রদান কালে কর প্রদান করতে হবে।

অধ্যায় ৫

নীট কর নিরূপণ

আমরা কিভাবে নীট কর হিসাব করবো?

আমরা নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতিতে নীট কর হিসাব করবো।

  • কর মেয়াদে প্রদেয় সকল উৎপাদ কর ও সম্পূরক শুল্ক ও সকল বৃদ্ধিকারী সমন্বয় যোগ করে এবং যোগফল হতে
  • কর মেয়াদে সকল উপকরণ কর ও সকল হ্রাসকারী সমন্বয় বিয়োগ করে

অর্থাৎ নীট কর = উৎপাদ কর + বৃদ্ধিকারী সমন্বয় - উপকরণ কর - হ্রাসকারী সমন্বয়।

ধরা যাক, উৎপাদ কর = ২০০০/-
উপকরণ কর = ১৪০০/-
বৃদ্ধিকারী সমন্বয় = ৩০০/-
হ্রাসকারী সমন্বয় = ২০০/-
অতএব, নীট কর = (২০০০ - ১৪০০ + ৩০০ - ২০০)/-

= ৭০০/-

দাখিলপত্র জমার পূর্বে নীট কর ট্রেজারিতে জমা প্রদান কি বাধ্যতামূলক?

দাখিলপত্র জমার পূর্বে হিসাবকৃত নীট কর ট্রেজারিতে জমা প্রদান করা বাধ্যতামূলক। 
তবে উল্লেখ্য যে, সংশ্লিষ্ট করমেয়াদের যখনই কর প্রদেয় হোক বা কেন ঐ করের টাকা করদাতা হাতে রেখে দাখিলপত্র জমা প্রদানের পূর্বে যে কোন সময় ট্রেজারিতে জমা দিতে পারবেন। উল্লেখ্য, নীট করের পরিমাণ ধনাত্মক হলে এবং কর পরিশোধ না করে দাখিলপত্র জমা করলে সংশ্লিষ্ট করমেয়াদের পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের পর হতে সুদ হবে এবং আইন ভঙ্গ করার কারনে অর্থদন্ড ও হবে।

উপকরণ কর রেয়াত বলতে কি বুঝায়?

নিবন্ধিত ব্যক্তি কর্তৃক করযোগ্য পণ্য বা সেবা ক্রয় ক্রয় বা করযোগ্য আমদানির উপর প্রদানকৃত মূল্য সংযোজন কর উক্ত পণ্য বা সেবা সরবরাহকালে আরোপিত মূল্য সংযোজন করের বিপরীতে গ্রহণ করাকে উপকরণ কর রেয়াত বলে।
 এক কথায়, সরবরাহের সময় ক্রেতার নিকট হতে আদায়কৃত মূসক হতে করদাতার ক্রয়ের সময় পরিশোধিত মূসক বাদ দেয়া বা সমন্বয় করাকেই রেয়াত বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, কোন করদাতা ৩০০ টাকার সরবরাহ প্রদান করে ৩৯.১৩ টাকা মূসক আদায় করেছেন। উক্ত সরবরাহের জন্য তিনি ২০০ টাকার উপকরণ ক্রয় করেছেন। যেখানে তিনি ২৬.০৭ টাকা মূসক পরিশোধ করেছেন। তিনি বিক্রয়স্তরে আদায়কৃত কর (৩৯.১৩ টাকা) হতে ক্রয়স্তরে পরিশোধিত উপকরণ কর (২৬.০৭ টাকা) সমন্বয় করে অবশিষ্ট ১৩.০৬ টাকা (৩৯.১৩-২৬.০৭) সরকারি কোষাগারে জমা করবেন।

রেয়াত গ্রহনের শর্ত গুলো কি কি?

রেয়াত গ্রহণের শর্তগুলো হলো: 

  • সরবরাহ কার্যক্রমসমূহ অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হতে হবে
  • সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যক্তি সরবরাহের পণ পরিশোধ করবেন বা পরিশোধের জন্য দায়ী হবেন (অর্থাৎ বাকীতে ক্রয়ের ক্ষেত্রে চালানে বা গ্রহণযোগ্য কোনো চুক্তিতে ক্রেতার নিকট পাওনা অর্থের বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে)
  • করযোগ্য সরবরাহের মূল্য ১,০০,০০০.০০ টাকা অতিক্রম করলে সরবরাহের বিপরীতে আংশিক বা সমূদয় পরিমাণ ব্যাংকিং মাধ্যমে পরিশোধিত  হতে হবে
  • সরবরাহের ক্ষেত্রে বৈধ কর চালানপত্র (মূসক-৬.৩) এবং আমদানির ক্ষেত্রে রিলিজ অর্ডারসহ বিল অব এন্ট্রি থাকতে হবে।

কোন সময়ের মধ্যে রেয়াত গ্রহণ করতে হবে?

যে কর মেয়াদে মূসক পরিশোধ করা হয়, সেই কর মেয়াদে বা তৎপরবর্তী ২ টি কর মেয়াদের মধ্যে উপকরণ রেয়াত গ্রহণ করতে হবে। 

রেয়াত গ্রহণের জন্য কোন কোন দলিলাদির প্রয়োজন?

রেয়াত গ্রহণের জন্য একমাত্র প্রয়োজনীয়  দলিল কর চালানপত্র। তবে আমদানির ক্ষেত্রে বিল অব এন্ট্রি এবং উৎসে করের ক্ষেত্রে সমন্বিত কর চালানপত্র এবং উৎসে কর সনদপত্র-ই কর চালানপত্র হিসেবে বিবেচিত হবে।

আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়ার কোন সুযোগ আছে কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৭ অনুযায়ী আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়ার সুযোগ আছে। করযোগ্য সরবারহের আংশিক পণ পরিশোধ করা হলে বা অর্জিত উপকরণ দিয়ে তৈরি পণ্যের সম্পূর্ণ সরবারহ করযোগ্য না হলে, এরূপ পরিস্থিতিতে আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়া যাবে।

আংশিক উপকরণ কর রেয়াত বলতে কি বুঝায়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৭ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কোন কর মেয়াদে আমদানি বা অর্জনের বিপরীতে পূর্ণ উপকরণ কর রেয়াত প্রাপ্য না হলে আইন অনুযায়ী উপকরণ করের যে অংশ রেয়াত হিসাবে প্রাপ্য হবেন ঐ অংশকে আংশিক উপকরণ কর রেয়াত বলা হয়। করযোগ্য সরবারহের সম্পূর্ণ পণ পরিশোধ না করে আংশিক পণ পরিশোধ করা হলে বা অর্জিত উপকরণ দিয়ে তৈরি পণ্যের সম্পূর্ণ সরবারহ করযোগ্য না হলে আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়া যাবে।আমদানি বা অর্জনকৃত কাঁচামাল ব্যবহার করে অব্যাহতি প্রাপ্ত পণ্য এবং করযোগ্য পণ্য উভয়ই উৎপাদন করলে  আংশিক উপকরণ কর রেয়াত প্রযোজ্য হবে।

 

কোন কোন পরিস্থিতিতে আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়া যায়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৭ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কোন কর মেয়াদে আমদানি বা অর্জনে বিপরীতে পূর্ণ উপকরণ কর রেয়াত প্রাপ্য না হলে আইন ও বিধি মোতাবেক প্রযোজ্য অংশের  উপকরণ কর রেয়াত পাওয়া যাবে। নিম্ন বর্ণিত পরিস্থিতে আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়া যাবে:

  • করযোগ্য সরবারহের সম্পূর্ণ পণ পরিশোধ না করে আংশিক পণ পরিশোধ করা হলে (যতটুকু পণ পরিশোধ করা হয়েছে আনুপাতিক হারে ততটুকু অংশের উপর রেয়াত পাওযা যাবে)
  • অর্জিত উপকরণ দিয়ে তৈরি পণ্যের সম্পূর্ণ সরবারহ করযোগ্য না হলে আংশিক উপকরণ কর রেয়াত পাওয়া যাবে

ধরা যাক, একটি প্রতিষ্ঠানের কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ের করযোগ্য ও অব্যাহতি প্রাপ্ত সরবারহের সর্বমোট মূল্য ৯০০০/- ( করযোগ্য সরবারহ ৬০০০/-, এবং অব্যাহতিপ্রাপ্ত সববারহ ৩০০০/-)। উক্ত সরবারহকৃত পণ্য উৎপাদনে ৬৩০০ টাকার কাঁচামাল ব্যবহৃত হলে রেয়াতযোগ্য করের পরিমাণ:

সর্বমোট উপকরণ কর = ৬৩০০ x ১৫/১১৫

= ৮২১.৭৪

সর্বমোট করযোগ্য সরবারহ = ৬০০০/-

সর্বমোট সরবারহ = ৯০০০/-

অতএব, আংশিক উপকরণ কর রেয়াত

          = সর্বমোট উপকরণ কর X সর্বমোট করযোগ্য সরবারহ/ সর্বমোট সরবারহ

= ৮২১.৭৪ X ৬০০০/৯০০০

= ৮২১.৭৪ X ০.৬৬৬৭

= ৫৪৭.৮৫ /-

সমন্বয় কি?

সমন্বয় একটি প্রক্রিয়া যার ফলে করদাতার করদায়িতা  হ্রাস বা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সমন্বয় দুই প্রকার, যথা: বৃদ্ধিকারী সমন্বয় ও  হ্রাসকারী সমন্বয়।  বৃদ্ধিকারী সমন্বয়ের ফলে করদাতার করদায়িতা বৃদ্ধি পায় এবং হ্রাসকারী সমন্বয়ের ফলে করদাতার করদায়িতা হ্রাস পায়।

 

সমন্বয় ঘটনা কোন গুলো?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৮ অনুযায়ী সমন্বয় ঘটনা হলো:

  • উৎসে কর্তিত করের বৃদ্ধিকারী বা  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • বাৎসরিক পুনঃহিসাব প্রণয়নের ফলে প্রযোজ্য বৃদ্ধিকারী বা  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ না করিবার কারণে বৃদ্ধিকারী  সমন্বয়
  • ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পণ্যের ক্ষেত্রে, বৃদ্ধিকারী সমন্বয়
  • নিবন্ধিত হওয়ার ক্ষেত্রে, উপকরণ কর ও মূসক বৃদ্ধিকারী  সমন্বয়
  • নিবন্ধন বাতিলকরণের ক্ষেত্রে, বৃদ্ধিকারী সমন্বয়
  • সুদ, জরিমানা, অর্থদ-, ফি, ইত্যাদি পরিশোধ সংক্রান্ত বৃদ্ধিকারী সমন্বয়
  • পুনঃবিক্রয়ের নিমিত্ত ক্রীত সেকেন্ড-হ্যান্ড পণ্যের ক্ষেত্রে,  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • বীমা সংক্রান্ত  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • লটারী, লাকী ড্র, র‌্যাফেল ড্র, হাউজি এবং অনুরূপ কার্যক্রমের ক্ষেত্রে,  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • করহার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, বৃদ্ধিকারী বা  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • পূর্ববর্তী কর মেয়াদ হইতে ঋণাত্মক জের টানার নিমিত্ত  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • পূর্ববর্তী কর মেয়াদে অতিরিক্ত পরিশোধিত মূসক  হ্রাসকারী সমন্বয়
  • নির্ধারিত অন্য কোন বৃদ্ধিকারী বা  হ্রাসকারী সমন্বয়

মূসক ব্যবস্থায় কত ধরনের সমন্বয় আছে?

নতুন মূসক ব্যবস্থায় দুই ধরনের সমন্বয় আছে। যেমনঃ  

  • বৃদ্ধিকারী সমন্বয়
  • হ্রাসকারী সমন্বয়

বৃদ্ধিকারী সমন্বয় ঘঠনা ও হ্রাসকারী সমন্বয় ঘটনার মধ্যে পার্থক্য কি?

বৃদ্ধিকারী সমন্বয়ের ফলে করদাতার করদায়িতা বৃদ্ধি পায় এবং হ্রাসকারী সমন্বয়ের ফলে করদাতার করদায়িতা হ্রাস পায়।
বৃদ্ধিকারী সমন্বয়ের ফলে ব্যক্তি তার দায়দেনা Output Tax এর যোগ করে সরকারি কোষাগারে জমা করবেন। হ্রাসকারী সমন্বয়ের ফলে ব্যক্তি তার পাওনা Input tax এর সাথে যোগ করে হ্রাসকারী সমন্বয় হিসেবে কর সুবিধা গ্রহণ করবেন।

উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা কারা?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূকর শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ২(২১) অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা হলো:

  • কোন সরকারি সত্তা, অর্থাৎ

(ক) সরকার বা তার কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, বা দপ্তর; 
(খ) আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত কোন সংস্থা;
(গ) রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোন প্রতিষ্ঠান; বা
(ঘ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, পরিষদ বা অনুরূপ কোন সংস্থা;

  • এনজিও বিষয়ক ব্যুরো বা সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান
  • কোন ব্যাংক,বীমা কোম্পানী বা অনুরুপ আর্থিক প্রতিনিধি
  • কোন মাধ্যমিকোত্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
  • কোন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
  • বৃহৎ করদাতা ইউনিট (মূল্য সংযোজন কর) এর আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠান

সমন্বয়ের জন্য কোন ধরণের দলিলাদির প্রয়োজন হবে?

সমন্বয়ের জন্য আলাদাভাবে কোন দলিলাদির প্রযোজন নাই। দাখিলপত্রে মাধ্যমেই সমন্বয়ের আবেদন করা যাবে। সেহুতু সংশ্লিষ্ট করমেয়াদের দাখিলপত্রের সাথে রেয়াতের সমর্থনে প্রদানকৃত দলিলাদি যেমন:
    আমদানির ক্ষেত্রে বিল অব এন্ট্রি।
    সরবরাহের ক্ষেত্রে কর চালানপত্র। 
    উৎসে করের ক্ষেত্রে সমন্বিত কর চালানপত্র উৎসে কর সনদপত্র এবং কর চালানপত্র; 
    ডেবিট নোট; ও
    ক্রেডিট নোট 

উৎসে কর কর্তন কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক  শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী উৎসে কর্তন বলতে উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট চুক্তি, টেন্ডার বা কার্যাদেশের আওতায় ১০ (দশ) হাজার টাকার অধিক মূল্যের সরবরাহ প্রদান করলে বিল পরিশোধের সময় প্রযোজ্য করের ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ কর্তন করে  উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা হবে- এ প্রক্রিয়াকে উৎসে কর কর্তন বলে।

উৎসে কর কর্তন কি একটি সমন্বয় ঘটনা?

হ্যাঁ, উৎসে কর কর্তন কি একটি সমন্বয় ঘটনা। উৎসে কর কর্তন হ্রাসকারী এবং বৃদ্ধিকারী দু’ভাবেই হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, ‘ক’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান ‘খ’ লিমিটেড (আইনের ধারা ২(২১) অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠান)  নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে ১,০০,০০০/- মূল্যের সরবারহ প্রদান করে।
 এক্ষেত্রে, ‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান মূল্য পরিশোধকালে প্রযোজ্য মূসকের ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ উৎসে কর্তন করবে।‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান ১,০০,০০০/- এর উপর প্রযোজ্য মূসক ১৩০৪৩.৪৮/- এর এক তৃতীয়াংশ     অর্থাৎ ৪৩৪৭.৮২/- উৎসে কর্তন করবেন। যেহুতু আইনে ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ উৎসে কর্তনের কথা বলা হয়েছে, সেহুতু ‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান চাইলে ৪৩৪৭.৮২/- টাকার নিম্নে যেকোনো পরিমাণ অর্থ উৎসে কর্তন করতে পারবে। 
যাই হোক, ‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ৪৩৪৭.৮২/- টাকা উৎসে কর্তন করা হলে, প্রতিষ্ঠানটি করমেয়াদ শেষে তার প্রদেয় করের সাথে ৪৩৪৭.৮২/- টাকা বৃদ্ধিকারী সমন্বয় হিসেবে যোগ করবেন  এবং ‘ক’ প্রতিষ্ঠান প্রদেয় করের সাথে ৪৩৪৭.৮২/- টাকা হ্রাসকারী সমন্বয় হিসেবে বিয়োগ করবেন।

ক্রেতা ও সরবরাহকারীর ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের জন্য কী ধরনের সমন্বয় সাধন করতে হয়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৮ অনুযায়ী উৎসে কর কর্তন হ্রাসকারী এবং বৃদ্ধিকারী সমন্বয়। ক্রেতা সরবারহ গ্রহণকালে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হতে উৎসে কর্তন করে রাখবেন বিধায় ক্রেতার ক্ষেত্রে উৎসে কর্তন বৃদ্ধিকারী সমন্বয় অপর সরবরাহকারীর ক্ষেত্রে উৎসে কর্তন হ্রাসকারী সমন্বয়। 
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, ‘ক’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান ‘খ’ লিমিটেড (আইনের ধারা ২(২১) অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠান) নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে ১,০০,০০০/- মূল্যের সরবারহ প্রদান করে।
এক্ষেত্রে, ‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান মূল্য পরিশোধকালে প্রযোজ্য মূসকের ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ উৎসে কর্তন করবে।‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান ১,০০,০০০/- এর উপর প্রযোজ্য মূসক ১৩০৪৩.৪৮/- এর এক তৃতীয়াংশ  অর্থাৎ ৪৩৪৭.৮২/- উৎসে কর্তন করবেন। যেহুতু আইনে ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ উৎসে কর্তনের কথা বলা হয়েছে, সেহুতু ‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান চাইলে ৪৩৪৭.৮২/- টাকার নিম্নে যেকোনো পরিমাণ অর্থ উৎসে কর্তন করতে পারবে। 
যাই হোক, ‘খ’ লিমিটেড প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ৪৩৪৭.৮২/- টাকা উৎসে কর্তন করা হলে, প্রতিষ্ঠানটি করমেয়াদ শেষে তার প্রদেয় করের সাথে ৪৩৪৭.৮২/- টাকা বৃদ্ধিকারী সমন্বয় হিসেবে যোগ করবেন  এবং ‘ক’ প্রতিষ্ঠান প্রদেয় করের সাথে ৪৩৪৭.৮২/- টাকা হ্রাসকারী সমন্বয় হিসেবে বিয়োগ করবেন।

উৎসে কর কর্তনের বৈশিষ্টগুলো কি কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনের ক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত বিষয়সমূহ অনুসরণীয় হবে:

  • উৎসে কর্তনকারী সত্তা ব্যতীত কোন সরবরাহকারী উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা নিকট সরবরাহ প্রদান করবে
  • চুক্তি, টেন্ডার বা কার্যাদেশের অধীন ১০ হাজার টাকার অধিক মূল্যর সরবরাহ
  • সরবরাহটি অব্যহতি প্রাপ্ত বা শূন্যহার বিশিষ্ট নয় এমন হবে
  • কর্তনকারী কর ভগ্নাংশের এক তৃতীয়াংশ কর্তন করে রাখবেন
  • সরবরাহকারী অনিবন্ধিত হলে এবং সমন্বিত কর চালানপত্র ও উৎসে কর কর্তন সনদপত্র জারি না করলে তার নিকট থেকে সরবরাহ নেয়া যাবে না ।

দুটি উৎসে কর কর্তনকারী সত্তার মধ্যে সম্পন্ন সরবরাহে উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য হবে কি?

না। উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোনো উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য।

একটি একক ক্রয়ের মূল্য ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত হলে তাতে উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য হবে কি?

না, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী উৎসে কর্তনের জন্য সরবরাহটি ১০,০০০ টাকার অধিক মূল্যের হতে হবে।

উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা কিভাবে সমন্বিত কর চালানপত্র এবং উৎসে কর কর্তন সনদ ইস্যু করবেন?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক  শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী উৎসে কর্তন বলতে উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো উৎসে কর কর্তনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট চুক্তি, টেন্ডার বা কার্যাদেশের আওতায় ১০ (দশ) হাজার টাকার অধিক মূল্যের সরবরাহকালে সরবারহকারী ফরম মূসক-৬.৩ চালানপত্র দ্বারা সরবরাহ করবেন। উৎসে কর্তনকারী উৎসে কর্তনের পর ফরম মূসক-৬.৬ এ উৎসে কর কর্তন সনদপত্র ইস্যু করবেন। ফরম মূসক-৬.৬ এ প্রাপ্ত সনদপত্রের ভিত্তিতে সরবরাহকারী একটি হ্রাসকারী সমন্বয় করবেন এবং নিবন্ধিত উৎসে কর্তনকারী একটি বৃদ্ধিকারী সমন্বয় করবেন।

অধ্যায় ৬

হিসাবরক্ষণ

হিসাবরক্ষণের লক্ষ্যে আমাকে কি কি দলিল সংরক্ষণ করতে হবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক বিধিমালা, ২০১৬ অনুযায়ী হিসাবরক্ষণের লক্ষ্যে-

  • ক্রয় হিসাব পুস্তক
  • বিক্রয় হিসাব পুস্তক
  • করচালানপত্র
  • চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের চালানপত্র
  • পণ্য স্থানান্তর চালানপত্র
  • উৎসে কর কর্তন সনদপত্র
  • ক্রেডিট নোট-ডেবিট নোট
  • সমন্বয় সংক্রান্ত দলিলাদি
  • ট্রেজারি চালান
  • দাখিলপত্র; ইত্যাদি সংরক্ষণ করতে হবে।

নতুন মূসক ব্যবস্থা হিসাবরক্ষণের কোন নীতি অনুসরণ করে?

হিসাবরক্ষণের দু’টি পদ্ধতি বা নীতি আছে। যথা: 

  • নগদ ভিত্তিক (Cash based) 
  • বকেয়া ভিত্তিক (Accrual based) 

নগদ ভিত্তিক (Cash based) নীতিতে লেনদেনে কোন বকেয়া হিসাবের সুযোগ নাই। অন্যদিকে বকেয়া ভিত্তিক (Accrual based) হিসাবে লেনদেনে নগদ প্রদান না করেও হিসাবরক্ষণের সুযোগ আছে। ব্যবসায়িক লেনদেনে বকেয়া থাকবেই, তাই সকল ব্যবসায়ে বকেয়া ভিত্তিক (Accrual based) পদ্ধতি বা নীতি অনুসরন করা হয়। আর এ কারণে নতুন মূসক আইনও বকেয়া ভিত্তিক (Accrual based) নীতি অনুসরন করে।

 

আমাকে মূসক সংক্রান্ত দলিলাদি কত দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে?

করদায় নিরূপণের সুবিধার্থে ৫ (পাঁচ) বছর পর্যন্ত মূসক সংক্রান্ত দলিলাদি সংরক্ষণ করতে হবে।

মূসক দপ্তরে নিয়মিত কোন দলিলাদি প্রেরণ করতে হবে কি?

মূসক দপ্তরে করদাতার দাখিলপত্র ব্যতীত আর কোনো দলিলাদি প্রেরণের প্রয়োজন নাই।

আমি কি আমার সকল হিসাব ডিজিটাল পদ্ধতিতে রাখতে পারি? এক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতির পাশাপাশি কাগজে কপিও রাখার…

হ্যাঁ, আমি আমার সকল হিসাব ডিজিটাল পদ্ধতিতে রাখতে পারি। এক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতির পাশাপাশি কাগজে কপি রাখার প্রয়োজন নাই। তবে আমি চাইলে ডিজিটাল পদ্ধতির পাশাপাশি ম্যানুয়ালিও কপি সংরক্ষণ করতে পারবো।

কর চালানপত্র কি?

সরবরাহকারী করযোগ্য সরবরাহের উপর নিদিষ্ট তথ্য সম্বলিত সংখ্যানুক্রমিক দলিলকে কর চালানপত্র বলা হয়। ফরম মূসক-৬.৩ ই কর চালানপত্র হিসেবে বিবেচিত হবে। করচালানপত্রে নিম্নবর্ণিত তথ্যাদি থাকবে:

  • ক্রেতার নাম
  • চালানপত্র নম্বর
  • বিক্রেতার বিআইএন নম্বর
  • ক্রেতার বিআইএন নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  • সরবরাহের বর্ণনা
  • সরবরাহের পরিমাণ
  • মূল্য
  • জড়িত কর

আমি কিভাবে একটি কর চালানপত্র পুরণ করতে পারি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি অনুযায়ী সরবারাহকারী প্রতিটি সরবরাহের বিপরীতে ফরম মূসক-৬.৩ এ করচালান পত্র ইস্যু করবে। নির্ভুল কর চালানপত্র ইস্যুর জন্য কর চালানপত্র পূরণের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।

চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমি কোন ধরনের চালান ব্যবহার করবো?

চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমি ফরম মূসক-৬.৮ ব্যবহার করবো।

কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের এক শাখা হতে অন্য শাখায় পণ্য স্থানান্তরের জন্য কোন চালান ব্যবহার করতে হবে?

কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের এক শাখা হতে অন্য শাখায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট পণ্য স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে ফরম মূসক-৬.৫ ব্যবহার করবো।

সমন্বিত কর চালানপত্র ও উৎসে কর সনদ কি? এটি কিভাবে পূরন করতে হয়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৫৩ অনুযায়ী সরবরাহকারী কর্তৃক উৎসে কর কর্তনকারী সত্তার নিকট সরবরাহের তারিখে বা তৎপূর্বে নির্ধারিত তথ্য সমন্বিত যে চালানপত্র জারি করা হবে তাকে সমন্বিত কর চালান পত্র এবং উৎসে কর সনদ পত্র বলা হবে। ফরম মূসক- ৬.৩ এবং ফরম মূসক-৬.৬ একত্রে “সমন্বিত কর চালানপত্র ও উৎসে কর কর্তন সনদপত্র হিসাবে” বিবেচিত।

For maintaining accounts is it mandatory to use the Format mentioned in the Rules?

No, for maintaining your accounts, it is not mandatory to follow the Format in tact as mentioned in the Rules. You can arrange the format according to your own choice in order to cater to the need of your business concern. In that case one point should be kept in mind that the information which appears in the Rules should also be there in your own format.

নিজস্ব ফরম্যাটে অ্যাকাউন্ট বজায় রাখার জন্য ভ্যাট অফিসের অনুমতি প্রয়োজনীয়তা আছে কি?

না

Is separate accounts are required to be maintained for VAT along with maintaining own account simultaneously…

না। নতুন আইনটি দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট বজায় রাখার কোন সুযোগ নেই। আপনার ব্যবসার উদ্বেগ অ্যাকাউন্টগুলি ভ্যাটের অ্যাকাউন্ট হিসাবে বিবেচনা করা হবে। আপনি শুধুমাত্র এক অ্যাকাউন্ট বজায় রাখতে হবে।

অধ্যায় ৭

সম্পূরক শুল্ক

সম্পূরক শুল্ক কী?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ ধারা ৫৫ অনুযায়ী-

  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য আমদানির উপর
  • বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য সরবরাহের উপর; এবং
  • বাংলাদেশ সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সেবা সরবরাহরে উপর আরোপিত কর-ই সম্পূরক শুল্ক

সাধারণভাবে বিলাসজাত বা নিরুৎসাহিতকরণের জন্য প্রযোজ্য পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য হয়।

কখন সম্পূরক শুল্ক আরোপিত হয়?

সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী-

  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানির সময়; এবং
  • বাংলাদেশে সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সেবা সরবরাহের সময় সম্পূরক শুল্ক আরোপিত হবে।

সস্পূরক শুল্ক কে পরিশোধ করবেন?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী-

  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারক; এবং
  • বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে সেবা সরবরাহকারী সম্পূরক শুল্ক পরিশোধ করবেন।

সম্পূরক শুল্কের জন্য মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ ধারা ৫৭ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত উপায়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপের জন্য মূল্য নির্ধারিত হবে:

  • আমদানির ক্ষেত্রে আমদানির শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্যের সাথে আমদানি শুল্ক এবং রেগুলেটারী ডিউটি (যদি থাকে) যোগ করে

(সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য = শুল্কায়নযোগ্য মূল্য/ আমদানির শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + আমদানি শুল্ক + রেগুলেটরি ডিউটি + অন্যান্য শুল্ক)

কোনো পণ্যের আমদানির ওপর ২৫% আমদানি শুল্ক (CD), ৩% রেগুলেটরি ডিউটি (RD), ২০% সম্পূরক শুল্ক (SD) আরোপ করেছে। আমদানি পর্যায়ে পণ্যচালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য (AV) ৫০০০০.০০ টাকা। আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপের জন্য ভিত্তিমূল্য এবং প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্কের পরিমাণ নির্ণয় করা যাক।

সমাধান:

 

কর ভিত্তিমূল্যের সূত্র ভিত্তিমূল্য হার শুল্ক-কর
আমদানি শুল্ক AV ৫০,০০০.০০ ২৫% ১২,৫০০.০০
রেগুলেটরি ডিউটি AV ৫০,০০০.০০ ৩% ১,৫০০.০০
সম্পূরক শুল্ক AV+CD+RD ৬৪,০০০.০০ ২০% ১২,৮০০.০০
  •  সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সেবার সরবরাহের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক আদায়ের ভিত্তিমূল্য হবে সরবরাহের ন্যায্য বাজার মূল্য

ধরা যাক, কোনো একটি সম্পূরক শুল্ক যুক্ত পণ্যের বাজার মূল্য ৩০০ টাকা। এক্ষেত্রে পণ্য মূল্যের সাথে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অন্তর্ভূক্ত আছে। সম্পূরক শুল্কের হার ১০%।

  • তাহলে, মূসক আরোপযোগ্য মূল্য = সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + সম্পূরক শুল্ক
  • মূসক আরোপযোগ্য মূল্য = (৩০০ - ৩০০* কর-ভগ্নাংশ) টাকা

= (৩০০ - ৩০০*১৫/১১৫) টাকা

= (৩০০ - ৩৯.১৩) টাকা।

= ২৬০.৮৭ টাকা

  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + সম্পূরক শুল্ক = ২৬০.৮৭ টাকা
  • সুতরাং ২৬০.৮৭ টাকা থেকে সম্পূরক শুল্ক বাদ দিয়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য পাওয়া যাবে
  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য = (২৬০.৮৭ - ২৬০.৮৭* কর-ভগ্নাংশ) টাকা

= (২৬০.৮৭  - ২৬০.৮৭*১০/১১০) টাকা

= (২৬০.৮৭  - ২৪.৩৫) টাকা।

= ২৩৬.৫২ টাকা

কোন কোন আমদানি ও সরবরাহের উপর সস্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য? প্রযোজ্য হারসহ সেই তালিকা দিন?

দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত পণ্য ও সেবার আমদানি ও সরবরাহের উপর সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য। প্রযোজ্য হারসহ তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো:

সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্যের তালিকা

হেডিং নম্বর এইচ. এস. কোড পণ্যের বর্ণনা সম্পূরক শুল্কের হার (%) বা পরিমাণ
(১) (২) (৩) (৪)
২১.০৬ ২১০৬.৯০.১০ সুগন্ধি দ্রব্যের মিশ্রণ ব্যতীত কোমল পানীয় প্রস্তুতে ব্যবহৃত সামগ্রী, আয়তন ভিত্তিক এ্যালকোহল ক্ষমতা ০.৫% এর উর্ধ্বে ৩৫০
২২.০২ ২২০২.১০.০০ কোমল পানীয় ১০০
২২০২.৯০.০০ নন-এ্যালকোহলিক বিয়ার ১০০
২২.০৩ ২২০৩.০০.০০ মল্ট হইতে প্রস্তুত বিয়ার ২৫০
২২.০৪ সকল এইচএস কোড তাজা আঙ্গুরের মদ, ফর্টিফাইড মদসহ; (২০.০৯ হেডিংভুক্ত grape must ব্যতীত) ৩৫০
২২.০৫ সকল এইচএস কোড ভারমুথ এবং তাজা আঙ্গুরের তৈরী মদ ৩৫০
২২.০৬ ২২০৬.০০.০০ অন্যান্য গাঁজানো (furmented) পানীয় (উদাহরণস্বরূপ সিডার, পেরী) ৩৫০
২২.০৮ সকল এইচএস কোড Undeenatured ethyl alcohol of an alcoholic strengh by volume of less than 80% volume, spirits, liquors and other spirituous beverages ৩৫০
২৪.০১ সকল এইচএস কোড Unmanufactured  Tobacco, Tobacco refuse ৬০
২৪.০২ ২৪০২.১০.০০ তামাকের তৈরী সিগার, চুরুট ও সিগারিলো ৩৫০
২৪০২.২০.০০ তামাকের তৈরী সিগারেট ৩৫০
২৪০২.৯০.০০ হাতে বা অযান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৈরী বিড়ি এবং অন্যান্য ১০০
২৪.০৩ সকল এইচএস কোড অন্যান্য প্রস্তুতকৃত তামাক এবং সমজাতীয় পদার্থ "homogenised" বা “reconstituted” নির্যাস বা সুগন্ধি ১০০
২৫.১৫ ২৫১৫.১১.০০ মার্বেল এবং ট্রেভারটিন (আপাতঃ আপেক্ষিক পুরুত্ব ২.৫% বা তার বেশি), ক্রুড বা স্থুলভাবে কর্তিত  ২০
২৫১৫.১২.০০ Merely cut, by sawing or otherwise, into blocks or slabs of a rectangular (including square) shape ২০
২৫১৫.২০.০০ Ecsussine and other calcareous monumental or building stone; alabaster ২০
২৫.১৬ ২৫১৬.১১.০০
২৫১৬.১২.০০
গ্রানাইট (স্থুলভাবে কর্তিত)
গ্রানাইটঃ করাত দ্বারা বা অন্য প্রকারে বক বা চতুর্ভুজ বা বর্গাকার স্ল্যাব হিসাবে কর্তিত
২০
২৫.২৩ ২৫২৩.২১.০০ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টঃ সাদা, কৃত্রিমভাবে রঙ্গীন করা হউক বা না হউক ২০
২৫২৩.২৯.০০ অন্যান্য পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট ২০
২৭.১০ ২৭১০.১২.৩৯ অন্যান্য হালকা তৈল ও প্রিপারেশন: অন্যান্য ২০
২৭১০.১২.৫০ অন্যন্য মধ্যম তৈল ও প্রিপারেশন ২০
২৭১০.১২.৬৯ গ্যাস তৈল: অন্যান্য ২০
২৭১০.১৯.১৯ জ্বালানী তৈল: অন্যান্য ২০
২৭১০.১৯.৩৩ আংশিক পরিশোধিত পেট্রেলিয়াম, টপ্ক্রডসহ ২০
২৭১০.১৯.৩৪ গ্রীজ (খনিজ) ২০
২৭১০.১৯.৩৯ অন্যান্য ভারী তৈল ও প্রিপারেশন: (ট্রান্সফরমার অয়েল ও হেভি নরম্যাল প্যারাফিন ব্যতীত  ২০
২৭.১১ ২৭১১.২১.০০ প্রাকৃতিক গ্যাস, গ্যাসীয় অবস্থায় ১০০
৩৩.০৩ ৩৩০৩.০০.০০ সুগন্ধি ও প্রসাধনী পানি ২০
৩৩.০৪ সকল এইচএস কোড সৌন্দর্য বা প্রসাধন সামগ্রী এবং ত্বক পরিচর্যার প্রসাধন সামগ্রী (ঔষধে ব্যবহৃত পদার্থ ব্যতীত), সানস্ক্রিন বা সান ট্যান সামগ্রী; হাত, নখ বা পায়ের প্রসাধন সামগ্রীসহ ২০
৩৩.০৫ সকল এইচএস কোড কেশ পরিচর্যায় ব্যবহৃত সামগ্রী ৬০
৩৩.০৭ সকল এইচএস কোড শেভের আগে, শেভের পরে বা শেভের সময় ব্যবহার্য সামগ্রী; শরীরের দুর্গন্ধ দূরীকরণে ব্যবহৃত সামগ্রী, ডিপাইলেটরি এবং অন্যান্য সুগন্ধি, প্রসাধনী ও টয়লেট সামগ্রী যা অন্য কোথাও উল্লিখিত বা অন্তর্ভুক্ত নহে; কক্ষের দুর্গন্ধ নাশক (সুগন্ধিযুক্ত হউক বা না হউক বা জীবাণুনাশক ক্ষমতা থাকুক বা না থাকুক) ২০
৪৮.১৩ সকল এইচএস কোড সিগারেট পেপার, সাইজ মত কর্তিত হউক বা না হউক, বা বুকলেট বা টিউবের আকারে ৬০
৬৮.০২ সকল এইচএস কোড Granite, marble, travertine and alabaster and other stone ৬০
৬৯.০৪ সকল এইচএস কোড Ceramic building bricks, flooring blocks, support or filler tiles and the like. ২০
৬৯.০৭ সকল এইচএস কোড অনুজ্জ্বল সিরামিক প্রস্তুর ফলক এবং উনানের প্রস্তর বা দেয়ালের টাইলস; অনুজ্জ্বল সিরামিক মোজাইক কিউব এবং সমজাতীয় পণ্য, কোনো বস্তুর উপর স্থাপিত হউক বা না হউক ৪৫
৬৯.০৮ সকল এইচএস কোড উজ্জ্বল সিরামিক প্রস্তর ফলক এবং উনানের প্রস্তর বা দেয়ালের টাইলস; চকচকে সিরামিক মোজাইক কিউব এবং সমজাতীয় পণ্য, কোনো বস্তুর ওপর স্থাপিত হউক বা না হউক ৪৫
৮৪.১৫

সকল এইচএস কোড

(৮৪১৫.১০.১০
৮৪১৫.৮১.১০
৮৪১৫.৮২.১০
৮৪১৫.৮৩.১০ 
৮৪১৫.৯০.১০ 

৮৪১৫.৯০.৯০ ব্যতীত)

মোটরচালিত পাখাযুক্ত এবং উষ্ণতা ও আর্দ্রতা পরিবর্তনের সুবিধাসংবলিত, আর্দ্রতা পৃথকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এইরূপ বৈশিষ্ট্যসম্বলিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র ও উহার যন্ত্রাংশ (মূলধনী যন্ত্রপাতি ব্যতীত) ৬০
৮৪১৫.৯০.১০ যন্ত্রাংশ (এয়ার কন্ডিশনার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আমদানিকৃত) ২০
৮৪১৫.৯০.৯০ যন্ত্রাংশ (অন্যান্য আমদানিকারক কর্তৃক আমদানিকৃত) ৪৫
৮৪.১৮ সকল এইচএস কোড (৮৪১৮.৬১.১০
৮৪১৮.৬৯.১০

৮৪১৮.৯৯.০০ ব্যতীত)
রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার এবং সমজাতীয় পণ্য; হিট পাম্প; রেফ্রিজারেটিং ফার্নিচার ৩০
৮৫.০৭ ৮৫০৭.১০.০০ লিড এসিড ব্যাটারি ও ইলেকট্রিক এ্যাকুমুলেটর ২০
৮৫০৭.১০.০০ Other lead acid accumulators ২০
৮৭.০৩ সংশ্লিষ্ট এইচএস কোড মোটর গাড়ি এবং অন্যান্য মোটরযান, স্টেশন ওয়াগনসহঃ  
(১) ইঞ্জিনসহ অটো রিক্সা বা থ্রি-হুইলার ২০
(২) সম্পূর্ণ তৈরী ইঞ্জিনসহ চার-স্ট্রোক বিশিষ্ট সিএনজি চালিত অটো রিক্সা বা থ্রি-হুইলার ২০
(৩) সম্পূর্ণ তৈরী মোটর গাড়ি ও অন্যান্য মোটরযান, স্টেশন ওয়াগনসহ (এ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত):  
(ক) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১০০০ সিসি পর্যন্ত ৩০
(খ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১০০১ সিসি হইতে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত (মাইক্রোবাস ব্যতীত) ৪৫
(গ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১৫০১ সিসি হইতে ২০০০ সিসি পর্যন্ত (মাইক্রোবাস ব্যতীত) ১০০
(ঘ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ২০০১ সিসি হইতে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত ২৫০
(ঙ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ২৭৫১ সিসি হইতে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ৩৫০
(চ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৪০০০ সিসি এর ঊর্ধ্বে ৫০০
(ছ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১৮০০ সিসি পর্যন্ত মাইক্রোবাস ৩০
(জ) সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১৮০১ সিসি হইতে ২০০০সিসি পর্যন্ত মাইক্রোবাস ৬০
(৪) বিযুক্ত (সিকেডি) মোটর গাড়ি,  মোটরযান, স্টেশন ওয়াগন ও জীপগাড়িসহ (চার স্ট্রোক বিশিষ্ট সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা থ্রিহুইলার ব্যতীত) :  
(ক) মোটর গাড়ি (২০০০ সিসি পর্যন্ত) বিযুক্ত (সিকেডি) ৩০
(খ) অন্যান্য বিযুক্ত (সিকেডি) ৪৫
৮৭.০৪   সম্পূর্ণ তৈরী ন্যূনতম চার দরজা বিশিষ্ট ডাবল কেবিন পিকআপঃ  
৮৭০৪.২১.১৩
৮৭০৪.৩১.১৩
সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১০০১ সিসি হইতে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত ৩০
৮৭০৪.২১.১৪
৮৭০৪.৩১.১৪
সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ১৫০১ সিসি হইতে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ৬০
৮৭০৪.২১.১৫
৮৭০৪.৩১.১৫
সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ২০০১ সিসি হইতে ২৭৫০ সিসি পর্যন্ত ১০০
৮৭০৪.২১.১৬
৮৭০৪.৩১.১৬
সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ২৭৫১ সিসি হইতে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ৩৫০
৮৭০৪.২১.১৭
৮৭০৪.৩১.১৭
সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৪০০০ সিসি এর ঊর্ধ্বে ৫০০
৮৭.০৬ ৮৭০৬.০০.৩১ দুই-স্ট্রোক বিশিষ্ট অটোরিকসা বা থ্রি হুইলারের ইঞ্জিনযুক্ত চেসিস ২০
৮৭০৬.০০.৩২ চার-স্ট্রোক বিশিষ্ট অটোরিকসা বা থ্রি হুইলারের ইঞ্জিনযুক্ত চেসিস ২০
৮৭.১১ ৮৭১১.১০.১১
৮৭১১.১০.৯১
৮৭১১.২০.১১
৮৭১১.২০.৯১
চার-স্ট্রোক বিশিষ্ট সম্পূর্ণ তৈরী মোটরসাইকেল ৪৫
৮৭১১.১০.২১
৮৭১১.১০.৯২
৮৭১১.২০.২১
৮৭১১.২০.৯২
চার-স্ট্রোক বিশিষ্ট বিযুক্ত মোটরসাইকেল ৩০
৮৭১১.১০.১৯
৮৭১১.১০.২৯
৮৭১১.১০.৯৯
৮৭১১.২০.১৯
৮৭১১.২০.২৯
৮৭১১.২০.৯৯
দুই-স্ট্রোক বিশিষ্ট মোটরসাইকেল (সম্পূর্ণ তৈরী বা বিযুক্ত) ২৫০
৯৩.০২-৯৩.০৭ সকল এইচএস কোড রিভলবার ও পিস্তল, অন্যন্য আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ (শুটিং ফেডারেশন কর্তৃক আমদানিকৃত match weapon এবং স্পোর্টস গোলাবারুদ ব্যতীত), তরবারী, ছোরা, সঙ্গিন, বর্শা এবং সমজাতীয় পণ্য ১০০
সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সেবার তালিকা
শিরোনাম সংখ্যা সেবার কোড সেবাসমূহ সম্পূরক শুল্ক হার (%) বা পরিমাণ
(১) (২) (৩) (৪)
S001 S001.00 হোটেল ও রেস্তোরাঁঃ  
S001.10 হোটেলঃ ১০
S001.20

রেস্তোরাঁঃ
আবাসন, খাদ্য বা পানীয় সরবরাহকালে যদি হোটেল বা রেস্তোরাঁয় মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ করা হয় বা যেকোন ধরনের “ফ্লোর শো” এর আয়োজন করা হয় (বৎসরে একদিনের জন্য করা হইলেও)।

১০
S012 S012.20

সিম কার্ড সরবরাহকারী:
সেলুলার (Mobile or Fixed Wireless) টেলিফোনের ক্ষেত্রে সিম (Subscriber’s Identity Module-SIM) কার্ড বা রিম (Removable User Identification Module-RUIM) কার্ড বা অনুরূপ অন্য কোন Microchip সম্বলিত কার্ড সরবরাহ বা একই উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উল্লিখিত কার্ড ব্যতীত প্রতিবার Code Division Multiple Access (CDMA) বা অনুরূপ অন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার।

৬০০ টাকা প্রতিটি সিম

 

আমদানি হতে সম্পূরক শুল্ক আদায় হয় কিভাবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৫৯ অনুযায়ী সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্যের উপর যে সময় ও পদ্ধতিতে আমদানি শুল্ক আদায় করা হয়। সেই একই সময় ও পদ্ধতিতে সম্পূরক শুল্ক আদায় করতে হবে। আমদানি স্তরে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে সম্পূরক শুল্ক আদায় করা হবে: 

  • আমদানির ক্ষেত্রে আমদানির শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্যের সাথে আমদানি শুল্ক এবং রেগুলেটারী ডিউটি (যদি থাকে) যোগ করে

(সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য = শুল্কায়নযোগ্য মূল্য/ আমদানির শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + আমদানি শুল্ক  + রেগুলেটরি ডিউটি + অন্যান্য শুল্ক)


ধরা যাক, কোনো পণ্যের আমদানির ওপর ২৫% আমদানি শুল্ক (CD), ৩% রেগুলেটরি ডিউটি (RD), ২০% সম্পূরক শুল্ক (SD) আরোপিত আছে। আমদানি পর্যায়ে পণ্যচালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য (AV) ৫০০০০.০০ টাকা প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্কের পরিমাণ নির্ণয় করা যাক।
সমাধান:

কর ভিত্তিমূল্যের সূত্র ভিত্তিমূল্য হার শুল্ক-কর
আমদানি শুল্ক AV ৫০,০০০.০০ ২৫% ১২,৫০০.০০
রেগুলেটরি ডিউটি AV ৫০,০০০.০০ ৩% ১,৫০০.০০
সম্পূরক শুল্ক AV+CD+RD ৬৪,০০০.০০ ২০% ১২,৮০০.০০
প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক ১২,৮০০.০০

সরবরাহ হতে সম্পূরক শুল্ক আদায় হয় কিভাবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সেবা সরবরাহের যে সময়ে মূসক আদায় করা হয় সেই একই সময়ে সম্পূরক শুল্ক আদায় করা হয়।

  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সেবার সরবরাহের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক আদায়ের ভিত্তিমূল্য হবে সরবরাহের ন্যায্য বাজার মূল্য

ধরা যাক, কোনো একটি সম্পূরক শুল্ক যুক্ত পণ্যের বাজার মূল্য ৩০০ টাকা। এক্ষেত্রে পণ্য মূল্যের সাথে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অন্তর্ভূক্ত আছে। সম্পূরক শুল্কের হার ১০%।

  • তাহলে, মূসক আরোপযোগ্য মূল্য = সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + সম্পূরক শুল্ক
  • মূসক আরোপযোগ্য মূল্য = (৩০০ - ৩০০* কর-ভগ্নাংশ) টাকা

= (৩০০ - ৩০০*১৫/১১৫) টাকা

= (৩০০ - ৩৯.১৩) টাকা।

= ২৬০.৮৭ টাকা

  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য মূল্য + সম্পূরক শুল্ক = ২৬০.৮৭ টাকা
  • সুতরাং পণ্যটির সম্পূরক শুল্কসহ মূল্য = ২৬০.৮৭ টাকা
  • পণ্যটিতে প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক = (২৬০.৮৭*কর-ভগ্নাংশ) টাকা

= (২৬০.৮৭*১০/১১০) টাকা

= ২৪.৩৫ টাকা।

সম্পূরক শুল্কের হ্রাসকারী সমন্বয় কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী আমদানির ক্ষেত্রে পরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক রপ্তানীর সময়ে হ্রাসকারী হিসেবে সমন্বয়কে সম্পূরক শুল্কের হ্রাসকারী সমন্বয় বলে। 

অধ্যায় ৯

দাখিলপত্র

মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র পেশের পদ্ধতি কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৭ অনুযায়ী নিবন্ধিত ব্যক্তি মূসক-৯.১ ফরমে মূসক দাখিলপত্র এবং তালিকাভুক্ত ব্যক্তি মূসক-৯.২ ফরমে টার্নওভার কর দাখিলপত্র করমেয়াদ পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে কমিশনার বরাবর পেশ করবেন।

কখন দাখিলপত্র পেশ করতে হবে?

প্রত্যেক করমেয়াদের জন্য কর মেয়াদি সমাপ্তির পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করতে হবে। ১৫ তারিখ সরকারি ছুটি থাকলে তার পূর্ববর্তী দিনে দাখিল করতে হবে। অনলাইনে দাখিলের ক্ষেত্রে ২৪/৭ তা করা যাবে।

কোথায় কোথায় দাখিলপত্র পেশ করা যাবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ অনুযায়ী কমিশনারের নিকট দাখিলপত্র পেশ করতে হবে। কমিশনারের নিকট দাখিলপ্রত পেশ করার লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত স্থানে দাখিলপত্র জমা প্রদান করা যাবে:

  • অনলাইন বোর্ডের কেন্দ্রীয় তথ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে
  • সুবিধাজনক কোনো ভ্যাট কমিশনারেট বা বিভাগীয় দপ্তরের
  • বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত কোন সেবা কেন্দ্রে
  • বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক পরিচালিত কোন মেলায়
  • বোর্ড কর্তৃক আদেশ দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন স্থানে

বিলম্বে দাখিলপত্র পেশের পদ্ধতি কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদ শেষ হওয়ায় ন্যূনতম ৭ (সাত) দিন পূর্বে মধ্যে ফরম মূসক-৯.৩ এ কমিশনার বরাবর আবেদন করবেন। কমিশনার যথাযথ বিবেচনায় আবেদন প্রাপ্তির ৭ (সাত) দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন করবেন। তবে সময় বৃদ্ধি মেয়াদ ১ (এক) মাসের অধিক হবে না।

দাখিলপত্র সংশোধনের পদ্ধতি কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা ২০১৬ এর বিধি ৪৯ অনুযায়ী ফরম মূসক-৯.৩ এ দাখিলপত্র সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে কিভাবে দাখিলপত্র পেশ করা যায়? অনলাইনে দাখিলপত্র পেশের সুবিধা কি?

অনলাইনে বোর্ডের কেন্দ্রীয় তথ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে দাখিলপত্র পেশ করা যায়। অনলাইনকে দাখিলপত্র পেশের সুবিধা হলো: 

  • করদাতা ঘরে বসেই অনলাইনে প্রদান করতে পারবেন
  • করদাতাকে মূসক দপ্তরে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা নাই

দাখিলপত্র জমার শেষ তারিখ (মাসের ১৫ তারিখ) সরকারি ছুটি থাকলে কখন তা পেশ করতে হবে?

দাখিলপত্র জমার শেষ তারিখ সরকারি ছুটি তার পূর্ববর্তী কর্মদিবসে দাখিলপত্র পেশ করতে হবে।

দাখিলপত্রে কে স্বাক্ষর করবেন?

নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্তি ব্যক্তি দাখিলপত্রে স্বাক্ষর পর করবেন। যদি কোনো কারণে তাঁর স্বাক্ষর করা সম্ভব না হয় তাহরে তাঁর পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি স্বাক্ষর প্রদান করবেন। 

নীট কর পরিশোধ না করে আংশিক পরিশোধ করে দালিখপত্র জমা প্রদান করা যাবে কি?

একটি কর মেয়াদের জন্য পূর্ণ অতিরিক্ত বা বিলম্ভ দাখিলপত্র পেশ করতে পারবেন। তবে আংশিক পরিশোধ করতে পারবেন না।

দাখিল পত্র জমা প্রদান করা সবার জন্য বাধ্যতামূলক কী?

প্রত্যেক নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত বা নিবন্ধনযোগ্য বা তালিকাভুক্তযোগ্য ব্যক্তিকে দাখিলপত্র জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

দাখিলপত্র জমা প্রদান না করলে কি হবে?

দাখিলপত্র জমা প্রদান না করা ব্যর্থতা বা অনিয়মের পর্যায়ের পড়ে। আইনের ধারা ৮৫ এর উপ ধারা (২) এর দফা (চ) অনুযায়ী দাখিলপত্র জমা প্রদান না করলে ১০(দশ) হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে।

অধ্যায় ১০

ঋণাত্মক নীট কর জের টানা ও ফেরত

ধনাত্মক নীট অর্থ কি?

যদি কোন কর মেয়াদে উপকরণ কর এবং প্রাপ্য হ্রাসকারী সমন্বযের সমষ্টি উৎপাদ কর সম্পূকর শুল্ক এবং বৃদ্ধিকারী সমন্বয় এর সমষ্টিকে অতিক্রমের কারণে প্রদেয় করের নীট পরিমাণ ধনাত্মক হয় তাকে ধনাত্মক নীট অর্থ বলে।

ঋণাত্মক নীট অর্থ কিভাবে সমন্বয় করা যায়?

নির্মাণ, গৃহ নির্মাণ, ভূমি বা সম্পত্তি উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ঋণাত্মক নীট অর্থ অনিদিষ্ট কাল জের টানতে হবে। অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ক্ষেত্রে জের টেনে পরবর্তী ছয়টি কর মেয়াদে বিয়োজন করা যাবে এবং তৎপরবর্তীকে ফেরত প্রদান করতে হবে।

ফেরত কি?

যদি সরকারকে প্রদেয় করের অতিরিক্ত কর পরিশোধ করা হয়ে থাকে তাহলে তা ০৬ টি করমেয়াদ পর্যন্ত জেরে টানতে হবে এরপর ৫০,০০০/- টাকার বেশী হলে সে ফেরত পাবে। এক্ষেত্রে আবেদনের ৩ মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হবে।

ঋনাত্মক নীট অর্থ কিভাবে ফেরত পাওয়া যায়?

ঋনাত্মক নীট অর্থ ফেরত পেতে হলে সর্বনিম্ন ৫০,০০০/- টাকা হতে হবে এবং এর নীটে হলে জের টানতে হবে।

ফেরতের শর্ত কি? কি?

আবেদনকারী চলতি কর মেয়াদ পর্যন্ত সকল মূসক দাখিল পত্র পেশ করতে হবে। ফেরতযোগ্য অর্থ হতে সুদ, দন্ড পরিমাণ হ্রাস করে ৫০,০০০/- এর বেশী হতে হবে। 

কুটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ফেরত প্রাপ্তির পদ্ধতি কি?

কর পরিশোধের ৬ মাসের মধ্যে প্রামানিক দলিলাদি সহ আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদনের ২ মাসের মধ্যে এবং অন্যান্য পদ্ধতিতে আবেদনে ৩ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এক্ষেত্রে সকল দন্ড, সুদ এবং দায়-দেনা হ্রাস করে অবশিষ্ট অর্থ ফেরত দিতে হবে। 

অনিবন্ধিত আমদানিকারকগণ ফেরত পাবেন কি? কিভাবে?

অনিবন্ধিত ব্যক্তিগণ শুধু আগাম কর ফেরত পাবেন। কমিশনার বরাবর অনলাইনে আবেদন করে তা ফেরত পাবেন।

বৈদেশিক পর্যটকদের মূসক ফেরত পাওয়ার সুযোগ আছে কি? কিভাবে?

আছে। ১৮০ দিনের কম সময় অবস্থান করতে হবে এবং নিদিষ্ট পণ্য হবে VAT Refund for Tourists চিহ্নিত দোকান থেকে ক্রয় করতে হবে।

অধ্যায় ১১

কর নির্ধারণ

কমিশনার কেন প্রদেয় কর নির্ধারণ করেন?

কমিশনার নিম্নবর্ণিত কারণে প্রদেয় করের পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকেন, যথা:-
(ক) দাখিল পত্রে উৎপাদক কর উপকরণ কর সম্পূরক শুল্ক বা বৃদ্ধিকারী বা হ্রাসকারী সমন্বয়ে বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করনে
(খ) দাখিল পত্রে টার্নওভার কর সম্পর্কে মিথ্যা ঘোষনা প্রদান করলে
(গ) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করতে ব্যর্থ হলে
(ঘ) প্রদেয় কর পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, এবং
(ঙ) অর্থ ভুল ফেরত প্রদান করা হলে।

 

কত দিনের মধ্যে কমিশনার কর নিধারণ করতে পারেন?

যে কর মেয়াদের ৫ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং নির্ধারণের ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত ব্যক্তির উপর নোটিশ জারি করতে হবে।

বিলম্বে কর পরিশোধের ক্ষেত্রে কি কোন আর্থিক দন্ড বা সুদের ব্যবস্থা আছে?

করযোগ্য সরবরাহের শূন্যহার বিশিষ্ট সরবরাহ বা অব্যাহতি প্রাপ্ত সরবরাহ হিসেবে গন্য করলে বিলম্বে শুল্ক পরিশোধের কমিশনার সুদ বা জরিমানা ধার্য করতে পারবেন।

কমিশনার কর্তৃক পরিশোধিত করের পরিমাণ সংশোধন করার পর কি কোথাও আবেদন বা আপিল করা যায়?

কর নির্ধারণ বা সংশোধনের পর আপিলাত ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করা যাবে।

অধ্যায় ১২

মূল্য সংযোজন কর কর্তৃপক্ষ

মূল্য সংযোজন কর কর্তৃপক্ষ কে?

মূল্য সংযোজন কর কর্তৃপক্ষ হলো বোর্ড এবং এর অধীন মূল্য সংযোজন কর দপ্তর এবং নিম্নবর্ণিত মূসক কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত কর্তৃপক্ষ:
(ক) চীফ কমিশনার, মূল্য সংযোজন কর;
(খ) কমিশনার, মূল্য সংযোজন কর;
(গ) কমিশনার (আপিল), মূল্য সংযোজন কর;
(ঘ) কমিশনার (বৃহৎ করদাতা ইউনিট), মূল্য সংযোজন কর;
(ঙ) মহাপরিচালক, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল; 
(চ) মহাপরিচালক, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, মূল্য সংযোজন কর;
(ছ) অতিরিক্ত কমিশনার বা অতিরিক্ত মহাপরিচালক, মূল্য সংযোজন কর;
(জ) যুগ্ম কমিশনার বা পরিচালক, মূল্য সংযোজন কর;
(ঝ) উপ কমিশনার বা উপ-পরিচালক, মূল্য সংযোজন কর;
(ঞ)    সহকারী কমিশনার বা সহকারী পরিচালক, মূল্য সংযোজন কর; 
(ট) রাজস্ব কর্মকর্তা, মূল্য সংযোজন কর; 
(ঠ) সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, মূল্য সংযোজন কর; এবং 
(ড) বোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত অন্য কোন কর্মকর্তা।

মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তা কারা?

নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাগণকে মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তা বলা হবে: 
(ক) চীফ কমিশনার, মূল্য সংযোজন কর;
(খ) কমিশনার, মূল্য সংযোজন কর;
(গ) কমিশনার (আপিল), মূল্য সংযোজন কর;
(ঘ) কমিশনার (বৃহৎ করদাতা ইউনিট), মূল্য সংযোজন কর;
(ঙ) মহাপরিচালক, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল; 
(চ) মহাপরিচালক, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, মূল্য সংযোজন কর;
(ছ) অতিরিক্ত কমিশনার বা অতিরিক্ত মহাপরিচালক, মূল্য সংযোজন কর;
(জ) যুগ্ম কমিশনার বা পরিচালক, মূল্য সংযোজন কর;
(ঝ) উপ কমিশনার বা উপ-পরিচালক, মূল্য সংযোজন কর;
(ঞ) সহকারী কমিশনার বা সহকারী পরিচালক, মূল্য সংযোজন কর; 
(ট) রাজস্ব কর্মকর্তা, মূল্য সংযোজন কর; 
(ঠ) সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, মূল্য সংযোজন কর; এবং 
(ড) বোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত অন্য কোন কর্মকর্তা।

মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তার প্রধান কাজ কী কী?

মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তার প্রধান কার্যাবলী হলো :
(ক) কর আদায় এবং উহার হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রম; 
(খ) এই আইন এবং উহার অধীন প্রণীত বিধি-বিধানের প্রয়োগ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম; এবং 
(গ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত অন্য যেকোন দায়িত্ব পালন বা কর্তব্য ও কার্যাবলী সম্পাদন।

মূল্য সংযোজন কর কর্তৃপক্ষের প্রদান দায়িত্ব ও কর্তব্য কী কী?

বোর্ড, মূসক কর্তৃপক্ষের নীতি নির্ধারণী দায়িত্ব পালন সহ অন্যান্য সকল দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করবেন। এ উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে ধারা ৭৯ অনুযায়ী মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তাগণ বোর্ডের অধীনে নিম্ন বর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন করবেন:

  • কর আদায় এবং উহার হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রম; 
  • এই আইন এবং উহার অধীন প্রণীত বিধি-বিধানের প্রয়োগ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম; এবং 
  • বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত অন্য যেকোন দায়িত্ব পালন বা কর্তব্য ও কার্যাবলী সম্পাদন।

দায়িত্ব পালনকালে একজন মূল্য সংযোজন কর কর্মকর্তা কী ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন?

তাঁর উপর বোর্ড কর্তৃক ন্যস্তকৃত যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলী সম্পাদন করতে পারবে। এছাড়াও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক তাঁর উপর অর্পিত যে কোন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন, ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলী সম্পাদন বা অধস্তন কর্মকর্তার যে কোন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন, ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলী সম্পাদন করতে পারবেন।

জব্দকৃত রেকর্ড পত্র ও দলিলাদি কিভাবে ফেরত পাওয়া যাবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৪ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর বিধি ৬২ অনুযায়ী যে উদ্দেশ্যে রেকর্ড ও দলিলাদি জব্দ করা হয়েছিল তা নিষ্পন্ন হলে জব্দকৃত রেকর্ড বা দলিলাদি ফেরত দেওয়া যাবে। 
অথবা, জব্দকৃত রেকর্ড বা দলিলাদির প্রতিলিপি দ্বারা যদি জব্দের উদ্দেশ্যে সাধিত হয় তাহলে প্রতিলিপি সংরক্ষন করে মূল রেকর্ড বা দলিলাদি ফেরত দেওয়া যাবে। 

জব্দকৃত পণ্য বা পণ্যবাহী যান কীভাবে ছাড় করানো যাবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৪ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৬২ অনুযায়ী জব্দকৃত পণ্য বা পণ্যবাহী যান যে উদ্দেশ্যে আটক করা হয়েছিল সে উদ্দেশ্যে সাধিত হলে জব্দকৃত জন্য বা পণ্যবাহী যান ছাড় দেওয়া হবে। তবে যে উদ্দেশ্যে জব্দ করা হয়েছে তার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হলেও আটককৃত কর্মকর্তা বা তদুর্ধ্ব পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তা প্রকৃত মালিকের ফরম মূসক ১২.৮ এ উক্ত যানবাহন ছাড় আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং নিম্ন বর্ণিত শতাবর্লী সন্তোষজনক সাপেক্ষে কমিশনারের অনুমোদনক্রমে জব্দকৃত পণ্য বা পণ্যবাহী যান ছাড় প্রদান করতে পারবেন। 

  • পণ্য বা পণ্য বোঝাই যানবাহনের মালিক বা চালক ইতোপূর্বে অনুরূপ পণ্য পরিবহনের অংশগ্রহণ করেন নাই।
  • পণ্য বা পণ্য বোঝাই যানবাহন ছাড় প্রদান করার ফলে উক্ত যানবাহন  সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি ক্ষেত্রে ন্যায় বিচারের স্বার্থ ক্ষুন্ন অথবা আলামত বিনষ্ট হবেনা। 

শর্ত প্রতিপালন হলে ফরম মূসক ১২.৯ এ উক্ত পণ্য ও যানবাহনের এ প্রকৃত মালিকের মুচলেকা সাপেক্ষে উক্ত পণ্য বা যানবাহন ছাড় প্রদানের অনুমতি দেওয়া হবে।

কখন ব্যাংক হিসাব অপরিচালনযোগ্য হতে পারে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৬৪ অনুযায়ী এই আইনের আওতায় কোন বিধান লঙ্ঘন করলে অথবা আইনের ধারা ৯১ এর আওতায় নীরিক্ষার উদ্দেশ্যে অথবা আইনের ধারা ৯৫ এর আওতায় বকেয়া কর আদায়ের উদ্দেশ্যে ব্যাংক হিসাব অপরিচালক যোগ্য হবে।

মূসক কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে অন্য কোন সংস্থা বা বাহিনী তা করতে বাধ্য কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮২ অনুযায়ী মূসক কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনি প্রয়োজনে- 

  • বাংলাদেশ পুলিশ পুলিশ
  • বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ
  • বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড
  • বাংলাদেশ আনসার
  • ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ
  • আবগারি, শুল্ক, আয়কর
  • মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত দপ্তর
  • সকল সরকারি কর্মকর্তা;
  • এবং সকল ব্যাংক কর্মকর্তা সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন। 

মূসক কর্মকর্তা উল্লিখিত কোন সদস্য, কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তিকে যেকোন ব্যক্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব, ব্যাংক এ্যাকাউন্টের হিসাব বিবরণী, দলিলাদিসহ অন্য যেকোন তথ্য সরবরাহের অনুরোধ করলে তা সংশ্লিষ্ট সদস্য, কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তা তা সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবেন।

মূসক কর্মকর্তা কি কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে তল্লাশি চালাতে ও কিছু জব্দ করতে পারেন?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৩ অনুযায়ী সহকারী কমিশনার পদমর্যাদার নিম্নে নয় এমন যে কোন মূসক কর্মকর্তা কমিশনারের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে তল্লাশি চালাতে এবং এর রেকর্ডপত্র, নথিপত্র, দলিলাদি ও হিসাব পরীক্ষাকরণ ও জব্দ করতে পারবেন।

মূসক কর্মকর্তা কিভাবে জরিমানা আরোপ করতে পারে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৫ অনুযায়ী ব্যর্থতা বা অনিয়মের ক্ষেত্র অনুসারে কমিশনার নিম্ন বর্ণিত উপায়ে জরিমানা আরোপ করতে পারবেন।

ক্র:নং ব্যর্থতা বা অনিয়ম জরিমানার পরিমাণ
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
নিবন্ধন বা টার্নওভার কর সনদপত্র যথাস্থানে প্রদর্শন না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পর্কিত তথ্যের পরিবর্তন সম্পর্কে কমিশনারকে অবহিত না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বাতিলের আবেদন না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
ধারা ৯(৫) এর বিধান পরিপালন না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
নির্ধারিত তারিখের মধ্যে মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র পেশ না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
দাখিলপত্রে উৎপাদ করের কোন পরিমাণ অন্তর্ভুক্ত না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; অনুল্লেখিত উৎপাদ করের দ্বিগুণ;
দাখিলপত্রে প্রাপ্য উপকরণ করের রেয়াত অধিক গ্রহণ করিবার অনিয়ম; অনিয়মিতভাবে গৃহীত উপকরণ করের দ্বিগুণ;
দাখিলপত্রে হ্রাসকারী সমন্বয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করিবার বা বৃদ্ধিকারী সমন্বয়ের পরিমাণ হ্রাস করিবার অনিয়ম; বর্ধিত হ্রাসকারী সমন্বয়ের দ্বিগুণ বা হ্রাসকৃত বৃদ্ধিকারী সমন্বয়ের দ্বিগুণ;
১০ কর চালানপত্র, ক্রেডিট নোট, ডেবিট নোট, সমন্বিত কর চালানপত্র বা উৎসে কর কর্তন সনদপত্র প্রদান না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
১১ রেকর্ডপত্র নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
১২ নির্ধারিত জামানত প্রদান না করিবার ব্যর্থতা বা অনিয়ম; ১০ (দশ) হাজার টাকা মাত্র
১৩ আরোপিত কর নিরূপণ ও পরিশোধ ইচ্ছাকৃতভাবে পরিহার বা পরিহারের চেষ্টা করিবার অনিয়ম; পরিহারকৃত করের দ্বিগুণ।

আমার যে সকল তথ্য মূসক কর্তৃপক্ষের কাছে আছে তা কি গোপন থাকবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৮৯ অনুযায়ী তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর বিধান সাপেক্ষে করদাতা হিসেবে আমার সকল তথ্য মূসক কর্তৃপক্ষের কাছে গোপণ থাকবে।

অধ্যায় ১৩

তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ

কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে অডিট বা নিরীক্ষার ক্ষমতা মূসক কর্মকর্তার আছে কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৯০ অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যক্রমের যাবতীয় বিষয়ে অডিট বা নিরীক্ষার ক্ষমতা মূসক কর্মকর্তার আছে।

তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৯২ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৬৬ অনুযায়ী কোন করদাতা সম্পূরক শুল্ক ফাকির উদ্দেশ্যে এই আইনের বিধানবলী পরিপালন না করলে কমিশনার এক বা একাধিক কর্মকর্তার সমন্বয়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট স্থানে সরবরাহের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষন ও নজরদারী করিতে পারবেন। এ ধরনের ব্যবস্থাকে তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ বলা হয়।

কোন কোন ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ পদ্ধতি প্রযোজ্য?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৯২ অনুযায়ী শুধুমাত্র সম্পূরক শুল্ক ফাঁকির উদ্দেশ্যে এই আইনের বিধানাবলী প্রতিপালন না করলে তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ প্রযোজ্য।

কিভাবে তত্ত্বাবধানাধীন সরবরাহ পরিপালিত হবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী তত্ত্বাবধানধীণ সরবরাহ পরিচালনার জন্য কমিশনার এক বা একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমন্বয় আদেশ দ্বারা এক বা একাধিক দল গঠণ করবেন। কমিশনার কর্তৃক আদেশের তত্ত্বাবধানে স্থান, সময় এবং মেয়াদ নির্দিষ্ট করা থাকবে। তত্ত্বাবধানকারী দল তত্ত্বাবধান শুরুর পূর্বে সরবরাহ স্থান পরিদর্শন পূর্বক ফরম মূসক ১৩.১ এ কমিশনার নিকট একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
পরবর্তীতে প্রতিদিনের কার্যক্রম পরবর্তী কার্যদিবসের মধ্যে ফরম মূসক ১৩.২ এ দৈনিক প্রতিবেদন এবং তত্ত্বাবধান মেয়াদ শেষে ফরম মূসক ১৩.৩ এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন কমিশনারের নিকট দাখিল করবেন। 

অডিট প্রস্তুতির জন্য করদাতাগণের কি কি দলিলাদি সংরক্ষণ করতে হবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী অডিট প্রস্তুতির জন করদাতাকে প্রত্যেক করমেয়াদের দাখিলপত্র, ক্রয়-বিক্রয় হিসাব, কর চালান পত্র, ডেবিট নোট-ক্রেডিট নোট, সমন্বয় হিসাব সহ সকল হিসাবের দলিলাদি সংরক্ষন করতে  হবে। এছাড়াও অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংক্রান্ত অন্যান্য দলিলাদি যেমন: আমদানি - রপ্তানি হিসাব, বার্ষিক অডিট রির্পোট, ব্যাংক হিসাব ইত্যাদি নিয়মিত সংরক্ষন করতে হবে। 

ভবিষৎ অডিটের জন্য আমি কি ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারি?

ভবিষ্যৎ অডিটের জন্য আমি আমার পূর্ববর্তী অডিট সংক্রান্ত দলিলাদি বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যৎ অডিটের জন্য যে সময়ের জন্য আমার কার্যক্রমের অডিট সম্পন্ন হয় নাই সেই সময়ের সকল কর হিসাবের দলিলাদি সংরক্ষন করে প্রস্তুতি নিতে পারি। এ লক্ষ্যে উক্ত সময়ের দাখিলপত্র, ক্রয়-বিক্রয় হিসাব, কর চালান পত্র, ডেবিট নোট-ক্রেডিট নোট, সমন্বয় হিসাব, আমদানি - রপ্তানি হিসাব, বার্ষিক অডিট রির্পোট, ব্যাংক হিসাব ইত্যাদি ঠিক ভারে সংরক্ষণ করে অডিটের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারি।

অডিটের সময় কোন কোন ধরনের তথ্য যাচাই করা হতে পারে?

অডিটের সময় ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সকল দলিলাদি, যেমন:

  • দাখিলপত্র
  • করচালান পত্র
  • ক্রয়-বিক্রয় হিসাব
  • ডেবিট নোট- ক্রেডিট নোট
  • সমন্বয় হিসাব
  • আমদানি রপ্তানী হিসাব
  • ব্যাংক হিসাব
  • বার্ষিক অডিট রিপোর্ট সহ সকল হিসাবের তথ্য যাচাই করা যেতে পারে।

অধ্যায় ১৪

বকেয়া আদায়

বকেয়া কি? এটি কিভাবে তৈরি হয়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৯৫ অনুযায়ী মূসক সম্পূরক শুল্ক, টার্নওভার কর সুদ, অর্থদন্ড বা জরিমানা কোন অর্থ করদাতা কর্তৃক প্রদেয় হলে উক্ত অর্থকে বকেয়া কর বলে।

বকেয়া কর নিম্নবর্ণিতভাবে তৈরি হতে পাবে-

  • দাখিলপত্রে  প্রদেয় কর কোন কারণে অপরিশোধিত থাকলে
  • কমিশনার কর্তৃক কর নির্ধারণ করা হলে, খেলাপি করদাতা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে
  • আইনের অধীন কোন কার্যক্রম নিষ্পত্তির ফলে বকেয়া কর উদ্ভুত হয়

কখন কর পরিশোধ করতে হয়? নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর পরিশোধ না করলে কি হয়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী দাখিলপত্র প্রদানের পূর্বে কর পরিশোধ করতে হয়, তবে কমিশনার কর্তৃক কর নির্ধারণ এবং আইনের অধীন কোন কার্যক্রম নিষ্পত্তির ফলে উদ্ভুত কর নোটিশে উল্লিখিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর পরিশোধ করতে হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর পরিশোধ না করলে উক্ত কর বকেয়া কর হিসেবে বিবেচিত হবে।

বকেয়া কর আদায়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা কে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৬৮ অনুযায়ী কমিশনারের পক্ষে DRO (Debt Recovery Officer) বকেয়া কর আদায়ের ক্ষেত্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা।  DRO (Debt Recovery Officer) হবেন ন্যূনতম উপ-কমিশনার পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তা।

কোন কোন উৎসে হতে বকেয়া কর আদায় করা যায়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৯৫ এর উপধারা (৫) অনুযায়ী নিম্ন বর্ণিত ক্ষেত্র হতে বকেয়া কর আদায় করা যাবে। 

  • খেলাপি করদাতা কোন অর্থ কোন আয়কর, শুল্ক, মূসক বা আবগারি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রানাধীন থাকলে।
  • খেলাপি করদাতা অর্থ অপর কোন ব্যক্তি বা সহযোগি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের নিকট থাকলে।
  • খেলাপি করদাতা যেকোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি হতে।

মূসক কর্তৃপক্ষ কোন কোন পদ্ধতিতে বকেয়া কর আদায় করতে পারেন?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী কমিশনারের পক্ষে DRO ফরম মূসক ১৪.১ এ খেলাপি করদাতা বরাবর বকেয়া কর আদায় সর্টিফিকেট জারি করবেন। পরবর্তীতে DRO নিম্নবর্ণিত কার্যক্রম গ্রহণ করে বকেয়া কর আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন:

  • খেলাপি করদাতার কোন অর্থ কোন আয়কর, শুল্ক, মূসক বা আবগারি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকলে, তা  হতে বকেয়া কর কর্তন করে
  • অপর কোন ব্যক্তি বা সহযোগী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের নিকট থাকলে, উক্ত ব্যক্তি বা ব্যাংকে পরিশোধ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করে
  • তার ব্যবসা অঙ্গন হইতে কোন পণ্য বা সেবার সরবরাহ বন্ধের আদেশ প্রদান করে
  • তার আমদানিকৃত পণ্য খালাস বন্ধের লক্ষ্যে শুল্ক ভবনের বিল অব এন্ট্রি (Bill of Entry) প্রক্রিয়াকরণ সিস্টেমে ব্যবসা সনাক্তকরণ সংখ্যা বন্ধ (lock) করে
  • তার ব্যাংক হিসাব নির্ধারিত পদ্ধতিতে অপরিচালনযোগ্য (freeze) করে
  • তার করদাতার ব্যবসা অঙ্গন তালাবদ্ধ করে রাখার আদেশ প্রদান করে বা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তালাবদ্ধ করে
  • তার যেকোন স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক বা অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিক্রয়ের মাধ্যমে বকেয়া কর আদায় করে
  • খেলাপি করদাতার কোন জিম্মাদারের নিকট হইতে নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে জামানত গ্রহণ করে

বকেয়া কর পরিশোধের জন্য কিস্তির কোন ব্যবস্থা আছে কি?

কমিশনার নির্ধারিত সময়সীমা, শর্ত ও পদ্ধতিতে বকেয়া কর কিস্তিতে পরিশোধের অনুমতি প্রদান করতে পারবেন, তবে বকেয়া কর পরিশোধের সময়সীমা ১২ (বার) মাসের অতিরিক্ত হবে না।

বকেয়া পরিশোধ না করলে কি হবে?

বকেয়া পরিশোধ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে মূসক কর্তৃপক্ষ পাওনা অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

রিসিভার কে?

রিসিভার হলো কোন আইন বা আদালত কর্তৃক নিয়োজিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি যিনি আইন বা আদালতের নির্দেশক্রমে ও আওতায় কোন সম্পত্তির রিসিভারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

রিসিভারের দায়িত্ব কি?

কোন রিসিভার দায়িত্ব হলো আইন বা আদালত কর্তৃক নিয়োজিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে কোন সম্পদের সাময়িক রক্ষণাবেক্ষণ করা।

বকেয়া কর পরিশোধের ক্ষেত্রে পরিচালক বা উদ্যোক্তার দায় কি?

বকেয়া কর সৃষ্টকালীনে কোন কোম্পানী বা ব্যক্তি বা সম্পত্তি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগের পরিচালক বা উদ্যোক্তার যথাযথ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা এবং দক্ষতা প্রদর্শনে ব্যর্থ হলে সকলে যৌথ ও ব্যক্তিগতভাবে উক্ত অর্থ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা পর্যন্ত দায়ী থাকবেন ।

মৃত্যু বা আর্থিক অসামর্থ্যের বকেয়া কিভাবে আদায় হবে?

কোন করদাতার মৃত্যুর পর বা তার দেউলীয়াত্ব ঘোষণার পর তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম তার সম্পত্তির ট্রাস্টি বা নির্বাহক দ্বারা পরিচালিত হলে উক্ত ট্রাস্টি বা নির্বাহকের কাছ থেকে বকেয়া কর আদায় করা হবে। 

আদায়কৃত বকেয়ার অর্থ কিভাবে বিলিবণ্টন হবে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৯৮ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ক্রমানুসারে বিলিবন্টন হবে:

  • প্রথমত, প্রদেয় সুদের পরিমাণ  হ্রাসকরণার্থে
  • দ্বিতীয়ত, অর্থদ- বা জরিমানার পরিমাণ  হ্রাসকরণার্থে
  • তৃতীয়ত, মূসক, সম্পূরক শুল্ক বা টার্নওভার করের পরিমাণ হ্রাসকরণার্থে 

তবে জব্দকৃত পন্যের বিক্রয়লব্দ অর্থ হতে বকেয়া কর আদায় করা হলে আইনের ধারা ১০০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত উপায়ে বিলিবণ্টন করতে হবে:

  • প্রথমত, পণ্য জব্দকরণ, সংরক্ষণ এবং বিক্রয়ের খরচাদি পরিশোধ করে
  • দ্বিতীয়ত, যে পরিমাণ বকেয়া কর আদায়ের নিমিত্ত পণ্য জব্দ করা হইয়াছিল সেই পরিমাণ অর্থ   পরিশোধ করে (এক্ষেত্রে আইনের ধারা ৯৮ অনুসারে বিলিবন্টন হবে)
  • তৃতীয়ত, এই আইন দ্বারা রহিত আইনের অধীন প্রাপ্য যেকোন কর পরিশোধ করে; এবং
  • চতুর্থত, অবশিষ্ট অর্থ, যদি থাকে, পণ্যের মালিককে ফেরত প্রদান করে।

অধ্যায় ১৫

রেকর্ডপত্র

রেকর্ডপত্র কি?

রেকর্ডপত্র বা দলিলাদি বলতে নিম্নের বিষয়াদিকে বোঝাবে:

  • যে কোন পণ্য, সেবা বা স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয়ের বিবরণী এবং সংশ্লিষ্ট চালানপত্র
  • কর চালান পত্র, ক্রেডিট নোট-ডেবিট নোট, সমন্বিত কর চালান পত্র এবং উৎসে কর কর্তন সনদপত্র
  • আমদানি বা রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি
  • রেয়াত সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র
  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সেবা সংশ্লিষ্ট দলিলাদি।
  • দাখিলপত্র
  • ট্রেজারি চালান; এবং
  • অন্য কোন দলিলাদি।

করদাতা জন্য রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ কি বাধ্যতামূলক?

করদাতার করদায় এবং অন্যান্য দায়দেনা নিরূপণের সুবিধার্থে তার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের রেকর্ড পত্র সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক। 

কত দিন রেকর্ড পত্র সংরক্ষণ করতে হবে?

করদাতার করদায় এবং অন্যান্য দায়দেনা নিরূপণের জন্য ০৫ (পাঁচ) বছর পর্যন্ত রেকর্ড পত্র সংরক্ষণ করতে হবে। 

করদাতাকে কোন কোন বিষয়ের রেকর্ড প্রত্র সংরক্ষণ করতে হবে?

নিম্নবর্ণিত বিষয়ের রেকর্ড পত্র সংরক্ষণ করতে হবে: 

  • যে কোন পণ্য, সেবা বা স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয়ের বিবরণী এবং সংশ্লিষ্ট চালানপত্র
  • কর চালান পত্র, ক্রেডিট নোট-ডেবিট নোট, সমন্বিত কর চালান পত্র এবং উৎসে কর কর্তন সনদপত্র
  • আমদানি বা রপ্তানি সংশ্লিষ্ট দলিলাদি
  • রেয়াত সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র
  • সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সেবা সংশ্লিষ্ট দলিলাদি।
  • দাখিলপত্র
  • ট্রেজারি চালান; এবং
  • অন্য কোন দলিলাদি।

করদাতাকে কোথায় রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ করতে হবে?

ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে করদাতাকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট প্রাঙ্গনে রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ করতে হবে।

নোটিশ জারির পদ্ধতি কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১০৯ অনুযায়ী নোটিশ জারির পদ্ধতি হলো:

  • যার জন্য নোটিশটি প্রযোজ্য তাকে বা তার প্রতিনিধিকে সাময়িক নোটিশ প্রদান করতে হবে
  • ব্যক্তির সর্বশেষ জ্ঞাত বাংলাদেশের বাসস্থানে বা ব্যবসায়ের স্থানে প্রেরণ করতে হবে
  • সর্বশেষ জ্ঞাত ঠিকানায় রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে প্রেরণ করতে হবে
  • ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে প্রেরণ করতে হবে
  • উপরের পদ্ধতিতে নোটিশ জারি না করা গেলে মূল্য সংযোজন কর কার্যাকরের নোটিশ বোর্ডে আংটিয়ে দিতে হবে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেকর্ডপত্র সংরক্ষণের বিধান আছে কি?

আইন ও বিধিমালার বিধান অনুসরণ করে ইলেকট্রিক বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ করা যাবে। এ জন্য বোর্ডের পূর্বানুমোদনের প্রযোজন নেই।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেকর্ড পত্র সংরক্ষণ করলে কাগজে দলিলাদি রাখা বাধ্যতামূলক কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন হবে সম্পূর্ন অনলাইন ভিত্তিক একটি কর ব্যবস্থা। যাতে করে এক করদাতা সহজেই ঘরে বসে তিনি তার দলিলাদি হিসাব ইত্যাদি সংরক্ষণ এবং আদান প্রদান করতে পারেন। পাশাপাশি করদাতা তিনি তার সুবিধার্থে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেকর্ডপত্র সংরক্ষনের পাশাপাশি কাগজে দলিলাদি সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। তবে কাগজে দলিলাদি রাখা বাধ্যতামূলক নয়।

অধ্যায় ১৬

অপরাধ, দন্ড ও বিচারিক প্রক্রিয়া

অপরাধ কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী অপরাধ হলো ১১১,১১২,১১৩,১১৬ ও ১১৭ এ উল্লিখিত অপরাধ।
অপরাধসমূহ:
ধারা-১১১: জাল বা ভূয়া মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র, কর চালান বা মূসক সংক্রান্ত দলিলাদি তৈরি করা।
ধারা-১১২: অসৎ উদ্দেশ্যে মূসক দলিলাদিতে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর বিকৃত।
ধারা-১১৩: প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি।
ধারা- ১১৭: অপরাধে সহায়তা কারী।

কোন অপরাধের জন্য কোন ধরনের বিধান আছে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১১১, ১১২ ও ১১৩ তে কোন অপরাধের ধরণ অনুযায়ী দন্ডের বিধান উল্লেখ করা হলো:

  • ধারা ১১১:
    • অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া বা জাল মূসক নিবন্ধনপত্র, টার্নওভার কর সনদপত্র বা কর চালান এবং উৎসে কর্তন সনদ পত্র তৈরী  বা ব্যবহার করলে
    • ভুয়া ও জাল ক্রেডিট ও ডেবিট নোট তৈরি ও ব্যবহার কররে
    • কোন উপায়ে কর ফাঁকি দিলে বা প্রাপ্য না হওয়ার সত্ত্বেও কর ফেরৎ দাবি কররে- উক্ত ব্যক্তি
      • এক বছর কারাদন্ডের বা
      • প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থ দন্ডে বা 
      • উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
  • ধারা ১১২: 
    • কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে কোন মূসক কর্মকর্তা নিকট মিথ্যা বা বিভ্রান্ত  কর তথ্য প্রদান করলে ঐ ব্যক্তি 
      • অনুর্ধ্ব ৬ মাস কারাদন্ড বা
      • প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থদন্ডে বা
      • উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। 
  • ধারা ১১৩:
    • কোন কর্মকর্তা আইনও বিধি মোতাবেক তার দায়িত্ব পালন কালে যদি কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন তাহলে অপরাধ বলে গন্য হবে। এ অপরাধের জন্য ঐ ব্যক্তি
      • সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদন্ড বা
      • কম পক্ষে দশ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা
      • উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

তাছাড়া আইনের ধারা ১১৭, অনুযায়ী কোন অপরাধ সহায়তা বা সহযোগীতা প্রদানকারীও অপরাধে সংগঠনকারী ন্যায় সমানভাবে দোষী সাব্যস্ত হবেন এবং দন্ডিত হবেন।

অপরাধে আপোষ রফা কি? কিভাবে তা করা যায়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা  ১১৯ অনুযায়ী মামলা দায়ের করার জন্য কমিশনার কর্তৃক পূর্বানুমোদনের পূর্বে বা পরে অপরাধসমূহ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থাকে অপরাধের আপোষ রফা বলে। 
আপোষ রফার পদ্ধতি: মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৯৭ অনুযায়ী এ অপরাধের আপোষ রফার পদ্ধতিসমূহ:

  • অভিযুক্ত ব্যক্তি বোর্ডে
    • আপোষরফার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করবেন
    • হলফ নামার মাধ্যমে কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট কর পরিশোধ (কিস্তিতে) করার অঙ্গীকার করবেন এবং
    • আপাষরফা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যয় ব্যক্তিই বহন করবেন
  • অভিযুক্ত ব্যক্তি ইতোপূর্বে একই ধরনের অপরাধ করলে বোর্ড কোন মামলা আপোষরফা করতে পারবে না
  • বোর্ড আপোষরফার জন্য আবেদনকারী এবং সংশ্লিষ্ট কমিশনার ও অভিযোগ দাখিলকারী কর্মকর্তাকে শুনানির সুযোগ প্রদান করবে।

ফৌজদারী অপরাধের মামলা দায়ের পদ্ধতি কি?

মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ এর ধারা ১১৪ এর উপ ধারা (৩) অনুযায়ী কমিশনারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে সহকারী কমিশনারের পদ মর্যাদার নিম্নে নহে এমন কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ফৌজদারী অপরাধের মামলা আদালতে দায়ের করতে হবে।

ফৌজদারী অপরাধের জন্য দায়ের কৃত মামলার তদন্ত কে করবেন?

মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১১৪ এবং মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৯৬(১) অনুযায়ী ফৌজধারী মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে মূসক কর্মকতাই উক্ত মামলার তদন্ত সম্পন্ন করবেন।

ফৌজদারী অপরাধের জন্য দায়েরকৃত মামলার তদন্ত পদ্ধতি কি?

মূসক আইনের ধারা ১১৪ এবং বিধিমালা ২০১৬ এর বিধি ৯৬ অনুযায়ী তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরম মূসক ১৬.১ এর মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অভযোগটি অবহিত করবেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে উল্লিখিত জবানবন্দী প্রদানের জন্য অনুরোধ করবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি ফরম মূসক ১৬.২ ফরমে জবাব প্রদান করবেন।
মামলা গ্রহণের ৪ মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে কমিশনারের মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের সময়সীমা ৩ মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবেন।

 

মূসকের আওতায় আপিলের বিধান আছে কি?

মূল্য সংযোজনকর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২১ ও ১২২ অনুসারে আদেশ জারির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে আপিল দায়ের করার বিধান আছে।

মূসকের আওতায় রিভিশনের বিধান আছে কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২৪ (১) মোতাবেক বোর্ড বা আপিলাত ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হলে 

  • সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা
  • সংক্ষুব্ধ কমিশনার বা মহাপরিচালক পদ মর্যাদার নিম্নে নহেন এমন মূসক কর্মকর্তা উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে  সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিভিশনের আবেদন করতে পারবেন।

কোন কোন ক্ষেত্রে আপিল করা যায়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২১ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালার বিধি ৯৮ অনুযায়ী আইনের আওতায় অতিরিক্ত কমিশনার বা নিম্ন পদধারী মূসক কর্মকর্তা কর্তৃক গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত বা কোন আদেশ দ্বারা কোন করদাতা বা মূসক কর্মকর্তা সংক্ষুদ্ধ হইলে তিনি নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত সিদ্ধান্ত বা আদেশ জারির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে কমিশনার (আপিল) এর নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।

আপিলের পদ্ধতি কি?

মূসক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২১ ও বিধি ৯৮ মোতাবেক অতিরিক্ত কমিশনার বা তৎনিম্ন পদধারী কর্মকর্তা কর্তৃক গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত বা প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা কোন করদাতা সংক্ষুদ্ধ হলে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত বা আদেশ জারির ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনার আপিল এর নিকট আপিল করতে পারবেন। 

ট্রাইবুনালের নিষেধাজ্ঞা প্রদানের ক্ষমতা আছে কি?

না, নেই। তবে, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা-১২২ এর উপধারা-৩ অনুসারে ট্রাইবুনাল শুনানী গ্রহণের পর যুক্তিসঙ্গত মনে করলে অন্তবর্তীকালীন কর আদায়ের স্থগিতাদেশ প্রদান করতে পারবে।

এডিআর এর সুবিধা কি?

মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২৫ অনুযায়ী সমঝোতার ভিত্তিতে এডিআর বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি উপায়ে ব্যক্তি তাঁর মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। 
সমঝোতার ভিত্তিতে এডিআর বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি উপায়ে মামলা নিষ্পত্তি হলে সমঝোতার বিরুদ্ধে কোন আপত্তি উত্থাপন করা যাবে না এবং কোন বিষয় নিষ্পত্তি না হলে আইনের বিধান অনুযায়ী পুনরায় কার্যবিবরনী গ্রহণ করা যাবে।
বিকল্প বিরোধ  নিষ্পত্তি উপায়ে কোন বিষয়ে নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হলে এ পন্থা অবলম্বনের জন্য ব্যায়িত সময়কাল আপিল দায়ের করার সময়সীমায় অন্তর্ভূক্ত হবে না। 

আপিলের ক্ষেত্রে কোন অর্থ জমার বিধান আছে কি কোন ক্ষেত্রে কত?

আপিলের ক্ষেত্রে অর্থ জমার বিধান হলো দাবীকৃত করের দশ শতাংশ বা দাবীকৃত কর না থাকলে আরোপিত জরিমানার দশ শতাংশ পরিমাণ অর্থ। 

আপিলের ক্ষেত্রে কি সময়ের কোন সীমাবদ্ধতা আছে?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২১ ও ১২২ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা ২০১৬ অনুসারে সিদ্ধান্ত বা আদেশ জারির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল দায়ের করা যাবে।

রীট কি আপিল?

রীট এবং আপিল দুটি ভিন্ন শব্দ এবং এর সংজ্ঞাও ভিন্ন। মূল্য সংযোজন কর আইন ২০১২ এর ধারা ১২১ ও ১২২ এবং একই আইনের বিধি ৯৮ এ আপিল সম্পর্কে বলা হয়েছে।

ধারা ১২১ ও ১২২ অনুযায়ী কোন রায়ের বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তি বা মূসক কর্মকর্তা সংক্ষুব্ধ হলে উক্ত আদেশ জারির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে ক্ষেত্র মতে আপিল কমিশনারে বা আপিলাত ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন। অতিরিক্ত কমিশনার বা তৎনি¤œ পদধারী মূসক কর্মকর্তা কর্তৃক গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত বা আদেশ দ্বারা কোন করদাতা সংক্ষুদ্ধ হলে আপিল কমিশনারেটে এবং কমিশনার বা কমিশনার আপিল কর্তৃক গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত বা আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি বা মূসক কর্মকর্তা সংক্ষুব্ধ আপিলাত ট্রাইব্যুানালে আপিল করতে পারবেন। 
অন্য দিকে আইনের ধারা ১২৪ অনুযায়ী বোর্ড বা আপিলাত ট্রাইবুনালের আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা মূসক কর্মকর্তা বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট করতে পারেন 

কোন কোন মামলা রিভিশন করা যায়?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২৪ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি-৯৮ মোতাবেক বোর্ড বা আপিলাত ট্রাইবুনালের আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যাক্তি বা কমিশনার বা মহাপরিচালকের পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন কোন মূসক কর্মকর্তা উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশনের আবেদন দাখিল করতে পারবেন।

এডিআর কি?

মূসক আইনের (২০১২) ধারা ১২৫ অনুযায়ী এডিআর হল Alternative Dispute Resolution অর্থ্যাৎ বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি। এই পদ্ধতিতে চলমান কোন মামলা তৃতীয় পক্ষের সহায়তায় দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়।

এডিআর এ যাওয়ার জন্য কোন অর্থ পরিশোধ করতে হয় কি?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২৫ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৯৮ অনুযায়ী এডিআর বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে বিরোধকৃত প্রদেয় মূসকসহ অন্যান্য কর (যদি প্রযোজ্য হয়) এর পঁচিশ (২৫) শতাংশ অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে প্রদান পূর্বক ৫০০/- টাকা সমমূল্যের স্ট্যাম্পে মূসক ১৭.১ ফরমে আবেদন করতে হবে।

সহায়তাকারী কে? তাদেঁর দায়িত্ব কি? তাঁদের তালিকা কোথায়ে পাব?

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ১০০(১) অনুযায়ী সহায়তাকারী হলো:

  • মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ যুগ্ম কমিশনার নিম্নে নহে এইরূপ অবসরপ্রাপ্ত কোন মূল্য সংযোজন করা কর্মকর্তা
  • অতিরিক্ত জেলা জজের নিম্নে নহেন এইরূপ অবসর প্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা
  • মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে ০৭ (সাত) বৎসরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আইনজীবি বা চার্টাড একাউন্ট্যান্ট
  • উপ-সচিবের নিম্নে নহেন এইরূপ আইন ও লেজিসলেটিভ বিষয়ে দক্ষ ও অবসরপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা
  • ব্যবসার ক্ষেত্রে ন্যূনতম পনের বৎসরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও মূল্য সংযোজন কর বিষয়ে দক্ষ কোন ব্যবসায়ী

বিধি ১০১ অনুযায়ী সহায়তাকারী দ্বায়িত্ব হলো:

  • সহায়তাকারী আবেদনকারী ও বিভাগীয় প্রতিনিধি সাথে আলোচনা ক্রমে বিবেচ্য বিরোধের-
  • নিষ্পত্তির বা সিদ্ধান্তের  বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা
  • বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি, কৌশল বা কাঠামো নির্ধারণ করা
  • বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তির লক্ষ্যে আলোচনা সভার স্থান, তারিখ ও সময় নির্ধারণ করা
  • উভয় পক্ষকে সময় উল্লেখসহ প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিল করার জন্য লিখিতভাবে অবহিত করা
  • সহায়তাকারী আবেদনকারী ও বিভাগীয় প্রতিনিধিকে বিরোধীয় বিষয়ে আইনানুগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করা।

বিধি ১০০ অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড  সহায়তাকারী তালিকা প্রস্তুত করবে। 

কোন কোন ক্ষেত্রে এডিআর এ যাওয়া যায়?

করদাতা সমঝোতার ভিত্তিতে কোন বিরোধ নিষ্পত্তি করতে আগ্রহী হলে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ১২৫ অনুযায়ী আপিল কমিশনারেট ও আপিলাত ট্রাইব্যুনালে বিদ্যমান মামলা ক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারবেন। তাছাড়া, রিট পিটিশন বা আপিল হিসাবে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বা আপিল বিভাগে বিচারধীন বিরোধ নিষ্পত্তিও প্রযোজ্য বিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা যাবে।

এডিআর এ আবেদন ক্ষেত্রে আবেদনকারীর কি কি অধিকার রয়েছে?

বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আবেদনকারীর নিম্নবর্ণিত অধিকার রয়েছে-

  • বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ক্ষেত্রে মনোনিত বিভাগীয় প্রতিনিধির সাথে নিযুক্ত সহায়তাকারীর তত্ত্বাবধানে স্বাধীনভাবে সমঝোতার আলোচেনা করা
  • বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়ায় আবেদনকারী স্বয়ং অংশগ্রহন করতে পারবেন। চাইলে কোন পেশাদার উপদেষ্টাকেও  মনোনিত করতে পারবেন

কখন হাইকোর্টে আপিল করা যায়?

হাইকোর্টে আপিল করা যাবে নিম্ন বর্ণিত সময়ে-

  • কোন করদাতা যদি বোর্ড বা আপিলাত ট্রাইবুনালে আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হলে
  • কমিশনার বা মহাপরিচালক নিম্নে নন এমন কোন মূসক কর্মকর্তা যদি বোর্ড বা আপিলাত ট্রাইবুনালের আদেশ  দ্বারা সংক্ষুব্ধ হলে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপিল বা রিভিশনের আবেদন দাখিল করতে পারবেন।